দেখাদেখিখেলা
ফারুক মাহমুদ
এক প্রস্থ। দুই প্রস্থ। হালকা খাদ্য সহযোগে কয়েক প্রস্থ চা
কথার পেছনে কথা। আরো, আরো-আরো কথা
কিংবা, কোনো কথা নয়। কাছে-পাশে শুধু বসে থাকা
অতঃপর ফিরে যাওয়া দুটি একা ঘরে
কর্মদিন নেই, ছুটিবার নেই
প্রত্যহ চলিষ্ণু থাকে আমাদের দেখাদেখিখেলা
আজ দেখি ভিন্ন পরিস্থিতি—
কোথাও সংশ্লিষ্ট নেই মানুষের দমআঁটা ভিড়
শহরের প্রতি অঙ্গে দোল খাচ্ছে জ্যোৎস্নার ঢেউ
‘কী জানি কিসের লাগি’ কেঁদে ওঠে আমাদের আধপোড়া মন
স্থগিত থাকুক তবে— পুরনো অভ্যাসবশে ফিরে যাওয়া দুটি একাঘরে
তার চেয়ে এই ভালো— এসো
হারিয়ে মুখস্থ পথ, দূরে যেতে যেতে
মন ভ’রে তুলে রাখি অবিরল গানের জোয়ার
কাল ও আজ
মনিজা রহমান
একদা অ্যাসফল্টের রাস্তা ছিল না
পদাঘাত সহ্য করতে করতে ঘাস মরে যেত,
তৈরি হতো ধূসর সিঁথির মতো পায়ে চলা পথ।
একদা কাপড় ছিল না, তাই লজ্জাও ছিল না
তাই বলে মানুষ নির্লজ্জ ছিল না।
একদা শল্যচিকিৎসা ছিল না, হয়তো প্রয়োজনও ছিল না।
একদা প্রাচীন নদী ছিল কলোরাডো রিভারের মতো
নদীতে ভাসত না মৃতদেহ।
একদা দেশ ছিল না, তাই সীমান্তও ছিল না,
কাঁটাতারের বেড়া ছিল অকল্পনীয়।
একদা বন্দুক ছিল না, মানুষ হত্যার অস্ত্রও ছিল না।
একদা মানুষ ছিল মানুষের মতোই
মানুষের সংগ্রাম ছিল নিজস্ব জমি নিয়ে।
একদা বহু জন্মান্তর আগে আমিও ছিলাম
পুরুষের বিপ্রতীপ।
এখনও মনে করতে পারি
জোনাকি সাক্ষী রেখে কেউ বলেছিল পৃথিবীর আদিম কথা
‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’
অতএব ভালোবাসাও ছিল।
এখন সবকিছুই আছে–
পলিশ করা জুতা, ঝকঝকে মেকআপ,
আগুন ছাড়াই রান্না, ড্রাইভারহীন গাড়ি, পাসওয়ার্ডে টাকা,
কৃত্রিম বুদ্ধি, ফেসবুক, এক্স, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ …
আছে নানা পদের ক্ষুধা, প্রতারণা, বাইসেপ-ট্রাইসেপ,
প্লাস্টিক সার্জারি, ভায়াগ্রা …
শুধু প্রকৃত ভালোবাসা মুখ লুকিয়েছে প্রত্নতত্ত্বের পাথরে।
কবির নির্বাসন
নাজমুল আমীন
(দাউদ হায়দার স্মরণে)
যখন কালো জ্যোৎস্নায় প্লাবিত হলো চরাচর,
পদ্মায় ঝলকে উঠল কালো বন্যার অশনিসংকেত
একটি কবিতার অঙ্কুর থেকে জন্ম নিল একান্ন কোটি বছরের
বিরহের কাল─ অকস্মাৎ─ চণ্ডীদাসের মৃত্যুঞ্জয়ী অপেক্ষার
অভিমান অক্লেশে ম্লান করে দিয়ে।
শির-মূল্য ধার্য করেনি রাষ্ট্র─ তিন নিযুত মুদ্রায়,
পড়েনি তীক্ষ্ণ ছুরির ষোলোটি গভীর দাগ,
পাঁজরে আর চোখের স্ক্লেরায়
তবু কবি দেশান্তরে যায়, যেন এক দিশেহারা
দলছুট পরিযায়ী পাখি
অনন্তর ফিরে দেখে প্রত্যাবর্তনের পথ মুছে গেছে
কালো সূর্যের প্রবল উত্থানে।
চতুর্দশী চন্দ্রের রাতে, এ পৃথিবীর কোনো এক ধীরস্রোত
স্প্রি নদীর তীরে
বসে থাকে কবি:
দুই চোখ ভিজে যায়, ভেসে যায়, জ্যোৎস্নার হিমে
অবিরল তুষারপাতে আজন্ম লালিত এক মানচিত্রের
ছায়াপাত নাকি?─ বাহাদুর শাহ জাফরের মতো
জননী জন্মভূমির দুই গজ জমিনের অস্ফুট আকুতি
ক্রমশ নির্বাপিত হতে থাকে নিয়তির অমোঘ বিধানে।
কবির হৃদয় অন্তিমে ফিরে যেতে চঞ্চল হয়ে ওঠে
যক্ষের অলকাপুরী কিংবা ইন্দ্রের অমরাবতী
কোন দিকে গন্তব্য সমীচীন হবে তার?
কোন দিকে আসল ঠিকানা?
কোত্থেকে আসে অগ্রজের আহ্বান?
আরও কিছু অমর পঙ্ক্তির ইঙ্গিত হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে যায়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
স্টেডিয়ামের পাশে গাড়িচাপায় আহত ১৩, কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল এস্পানিওল-বার্সা ম্যাচ
এস্পানিওল-বার্সেলোনা ম্যাচ শুরুর আগে আরসিডিই স্টেডিয়ামের পাশে একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জনতাকে চাপা দেয়। এতে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। এতে কয়েক মিনিট বন্ধ ছিল এস্পানিওল-বার্সা ম্যাচ। খবর স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এএসের
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতালান পুলিশ তদন্তে নেমেছে। পুলিশ মনে করছে, চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন।
জানা গেছে, সাদা রঙের গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ৪৫ বছর বয়সী এক নারী। গাড়িটি প্রথমে একটি মেয়েকে ধাক্কা দেয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা গাড়ি লক্ষ্য করে হাতের কাছে যা কিছু পেয়েছেন ছুঁড়ে মেরেছেন। এরপরই চালক গাড়ির গতি বাড়ান এবং তাতে দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। চালককে আটক করেছে পুলিশ।
এস্পানিওলের পক্ষ থেকে স্টেডিয়ামের স্পিকারে ম্যাচের ৭ মিনিটে এই ঘটনা দর্শকদের জানিয়ে বলা হয়, ‘স্টেডিয়ামের বাইরে যে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি এখন নিয়ন্ত্রণে। কেউ মারাত্মক আঘাত পাননি।’ এরপর কয়েক মিনিটের জন্য বন্ধ ছিল খেলা। রেফারি সোটো গ্রাদো এরপর দুই দল এবং কাতালান পুলিশের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে খেলা পুনরায় শুরু করেন।