বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “জুলুম-নির্যাতন না করা আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বিএনপির সদস্য হতে পারবেন। সদস্য করার সময় আমাদের খেয়াল রাখতে হবে সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে দলে নেওয়া যাবে না। এদের কারণে আমাদের ভোট কমে যাবে।” 

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিল, কিন্তু বিএনপির কার্যক্রমে বাধা দেয়নি, আমাদের ওপর জুলুম করেনি, উল্টো ভেতরে-ভেতরে আমাদের সহযোগিতা করেছেন তাদের দলে নিতে কোনো সমস্যা নেই।’

শনিবার (১৭ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়িতে দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির ‘সদস্য নবায়ন’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে আরো ১০ হাজার মানুষ হত্যায় প্রস্তুত ছিলেন’

দলের সব নেতাকর্মী ৩১ দফার অ্যাম্বাসেডর: সালাউদ্দিন আহমদ

বিএনপির সদস্য হতে হলে প্রকাশ্যে দলে যোগ দিতে হবে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘গোপনে কাউকে সদস্য করা যাবে না। বিএনপিতে যোগ দিতে হলে ঘোষণা দিতে হবে এবং প্রকাশ্যে যোগ দিতে হবে।”

তিনি বলেন, “যারা আমাদের সঙ্গে হাঁটলে ভোট কমে যাবে, এসব লোক-ব্যক্তিদের দূরে রাখবেন। আমরা চেষ্টা করব, দেশের বৃহত্তর অংশকে মেম্বারশিপের আওতায় নিয়ে আসার জন্য। কারণ এটা দেশের বৃহত্তম দল, তাই দেশের বৃহত্তর অংশ যাতে বিএনপির সদস্য হয় এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।”

অন্ধকারে নয়, দিনের আলোতে সদস্য নবায়নের কথা জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা বিএনপির সদস্য হবেন, আমরা চাই তারা দিনের আলোতেই হোক। এখানে কোনো লুকোচুরি নেই। একদিকে পুরুষের লাইন; অন্যদিকে নারীদের লাইন থাকবে। এটা দৃশ্যমান হতে হবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতে হবে। এটাও একটা আন্দোলন। এটাকে আন্দোলন হিসেবেই নিতে হবে। আমাদের কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে।”

আমীর খসরু বলেন, “বিএনপির ৯১-৯৬ এবং ২০০১-০৭ শাসনামলে দেখিয়েছে, আপনারা দেখেছেন- কিভাবে কর্মসংস্থান বেড়েছে, রপ্তানি বেড়েছে। প্রত্যেকবার কিন্তু বিএনপির সময়। এসব কিন্তু আমরা কখনো বলিনি। এসব কথাগুলো জনসম্মুখে নিয়ে যেতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের কাজের অংশ হিসেবে মেম্বারশিপের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।”

গত ১৫ বছর বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম সঠিকভাবে চালানো সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৭০ লাখ নেতাকর্মী মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম যেভাবে করার কথা ছিল সেভাবে করতে পারিনি। আজ আমাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ এসেছে। দলকে সাংগঠনিক-রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার দিকে নিয়ে যেতে হবে। এর জন্যই আজ এ উদ্যোগ।” 

এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ জেলা ও মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।  

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আওয় ম ল গ ব এনপ র সদস য ব এনপ র স আম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পারভেজের এক সেঞ্চুরিতে দুই রেকর্ড, জয়ে শুরু বাংলাদেশের

পারভেজ হোসেনের চোখেমুখে স্বস্তির আভা। হারতে হারতেই যে জিতে গেলেন! শারজায় আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম টি–টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি পেলেন, ছক্কার রেকর্ড গড়লেন। কিন্তু এত কিছুর পর জয়টা না এলে যে সবই বৃথা যেত!

বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত জিতেছে ২৭ রানে। ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে আসা পারভেজের মুখে তাই হাসিই দেখা গেছে। তবে একটু এদিক–সেদিক হলেই সে হাসি ম্লান হওয়ার শঙ্কা ছিল। ১৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করা স্বাগতিক আরব আমিরাতের শেষ ৬ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬০ রান। মোস্তাফিজুর রহমানের দারুণ ডেথ বোলিং আর আমিরাতের ব্যাটসম্যানদের ভুল মান বাঁচিয়েছে বাংলাদেশের। জয় দিয়ে শুরু করা সিরিজে বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ খেলবে পরশু।

এমন দিনে জয় না পেলে পারভেজ হয়তো নিজেকে হতভাগাই ভাবতেন। ব্যাট হাতে আজ তাঁর যা ইচ্ছা তাই করেছেন। বাউন্ডারি থেকে করেছেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৪ রান। ছক্কা মেরেছেন টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৯টি, দুটিতে বলও হারিয়েছেন। একের পর এক ছক্কায় দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি। আগের সেঞ্চুরিটি কার ছিল, সেটি মনে করা খুব কঠিন হওয়ার কথা নয়। ২০১৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে ৬০ বলে সেঞ্চুরি করা তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে সেই ম্যাচে এসেছিল ৬৩ বলে ১০৩ রানের ইনিংস।

পারভেজ আজ ফিফটি পেয়েছেন ২৮ বলে। সেঞ্চুরি করেছেন তামিমের চেয়ে কম (৫৩) বল খেলে। টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে এটিই তাই দ্রুততম সেঞ্চুরি এখন। তবে সেঞ্চুরি করেও যে শেষ পর্যন্ত আফসোসে পড়তে হয়নি, সে জন্য মোস্তাফিজকে একটা ধন্যবাদ দিতে পারেন বাংলাদেশ ওপেনার।

আমিরাত ইনিংসের শেষ ৪ ওভারে ৪৯ রানের সমীকরণের সময় বোলিংয়ে এসে দুই ওভারে এই বাঁহাতি পেসার রান দিয়েছেন মাত্র ৭। ক্রিজে ছিলেন ২১ বলে চার ছক্কা ও তিন চারে ৪২ রান করা আসিফ খানও। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ১৭ রানে নেন ২ উইকেট। কৃতিত্ব পাবেন তানজিম হাসানও। ইনিংসের ১২তম ও ১৪তম ওভারে তিনি ফেরান ৩৯ বলে ৫৪ রান করা ওপেনার মুহাম্মদ ওয়াসিম ও ২২ বলে ৩৫ রান করা রাহুল চোপড়াকে।

পারভেজ ভালো খেলেছেন বলে অবশ্য অন্য ব্যাটসম্যানদের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। পারভেজ একা যেখানে ছক্কা মেরেছেন ৯টি, বাকি সবাই মিলে মেরেছেন মাত্র ৪টি। তাতেই অবশ্য বাংলাদেশের ছক্কার রেকর্ড হয়ে গেছে। এর আগে এক ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছক্কা ছিল ১২টি।

ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান (২১) এসেছে অতিরিক্ত থেকে। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (১৫ বলে ২০) করেছেন তাওহিদ হৃদয়। সে কারণেই তো প্রথম ১০ ওভারে ১০৩ রান তোলার পরও বাংলাদেশের রান ২২০-২৩০ নয়, ১৯১। আরব আমিরাতের ধারহীন বোলিংয়ের বিপক্ষে সংগ্রহটা ভালো, তবে অসাধারণ কিছু নয়। আরও ভালোর সুযোগ ছিল।

পাওয়ারপ্লেতে ৫৫ রান তোলা বাংলাদেশের রানের চাকা গতি হারিয়েছে মূলত মাঝের ওভারে, বিশেষ করে ১১ থেকে ১৫ ওভারের মধ্যে। এই পাঁচ ওভারে উইকেটে থাকা পারভেজ ও জাকের মিলে তুলতে পেরেছেন মাত্র ৩১ রান। শেষ ৫ ওভারে এসেছে ৫৭ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে অতিরিক্ত ৫ রান পাওয়ার পরও রান আসে মাত্র ৬।

সম্পর্কিত নিবন্ধ