গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মি এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেবে। এই ব্যক্তিই উপত্যকাটিতে শেষ জীবিত মার্কিন বন্দি বলে মনে করা হচ্ছে।

সোমবার (১২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মঙ্গলবারের মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। হামাস জানিয়েছে, মানবিক সাহায্য প্রবেশের জন্য একটি চুক্তি সহজতর করার উদ্দেশ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গাজা ৭০ দিন ধরে ইসরায়েলি অবরোধের মুখে রয়েছে।

আরো পড়ুন:

পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে তুরস্ক যাচ্ছেন জেলেনস্কি

‘গুরুতর গোয়েন্দা তথ্য’ পেয়ে ভারত-পাকিস্তানকে থামিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হামাস জানিয়েছে যে মানবিক সাহায্য প্রবেশের জন্য একটি চুক্তি সহজতর করার জন্যও এটি করা হয়েছে। গাজা ৭০ দিন ধরে ইসরায়েলি অবরোধের অধীনে রয়েছে।

এর আগে হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী কাতারে মার্কিন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, তারা কোনো যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয় বরং আলেকজান্ডারের মুক্তির জন্য একটি ‘নিরাপদ করিডোর’ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, গাজায় হামলা তীব্র করার প্রস্তুতি এখনো অব্যাহত রয়েছে এবং হামাসের ওপর সামরিক চাপের কারণে আলেকজান্ডারের মুক্তি সম্ভব হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার আলোচনার সঙ্গে পরিচিত একজন জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, ট্রাম্পের আগমনের আগে হামাসের এই ঘোষণা শুভেচ্ছার নিদর্শন।

তিনি বলেন, এডানের মুক্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার জন্য স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে হামাস এবং মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে আরেকটি বৈঠকের কথা রয়েছে। যার জন্য ইসরায়েলি সামরিক কার্যকলাপ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা এবং হস্তান্তরের সময় বিমান অভিযান স্থগিত রাখা প্রয়োজন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ একটি পোস্টে আলেকজান্ডারের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং এটিকে ‘স্মরণীয় সংবাদ’ এবং ‘সৎ বিশ্বাসে গৃহীত পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন।

বিবিসি বলছে, তেল আবিবে জন্মগ্রহণকারী কিন্তু নিউ জার্সিতে বেড়ে ওঠা ২১ বছর বয়সী আলেকজান্ডার গাজার সীমান্তে একটি অভিজাত পদাতিক ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। ৭ অক্টোবরের হামলায় হামাস যোদ্ধারা তাকে ধরে নিয়ে যায়।

২০২৩ সালে হামাসের হামলায় ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে ৫৯ জন এখনো গাজায় রয়ে গেছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজার জিম্মিদের মধ্যে পাঁচজন মার্কিন নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং আলেকজান্ডারকেই একমাত্র জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আলেকজান্ডারের পরিবার জানিয়েছে, তারা ‘কল্পনাতীত সবচেয়ে বড় উপহার পেয়েছে- আমাদের সুন্দর ছেলে এডান ৫৮৩ দিন গাজায় বন্দী থাকার পর বাড়ি ফিরে আসার খবর’।

আলেকজান্ডারের পরিবার বলেছে, “এটি সম্ভব করার জন্য আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, স্টিভ উইটকফ এবং মার্কিন প্রশাসনের প্রতি তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে আমরা ইসরায়েলি সরকার এবং আলোচনাকারী দলগুলোকে অনুরোধ করছি: দয়া করে থামবেন না। আমরা আশা করি আমাদের ছেলের মুক্তির মাধ্যমে বাকি ৫৮ জন জিম্মির জন্য আলোচনা শুরু হবে, তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য এই দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটবে।”

মিশর ও কাতারও একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, আলেকজান্ডারকে মুক্তি দিতে হামাসের সম্মতি ‘আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার দিকে একটি উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ’।

হামাস তাদের বিবৃতিতে বলেছে, এই মুক্তি যুদ্ধবিরতি অর্জন এবং গাজায় খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার প্রচেষ্টার অংশ- যা ৭০ দিন ধরে ইসরায়েল দ্বারা সম্পূর্ণ অবরোধের অধীনে রয়েছে। গ্রুপটি বলেছে, তারা যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে চায়।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এর আগে বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমেরিকানদের প্রতি ইঙ্গিত হিসেবে হামাস আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এবং এই পদক্ষেপের ফলে আরো জিম্মিদের বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলের নীতি ছিল, হামলা তীব্র করে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসকে বাধ্য করবে। 

হামাস অতীতে বলেছে, যে তারা কেবল এমন একটি চুক্তিতে সম্মত হবে যেখানে যুদ্ধের সমাপ্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বারবার প্রত্যাখ্যান করেছেন।

নেতানিয়াহুর অবস্থান নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে ক্রমবর্ধমান হতাশার ইঙ্গিত দেওয়া একাধিক প্রতিবেদনের মধ্যে হামাস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা চলছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীও তার দেশের মানুষের চাপের মধ্যে রয়েছেন, অনেকে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার অভিযোগ করছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছাবেন। ট্রাম্পের এই সফরে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক আক্রমণ আরো বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের বর্ধিত আক্রমণের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের সব অঞ্চল দখল করা, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক দক্ষিণে বাস্তুচ্যুত করা এবং ত্রাণ বিতরণ ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। 

ইসরায়েল ইতিমধ্যেই ৭০ দিন ধরে গাজায় সমস্ত খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য মানবিক সরবরাহের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। মানবিক সংস্থাগুলো ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে একটি অনাহারের নীতি ও যুদ্ধাপরাধ হতে পারে বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে। 

জাতিসংঘের মতে, বছরের শুরু থেকে গাজায় শিশুদের মধ্যে তীব্র অপুষ্টির প্রায় ১০ গাজার ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে। গাজায় খাবারের দাম ১ হাজার ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গাজায় ৫২ হাজার ৮২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইসর য় ল র জন য একট ইসর য় ল র কর মকর ত র র জন য পদক ষ প র পর ব ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

সংবেদনশীল না হলে কেউ ভালো শিল্পী হতে পারে না: জুয়েল আইচ

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রায়ই তরুণদের দেখা যায় সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে ভুগতে। ফলে অনেক সময় যথেষ্ট মেধা, আগ্রহ ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ক্যারিয়ারে ভালো করতে পারেন না। তরুণদের সঠিক দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা জোগাতে প্রথম আলো ডটকম ও প্রাইম ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত পডকাস্ট শো ‘লিগ্যাসি উইথ এমআরএইচ’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ রিদওয়ানুল হকের সঞ্চালনায় একাদশতম পর্বে অতিথি হিসেবে অংশ নেন বিশ্বখ্যাত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। আলোচনার বিষয় ছিল ‘শিল্প, মুক্তিযুদ্ধ এবং মানবতার সংমিশ্রণে গঠিত এক অনন্য লিগ্যাসি’।

‘মানুষ তার আশার সমান সুন্দর, বিশ্বাসের সমান বড় এবং কাজের সমান সফল। কাজই মুক্তি। তবে আশাও বড় রাখতে হবে। আশা না থাকলে কাজ হবে না।’ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে তরুণদের উদ্দেশে কথাগুলো বলেন জুয়েল আইচ। পডকাস্ট শোর এ পর্ব প্রচারিত হয় গতকাল শনিবার প্রথম আলোর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে।

পডকাস্টের শুরুতেই সঞ্চালক জানতে চান, মুক্তিযুদ্ধের শরণার্থীশিবিরে প্রথম যেদিন জাদু দেখালেন, সেই অনুভূতি কেমন ছিল?

উত্তরে জুয়েল আইচ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সব বাদ দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিই। আমরাই খুব সম্ভবত প্রথম পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিহত করি। আমি শৈশব থেকেই জাদু দেখাই। তবে মুক্তিযুদ্ধের শরণার্থীশিবিরে জাদু দেখানোর সেই অনুভূতিটি ছিল একেবারেই ম্যাজিক্যাল।’

প্রসঙ্গক্রমে সঞ্চালক জানতে চান, শিল্পকে সাহস করে অস্ত্রতে পরিণত করার এই আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে এল?

জুয়েল আইচ বলেন, ‘এটা আত্মবিশ্বাস নয়। আমি অসম্মান সহ্য করতে পারি না। আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই দেখছিলাম, তারা (পাকিস্তান) আমাদের বিভিন্নভাবে অসম্মান করে আসছে। কখনো গানে, কখনো ছবি এঁকে কিংবা কবিতার ভাষায় আমরা সব সময় এর প্রতিবাদ করে এসেছি। এভাবে করেই শেষ পর্যন্ত আমরা মুক্তিযুদ্ধে নেমে গেলাম।’

জুয়েল আইচকে কেউ বলেন ম্যাজিশিয়ান, আবার কেউ বলেন মিউজিশিয়ান। তবে জুয়েল আইচ একজন দার্শনিকও বটে। জাদুর মোহনীয়তা আর বাস্তবতার যে রূঢ় চিত্র—এই দুটো আপনার জীবনে কেমন প্রভাব ফেলেছে?

সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের উত্তরে জুয়েল আইচ বলেন, ‘বাস্তবতাকে আমরা বলে থাকি “কঠিন” আর স্বপ্ন তো আমরা আকাশসমান ভাবতে পারি। একদম রংধনুর মতো সাত রং। এই দুটোকে যদি কেউ আয়ত্ত না করতে পারে, তবে তার জীবন কিন্তু সেখানেই শেষ। সে বেঁচে থাকবে কিন্তু মরার মতো।’ তিনি বলেন, ‘সে জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দরকার। যেমন আপনি কোনোভাবেই আমাকে দুঃখী বানাতে পারবেন না। আমি দুঃখ পাই না, তবে বারবার আমাকে খ্যাপাতে থাকলে আমি রুখে দাঁড়াই।’

জুয়েল আইচ কখনোই পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ছাড়া স্টেজে ওঠেন না। সঞ্চালক জানতে চান, এর পেছনে কারণ কী?

জুয়েল আইচ বলেন, প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কাজ সুন্দরমতো হয় না। প্রস্তুতি ছাড়া যদি কেউ কিছু করে, তবে সেগুলো অনেক নিম্নমানের হবে। তিনি বলেন, ‘আমি একটি বাঁশি দিয়ে সব রাগ বাজাতে পারি। এটা কি এক দিনেই সম্ভব!’

আপনার পারফরম্যান্সের সময় আপনি মাঝেমধ্যে নিঃশব্দ হয়ে যান। যেখানে কোনো উদ্যম নেই। এই ‘সাইলেন্স’-এর কারণটা কী?

সঞ্চালক জানতে চাইলে জুয়েল আইচ বলেন, শব্দের চেয়ে নিঃশব্দের ভাষা বেশি গভীর। একটি পেইন্টিং, যেখানে কোনো শব্দ থাকে না কিন্তু কত কিছু বলে দেয়! দেখবেন কেউ অনেক খেপে গেলে নীরব হয়ে যায়। আসলে শব্দে যা বলা যায়, নিঃশব্দে তার চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব।

বর্তমানের এই ডিজিটাল যুগে সবকিছুই হাতের নাগালে, এমনকি জাদুও। জাদু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে আসার পর এর আবেদন কিছুটা কমে যাচ্ছে কি না? জানতে চাইলে জুয়েল আইচ বলেন, খালি চোখে দেখলে তা আসলেই কমে যাচ্ছে। কারণ, এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে যে জাদুগুলো দেখানো হচ্ছে, তা দেখে মানুষ বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘তারা ভাবছে, আমরা আগে যেসব জাদু দেখেছি, এগুলো তো তার থেকেও বিস্ময়কর। কিন্তু তারা হয়তো বুঝতে পারছে না, এখন সবকিছুর সঙ্গে মিশে গেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।’

সঞ্চালক এরপর প্রশ্ন করেন, আপনি একসময় ‘পালস স্টপিং’ ধরনের ইলিউশন বন্ধ করেছিলেন। এর পেছনে উদ্দেশ্য কী ছিল?

জুয়েল আইচ বলেন, ‘এই পালস স্টপিংয়ের মাধ্যমে আমি পুরো দেশজুড়ে এক বিস্ময় সৃষ্টি করেছিলাম। দলে দলে মানুষ এটি দেখতে আসত। কিন্তু এসব দেখে মানুষ অনেক বেশি আতঙ্কিত হতো, অনেক মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়ত। একবার একজন অনেক বড় পালোয়ান এটি দেখতে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। সেদিন শো শেষ করেই আমি আমার টিমকে বলি, এই ম্যাজিক আর হবে না। কারণ, এই ম্যাজিক এত এত মানুষকে ডেকে আনছে বটে কিন্তু এটি মাত্রা অতিক্রম করে ফেলছে। যা মোটেও ঠিক নয়।’

প্রসঙ্গক্রমে সঞ্চালক জানতে চান, তাহলে কি একজন শিল্পীকে সংবেদনশীলও হতে হয়?

‘অবশ্যই।’ জুয়েল আইচ বলেন, একজন শিল্পীকে অবশ্যই সংবেদনশীল হতে হবে। সংবেদনশীল না হলে তিনি ভালো শিল্পী হতে পারবেন না।

আপনি যেমন বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের সামনে পারফর্ম করেছেন, তেমনি এমন শিশুদের জন্যও জাদু দেখিয়েছেন, যারা কখনো টিকিট কিনে শো দেখতে পারে না। আপনার চোখে আসল মর্যাদা কোথায়—বৃহৎ মঞ্চে, নাকি একটিমাত্র বিস্মিত মুখে?

সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে জুয়েল আইচ বলেন, ‘আসলে মঞ্চ ব্যাপার নয়। আমি আমার জাদুতে বিস্মিত এবং মুগ্ধ হয়ে থাকা দেখতে ভালোবাসি। শুধু বিস্ময় নয়, বিস্ময়ের সঙ্গে মুগ্ধতা আমার ভালো লাগে।’

আরও পড়ুননীতি আর মূল্যবোধ শক্ত থাকলে কেউ থামাতে পারবে না: রুবাবা দৌলা১২ অক্টোবর ২০২৫

পডকাস্টের শেষ পর্যায়ে সঞ্চালক জানতে চান, আমরা আরেকজন জুয়েল আইচ কবে পাব?

মুচকি হেসে জুয়েল আইচ বলেন, ‘যখন সেই উদ্যম নিয়ে কেউ কাজ করবে, ঠিক তখন। সে হয়তো আমাকেও ছাড়িয়ে যাবে। শুধু ম্যাজিকে নয়, সব দিক দিয়েই।’

আরও পড়ুনবাবা প্রথমে আমাকে অফিস সহকারীর কাজ দিয়েছিলেন: হাতিলের চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান০৫ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প
  • এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী কারা, কীসের ব্যবসা তাঁদের
  • করদাতা মারা গেলেও যে কারণে কর দিতে হয়, কীভাবে দেওয়া হয়
  • ৩ কোটি টাকা, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজসহ আরও যা যা পান একজন মিস ইউনিভার্স
  • গায়িকা থেকে বিধায়ক, মৈথিলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী চমকে ওঠার মতো
  • সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস
  • বিএনপি নেতা খুন: অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ফেসবুকে লিখলেন ‘আউট’
  • সাজা হলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘কনভিকশন ওয়ারেন্টের’ আবেদন করা হবে
  • সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
  • সংবেদনশীল না হলে কেউ ভালো শিল্পী হতে পারে না: জুয়েল আইচ