৩০ ঘণ্টা অবরোধে কাকরাইল, তীব্র যানজটে ভোগান্তি
Published: 15th, May 2025 GMT
কাকরাইল মসজিদ মোড়ে টানা ৩০ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে চার দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর ১টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই সড়কের অবস্থান করে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। এতে আশপাশের রাস্তায় যানজট তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত যমুনা অভিমুখে কাকরাইল মসজিদের সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বেন না বলে জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে মৎস্য ভবন থেকে কাকরাইল মোড় এবং মিন্টু রোডে সব যান চলাচল বন্ধ আছে। এই সড়কে চলাচল করা গাড়ি বিকল্প রাস্তায় চলাচল করছে। ফলে মৎস্য ভবন, শাহবাগ, পল্টন, গুলিস্তান, কাকরাইলের সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে।
অন্য দিকে একটু পরপর বৃষ্টির কারণে আশপাশের এই রাস্তাগুলোতে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে এতে ভোগান্তিতে পড়ছে জনসাধারণ। তবে কাকরাইল মোড় দিয়ে জরুরি কোনো গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স আসলে সেটি দ্রুত চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এর জন্য নির্ধারিত রয়েছে কয়েকটি ভলেন্টিয়ার টিমও।
যানজটে ভোগান্তির শিকার জেসমিন আরা নামে এক নারী বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছি কাকরাইল মোড়ে। গাড়ির চাকা ঘুরছে না হাসপাতালে যাবো আমি। আমার ভাই সেখানে ভর্তি।
যানজটে দুই ঘণ্টা ধরে আটকে থাকা জান্নাতু্ল নাইম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বন্ধু অ্যাকসিডেন্ট করেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। আমাকে সেখানে দ্রুত পৌঁছাতে হবে। একই স্থানে ২ ঘণ্টা ধরে আটকে থাকার পর এখন হেঁটে রওনা দিয়েছি।
এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন, ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
বুধবার সকাল ১১ টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। লং মার্চটি গুলিস্তান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসলে সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, গরম পানি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে লং মার্চে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ওপর। এসময় শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবর ধ য নজট য নজট অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতা বেন্টু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আত্মগোপনে থাকা আজিজুল আলম বেন্টু (৫৩), তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিনের (২৯) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই আজিজুল আলম বেন্টু আত্মগোপনে রয়েছেন।
রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন।
মামলার বাদী আমির হোসাইন জানান, আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিন (২৯)।
দুদক জানায়, তার পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তার স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমির সন্ধান পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়। ফলে আয়বর্হিভূত ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়।
অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিনী হলেও তার নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ করবর্ষে নাসিমা আলমের দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তার নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে।
২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। তারও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তার স্ত্রী এবং ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।
দুদক বলছে, নাসিমা আলম তার স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তার বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তারাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় বেন্টুর স্ত্রী-ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘মামলটি দায়ের করার পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।’