‘জুলুম-নির্যাতন না করা’ আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বিএনপির সদস্য হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

তিনি বলেন, ‘সদস্য করার সময় আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে দলে নেওয়া যাবে না। যাদের কারণে আমাদের ভোট কমে যাবে। আর আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিল, কিন্তু বিএনপির কার্যক্রমে বাধা দেয়নি, আমাদের ওপর জুলুম করেনি, উল্টো ভেতরে-ভেতরে আমাদের সহযোগিতা করেছে, তাদের দলে নিতে কোনো সমস্যা নেই।’ 

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়িতে দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির ‘সদস্য নবায়ন’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির সদস্য হতে হলে প্রকাশ্যে যোগ দিতে হবে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘গোপনে কাউকে সদস্য করা যাবে না। বিএনপিতে যোগ দিতে হলে ঘোষণা দিতে হবে এবং প্রকাশ্যে যোগ দিতে হবে। তাই এ জায়গাতে আমাদের সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই দুই শ্রেণি বাদ দিয়ে বাকিরা সহজভাবে আমাদের সদস্য হতে পারবেন।’

তিনি বলেন, যারা আমাদের সঙ্গে হাঁটলে ভোট কমে যাবে, এ লোক-ব্যক্তিদের দূরে রাখবেন। এ মেম্বারশিপ করতে গিয়ে আমরা চেষ্টা করব বৃহত্তর অংশকে আমাদের মেম্বারশিপের আওতায় নিয়ে আসার জন্য। কারণ এটা দেশের বৃহত্তর দল, তাই দেশের বৃহত্তর অংশ যাতে বিএনপির সদস্য হয়। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মেম্বারশিপ দিনের আলোতে করতে হবে, অন্ধকারে নয়। দিনের আলোতে আজ আমরা এখানে করছি, আপনারাও প্রতিটি শহর-থানা-ইউনিয়নে এ ধরনের মেম্বার করবেন। যারা বিএনপির সদস্য হবে, আমরা চাই, তারা দিনের আলোতেই হোক। এখানে কোনো লুকোচুরি নেই। একদিকে পুরুষের লাইন থাকবে; আরেকদিকে নারীর লাইন থাকবে। এটা দৃশ্যমান হতে হবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতে হবে। এটাও একটা আন্দোলন, শুধু মেম্বারশিপ না। এটাকে আন্দোলন হিসেবেই নিতে হবে। আর আমাদের কথাগুলো মানুষের কাছে যেতে হবে।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, সদস্য নবায়নের মাধ্যমে বিএনপি নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। আপনারা হচ্ছেন প্রত্যেকটি এলাকার নোঙর। মানে যেভাবে নোঙর জাহাজ ধরে রাখে। আপনারা বিএনপির জাহাজটাকে ধরে রাখবেন। তাই আপনাদের কাজটা সঠিকভাবে করতে হবে। এটার ওপর নির্ভর করছে—আগামী দিনে বিএনপির রাজনীতি, এগিয়ে যাওয়া, নির্বাচন, বাংলাদেশ গড়ার। অনেক বড় দায়িত্ব কিন্তু। সবাই কষ্ট করে এ দায়িত্বটা যথাযথভাবে পালন করবেন। এটাই বিএনপির ভবিষ্যৎ, এটা শুধু বিএনপির সদস্য নবায়ন নয়। 

বিএনপি চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের সভাপতিত্বে ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। কর্মসূচি বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ গ্রহণ করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র সদস য আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

মানিকগঞ্জের ক্যাথল্যাব যাবে চমেক হাসপাতালে

মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপনের চার বছর পরও চালু করা যায়নি দুটি ক্যাথল্যাব। এরই মধ্যে একটি ক্যাথল্যাব চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম। তারা ক্যাথল্যাবটি যারা চালু করতে পারেননি, তাদেরকেই এ জন্য দায়ী করেছে। 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হৃদরোগীদের সুবিধার জন্য এই হাসপাতালে ১৯ কোটি টাকা খরচে দুটি ক্যাথল্যাব স্থাপন করা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচটিএমএস ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ট্রেড হাউস এখানে ক্যাথল্যাব দুটি স্থাপন করে। যদিও তারা সেগুলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়নি। এ ছাড়া নির্মাণ করা হয়নি ওয়াশরুম। দক্ষ লোকবলের না থাকায় চার বছরেও ক্যাথল্যাব দুটি চালু করা যায়নি।
এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ক্যাথল্যাব চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার উপসচিব মো. শাহাদত হোসেন কবির ৮ মে এক পরিপত্রে এ নির্দেশ দেন। এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বিপুলসংখ্যক রোগীকে নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি ক্যাথল্যাবের মধ্য থেকে উপযুক্ত একটি চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। 
এতে আরও বলা হয়, এ বিষয়ে চিফ টেকনিক্যাল ম্যানেজার, নিমিউ অ্যান্ড টিসি প্রয়োজনীয় কারিগরি পরামর্শ ও সহায়তা দেবেন।
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ হাসপাতালে ৮০ শয্যার সিসিইউ রয়েছে। এখানে হৃদরোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের জন্য ২০১৮-১৯ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ক্যাথল্যাব স্থাপন করা হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ও দক্ষ লোকবল সংকটে ক্যাথল্যাবগুলো চালু করা যায়নি। একটি ক্যাথল্যাব চালু হলে মাসে ৫০-৬০ জন মুমূর্ষু হৃদরোগীর এনজিওগ্রাম করা সম্ভব। এতে সরকারি খরচেই তারা হার্টে রিং পরাতে পারবেন।
এমনিতেই এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। এর মধ্যে অব্যবহৃত দুটি ক্যাথল্যাবের একটি সরিয়ে নেওয়াকে মহাবিপদ হিসেবে দেখছেন জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সদস্য অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এ ঘটনার দায়ভার তাদের ওপরই পড়ে, যারা দীর্ঘদিনেও ক্যাথল্যাব দুটি চালু করতে পারেননি।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলামের দাবি, তিনি যোগ দেওয়ার পর ক্যাথল্যাব দুটি চালুর উদ্যোগ নেন। ইতোমধ্যে তিনজন নার্স ও দু’জন টেকনিশিয়ানকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ক্যাথল্যাব চালুর আশ্বাস দেন। সেটি দিয়েই রোগীদের সেবা দেওয়া সম্ভব। একটি ক্যাথল্যাব মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী চমেক হাসপাতালে পাঠানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ