প্রশ্ন:

ওয়ালটন কেন বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবসায় এল?

সোহেল রানা: আপনারা সবাই জানেন, ওয়ালটন বাংলাদেশের ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস বাজারে একটি বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড। নিত্যনতুন পণ্য উদ্ভাবন এবং সেই পণ্যের মাধ্যমে ভোক্তার চাহিদা পূরণের মাধ্যমে সন্তুষ্টি অর্জন করাই আমাদের ব্যবসার মূল লক্ষ্য। সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের বাতি বা লাইটিং ব্যবসায় পদার্পণ করা। নগর এবং পল্লি অঞ্চলে ব্যাপক বিদ্যুৎ–সংযোগ সম্পন্ন হওয়ার ফলে বৈদ্যুতিক বাতির চাহিদা অনেক বেশি। একটা সময় ফিলামেন্ট বাল্ব থেকে কালের পরিক্রমায় সিএফএল হয়ে বর্তমানে এলইডি প্রযুক্তির বাতির ব্যবহার হলেও বাংলাদেশে প্রচুর চাহিদা পূরণে এই বাজার এখনো বহুলাংশে আমদানিনির্ভর অথবা নিম্নমানের পণ্য দিয়ে বাজার সয়লাব। বাংলাদেশের ব্যাপক চাহিদার বিপরীতে গুণগতমানের বিভিন্ন বৈদ্যুতিক বাতি ভোক্তার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওয়ালটনের এই ব্যবসায় আসা। বর্তমানে আমাদের শক্তিশালী বিপণন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি প্রান্তে আমরা ওয়ালটন লাইটের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছি।

প্রশ্ন:

কত ধরনের কী কী বাতি তৈরি করেন?

সোহেল রানা: গাজীপুরে অবস্থিত ওয়ালটন হাই-টেক পার্কে নিজস্ব উৎপাদনসক্ষমতার মাধ্যমে ওয়ালটন ১১টি শ্রেণিতে ৬০০টির বেশি মডেলে বাতি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। এর মধ্যে এলইডি বাল্ব, এসি/ডিসি বাল্ব, প্যানেল লাইট, টিউব লাইট সোলার বাল্ব ও টিউব উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন পর্যায়ের ভোক্তার কথা মাথায় রেখে বর্তমানে ওয়ালটনের পাশাপাশি আমরা ‘সেইফ’ ও ‘রোবাস্ট’ নামের দুটি ব্র্যান্ডে বাতি উৎপাদন ও বাজারজাত করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন:

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন কী কী?

সোহেল রানা:  আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে এই পণ্যের বাজারে প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবন দল প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। স্টেট অব দ্য আর্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত হচ্ছে আমাদের প্রতিটি বাতি। পণ্যের মান নিশ্চিত করার জন্য ডিওবি লিনিয়ার প্রযুক্তি, সার্জ প্রটেকটেড সুবিধা, অটোমেটিক এজিং লাইন ব্যবহার করা হয়। ফলে বাতির আলো দেওয়ার পরিমাণ ও জীবনকাল বৃদ্ধি পায় এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে তুলনামূলক বেশি। আলোর কারণে চোখের ব্যথা বা মাথাব্যথা থেকে মুক্ত থাকতে আমাদের প্রতিটি বাতি সম্পূর্ণ ফ্লিকার–ফ্রি। তা ছাড়া এসি/ডিসি বাল্ব যেটা লোডশেডিংয়ে ব্যাকআপ আলো দেয়, সেটার গুণগতমান ঠিক রাখার জন্য সাধারণ ব্যাটারির পরিবর্তে আমরা লিথিয়াম আয়ন ফসফেট ব্যাটারি ব্যবহার করছি যা এসি/ডিসি বাল্বের পারফরম্যান্স ৩ গুণ বেশি বৃদ্ধি করেছে।

প্রশ্ন:

বাংলাদেশে বাতির বাজার কত বড়? 

সোহেল রানা: অনেক প্রতিবন্ধকতা আর নীতিগত জটিলতা থাকলেও বাংলাদেশের বাজারে বাতির একটা সম্ভাবনাময় ব্যবসা যার ফলে প্রতিনিয়ত বাজারে নতুন প্রতিযোগী প্রবেশ করছে। ১০ থেকে ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে কনজ্যুমার ও কমার্শিয়াল বাতির বাজারের আকার বার্ষিক আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও বিশেষ প্রজেক্ট রিলেটেড লাইটিংয়ের চাহিদা বিবেচনায় আনলে বাংলাদেশে বাতির বাজার আরও একটু বেশি। নতুন কোম্পানি হিসেবে ওয়ালটন ৮ থেকে ১০ শতাংশ বাজার শেয়ার দখল করে আছে।

প্রশ্ন:

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

সোহেল রানা: ভবিষ্যৎ বাজারের চাহিদা পর্যালোচনা করে বেশ কিছু পদক্ষেপ আমরা এরই মধ্যে হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘সোলার হোম সলিউশন’। ভবিষ্যতে পরিবেশ রক্ষায় এবং বিকল্প বিদ্যুতের চাহিদা হিসেবে সোলার বাল্ব, টিউব, সোলার প্যানেলসহ একটা কমপ্যাক্ট হোম সলিউশন তৈরি করা যেন ভোক্তা খুব সহজে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য ব্যবহার করতে পারে। তা ছাড়া নিজস্ব অ্যাপ, রিমোট ও গুগল অ্যালেক্সার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন স্মার্ট মোশন ডিটেক্টরম এবং মাল্টিফাংশন করা যায়, এমন বাতি নিয়েও আমরা কাজ করছি।

সোহেল রানা
সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অ্যান্ড সিবিও, ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র আম দ র উৎপ দ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম নগরীর ৩১ কিলোমিটার সড়কে স্থাপন হচ্ছে স্মার্ট এলইডি বাতি

চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোকে আরো আলোকিত করতে স্মার্ট এলইডি বাতি স্থাপন কার্যক্রম শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। 

মহানগরীর ৩১ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার সড়কে এলইডি বাতি বসানো হবে, জানিয়ে চসিকের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, এর মাধ্যমে নগরবাসীর নিরাপদ ও স্বস্তিকর চলাচল নিশ্চিত হবে। 

রবিবার চট্টগ্রাম নগরীর ৮ নম্বর শোলকবহর ওয়ার্ডের আবদুল হামিদ সড়কে খুঁটি স্থাপনের মাধ্যমে স্মার্ট এলইডি বাতি স্থাপন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন চসিকের মেয়র। 

মেয়র বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ‘বিদ্যুৎ বাতি উন্নয়ন কার্যক্রম (অঞ্চল-১, ধাপ-১)’ এবং ‘বিদ্যুৎ বাতি উন্নয়ন কার্যক্রম (অঞ্চল-৫, ধাপ-১)’ শীর্ষক দুটি উপ-প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম নগরের ১০টি ওয়ার্ডে মোট ৩১.৬৩ কিলোমিটার সড়কে ১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ২৬৫টি স্মার্ট এলইডি বাতি স্থাপন করা হবে। এ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আলোকায়ন ব্যবস্থাকে স্মার্ট নগরীতে রূপান্তরের প্রথম ধাপ হিসেবে আমরা দেখছি। এটি শুধু নিরাপত্তাই নয়, সৌন্দর্যও বাড়াবে। এই স্মার্ট এলইডি বাতিগুলো ক্লাউড সার্ভারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত ও তত্ত্বাবধান করা যাবে। এর ফলে আলো চালু বা বন্ধ, যন্ত্রের ত্রুটি শনাক্ত এবং রক্ষণাবেক্ষণ আরো সহজ হবে।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রাম নগরীর ৩১ কিলোমিটার সড়কে স্থাপন হচ্ছে স্মার্ট এলইডি বাতি