ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো না খেললেই কি আল নাসর আরও ভালো খেলে? উত্তরটা সম্ভবত ‘না’ হবে। তবে সোমবার (১২ মে) রাতে সৌদি প্রো লিগে রোনালদোবিহীন আল নাসর ৯-০ গোলের বিশাল জয় পেয়েছে আল আকদৌদের বিপক্ষে। এই ম্যাচে পর্তুগিজ তারকার না খেলার কারণ হিসেবে কোচ সাম পিউলি বলেছেন মাংস পেশীর চোটের কথা। তবে কিছু গণমাধ্যম বলছে, আল নাসর ছাড়তে যাচ্ছেন রোনালদো।

আল আকদৌদক ৯–০ গোলে বিধ্বস্ত করার ম্যাচে সাদিও মানে একাই করেছেন ৪ গোল। সাবেক এই লিভারপুল তারকা প্রথমার্ধে এক গোল করেন, বিরতির পর করেন আরও তিন গোল। কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড জন ডুরান করেন জোয়াড়া গোল। আয়মান ইয়াহিয়া, মার্সেলো ব্রজোভিজ ও মোহাম্মেদ মারান পান একটি করে গোল।

লিগে আন নাসরের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা আগেই ফুরিয়েছে। এখন তাদের লক্ষ্য শীর্ষ তিনে থেকে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা নিশ্চিত করা। পয়েন্ট তালিকায় বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আল হিলালের সংগ্রহ ৩১ ম্যাচে ৭৭ পয়েন্ট। তৃতীয়স্থানে থাকা আল নাসরের পয়েন্ট ৬৩। এক ম্যাচ কমে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে আছে আল কাদসিয়া, আর পঞ্চমস্থানে থাকা আল আহলির পয়েন্ট ৬১। অর্থাৎ, বাকি তিন ম্যাচে একটু হোঁচট খেলেই শীর্ষ তিন থেকে ছিটকে যেতে পারে আল নাসর।

আরো পড়ুন:

রোনালদোর ছেলে ডাক পেলেন পর্তুগাল দলে

এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ওঠা হলো না রোনালদোর

আল নাসরকে বড় ধরনের পরিবর্তন করতে হবে, যদি তারা রোনালদোকে আগামী মৌসুমে দলে ধরে রাখতে চায়। পর্তুগিজ ফুটবলার ক্লাবের শিরোপাক্ষরায় অসন্তুষ্ট। তিনি বেশ কিছু পরিবর্তনের অনুরোধ করে রেখেছেন কর্তৃপক্ষের কাছে। যার মধ্যে রয়েছে কোচ পিওলি, স্পোর্টিং ডিরেক্টর ফার্নান্দো হিয়েরো এবং প্রায় অর্ধেক স্কোয়াডকে বাদ দেওয়ার অনুরোধ।

রোনালদো ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে আল নাসরে যোগ দেন। তবে এরপর থেকে তিনি মাত্র একটি ট্রফি জিতেছেন, ২০২৩ সালের আরব ক্লাব চ্যাম্পিয়নস কাপ। চলতি মৌসুমে আল নাসর এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ এলিটের সেমিফাইনালে হেরে যায় এবং সৌদি প্রো লিগে তারা বর্তমানে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। অনেক পিছিয়ে রয়েছে লিগের শীর্ষে থাকা আল ইত্তিহাদের থেকে।

গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী, রোনালদো আল নাসরের অগ্রগতিতে অসন্তুষ্ট এবং ক্লাবে থাকতে হলে তিনি কোচিং স্টাফ এবং স্কোয়াডে বড় ধরনের পরিবর্তন চান। তার বর্তমান চুক্তি চলতি মৌসুমের শেষে শেষ হবে। যদিও সৌদি সংবাদমাধ্যম অকাজ স্পোর্টস বলছে, রোনালদো ২০২৬ পর্যন্ত থাকতে পারেন, তবে সেটি নির্ভর করবে তার দাবি মেনে নেওয়া হয় কি না, তার উপর। পর্তুগিজ মহাতারকা পিওলির কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিতে খুশি নন।

রোনালদোর বর্তমান আল নাসর স্কোয়াডের অনেককেই সামনের মৌসুমে চান না। তাদের তালিকা বিশাল। গোলকিপার বেন্তো, ডিফেন্ডার আয়মেরিক লাপোর্তে, মিডফিল্ডার আঞ্জেলো গ্যাব্রিয়েল, ফরোয়ার্ড ওয়েসলি। অন্যদিকে যাদের তিনি অবশ্যইও ধরে রাখতে চান তাদেরআও একটা তালিকা পাওয়া গিয়েছে। তারা হলেন সেন্টারব্যাক মোহামেদ সিমাকান, মিডফিল্ডার ওতাভিও ও মার্সেলো ব্রোজোভিচ। ফরোয়ার্ড মানে ও ডুরান।

ওকাজ স্পোর্টসের অথ্য অনুযায়ী, আল নাসরের বার্ষিক আনুমানিক আয় প্রায় ২১.

৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ক্লাবটিকে এই ধরনের বড় পরিবর্তন করার সক্ষমতা দেয়। বর্তমানে ক্লাবে যে অবস্থা চলছে, তাতে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে রোনালদো সন্তুষ্ট নন। তবে তার চাহিদা মেনে আল নাসর কী পদক্ষেপ নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ত গ

এছাড়াও পড়ুন:

আফঈদাদের সঙ্গে এশিয়ান কাপে কারা, বিশ্বকাপের সম্ভাবনা কতটুকু

ভিয়েনতিয়েনের নিউ লাওস স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় মুখটা মলিন থাকলেও দিন শেষে বাংলাদেশের মেয়েদের মুখে হাসিই ফিরেছে। মলিন হওয়ার কারণ—এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। কিছুক্ষণ পরই হাসি ফেরার কারণ—বাছাইয়ে অন্যদের সব ম্যাচ শেষ হওয়ার পর জানা গেল বাংলাদেশ নিরাপদ জায়গাতেই আছে।

অর্থাৎ, অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে জায়গা করতে ন্যূনতম সেরা তিন রানার্সআপের মধ্যে থাকার যে প্রয়োজনীয়তা ছিল, সেটি বাংলাদেশ পূরণ করেছে। শীর্ষ তিন রানার্সআপের মধ্যে দ্বিতীয় হয়ে ২০২৬ অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিয়েছেন আফঈদা খন্দকার-মোসাম্মত সাগরিকারা।

অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ‘এইচ’ গ্রুপে দক্ষিণ কোরিয়া, লাওস ও পূর্ব তিমুরের বিপক্ষে। এই গ্রুপের সব ম্যাচ হয়েছে লাওসে। গত ২ থেকে ১০ আগস্ট সময়ে আরও ৭টি দেশে বাছাইপর্বের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে অংশ নিয়েছে ২৯টি দেশ।

মোট ৩৩টি দল আট গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলেছে ১১টি জায়গার জন্য। আগামী বছরের এপ্রিলে দ্বাদশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ হবে থাইল্যান্ডে। স্বাগতিক হিসেবে থাইল্যান্ডের অংশগ্রহণ নিশ্চিত ছিল আগেই। ১২ দলের টুর্নামেন্টে বাকি দলগুলোই চূড়ান্ত হয়েছে রোববার শেষ হওয়া বাছাইপর্বে।

আট গ্রুপের আট সেরা দল হিসেবে থাইল্যান্ডের টিকিট কেটেছে দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান, জাপান, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম ও উত্তর কোরিয়া। প্রতিটি গ্রুপের রানার্সআপগুলোর মধ্যে পয়েন্ট ও গোল ব্যবধানে সেরা তিনে অবস্থান নিশ্চিত করেছে জর্ডান, বাংলাদেশ ও চাইনিজ তাইপে।

যে ১১টি দল বাছাইপর্ব উত্তীর্ণ হয়ে ২০২৬ সালের মূল পর্বে জায়গা করেছে, তাদের মধ্যে বিশেষভাবে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। বাকি ১০টি দলই এএফসির দ্বিবার্ষিক যুব টুর্নামেন্টে (অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২০) আগেও অংশ নিয়েছে। একবার নয়, একাধিকবার। এশিয়া মহাদেশের নারী ফুটবলের এই প্রতিযোগিতার আগের ১১ আসরের মধ্যে সবচেয়ে কম অংশ নিয়েছে ভারত, তাও তিনবার। কিন্তু বাংলাদেশ কখনো বাছাইপর্বই উতরাতে পারেনি। আফঈদা-সাগরিকাদের ২০২৬ আসরে জায়গা করে নেওয়া তাই বিশেষই।

বিশ্বকাপও কাছেই!

থাইল্যান্ডে ১২ দল নিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ শুরু হবে ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল, ফাইনাল ১৮ এপ্রিল। এই টুর্নামেন্টে ১২টি দল মোট ৩টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। কোন দল কোন গ্রুপে আর কোন কোন দলের বিপক্ষে খেলবে, সেটি চূড়ান্ত হয় যে ড্রতে, এএফসি তা এখনো ঘোষণা করেনি। তবে পট চূড়ান্ত হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ পট ৪-এ আছে জর্ডান ও ভারতের সঙ্গে। অর্থাৎ, এশিয়ান কাপের গ্রুপ পর্বে এ দুই দেশ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে না। তিন দলই অন্য তিনটি পট থেকে একটি করে দলকে গ্রুপসঙ্গী হিসেবে পাবে। তিন গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ এবং সেরা দুই তৃতীয় স্থানধারী খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে, সেখান থেকে সেমিফাইনাল হয়ে ফাইনাল।

অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের যে ফরম্যাট, তাতে দলগুলোর সামনে বিশ্বকাপ খেলার হাতছানিও আছে। ২০২৬ ফিফা অনূর্ধ্ব২০ নারী বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে পোল্যান্ডে। এই আসরেই প্রথমবারের মতো ২৪টি দল অংশ নেবে। আগের চেয়ে ৮টি দল বেড়ে যাওয়ায় এশিয়া থেকে খেলার সুযোগ পাবে ৪টি দল। আর এই চার দলই চূড়ান্ত হবে এশিয়ান কাপ থেকে। ১২ দলের টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে ওঠা চার দলই পাবে বিশ্বকাপের সেই টিকিট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আফঈদাদের সঙ্গে এশিয়ান কাপে কারা, বিশ্বকাপের সম্ভাবনা কতটুকু
  • একই পে স্কেলের দাবিতে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজারের শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ