বাংলাদেশে প্রতি লাখে চারজন পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। প্রবীণ ব্যক্তিরা এ রোগের কারণে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন। পরিবারের বোঝায় পরিণত হতে থাকেন তাঁরা। পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পারিবারিক ও মানসিক সহায়তা জরুরি। এই সহায়তা পেলে একজন পারকিনসন্স রোগী দীর্ঘদিন ভালো থাকেন।
কারণ
পারকিনসন্স রোগটি স্নায়ুর ক্ষয়জনিত রোগ। পারকিনসন্স রোগে মস্তিষ্কের নিউরনের (স্নায়ুতন্ত্রের একটি মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ কোষ) একটি রাসায়নিক সংকেত ডোপামিনের পরিমাণ হ্রাস পায়। এতে করে স্নায়ুর স্বাভাবিক কাজগুলো ঠিকঠাক সম্পন্ন হয় না। এর ফলে দেহের বিভিন্ন মাংসপেশির কাজের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দেয়। সমস্যাগুলো শুরুতে মৃদু থাকলেও ধীর ধীরে তা বাড়তে থাকে। এতে রোগী তাঁর স্বাভাবিক জীবনের কাজগুলো একসময় আর করতে পারেন না।
বাংলাদেশে প্রতি লাখে চারজন পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত।কী কী ঝুঁকি
যাঁদের বয়স ৬০ বা তারও বেশি, তাঁদেরই পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সাধারণত পুরুষেরা এই রোগে তুলনামূলক বেশি আক্রান্ত হন। যাঁদের পরিবারে এই রোগে কারও আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা আরও বেশি। কিছু রাসায়নিক (কেমিক্যাল) যেমন কীটনাশক ও ওষুধের কারণে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যাঁরা মাথায় বারবার আঘাত পান, তাঁদের পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
লক্ষণ
মাথায় বা হাতে মৃদু কম্পন অনুভব করা; পেশির অনমনীয়তা; ধীরগতিতে চলাফেরা; হাঁটার সময় ভারসাম্য রক্ষায় অপারদর্শিতা; বিষাদগ্রস্ততা; ভাবলেশহীন অভিব্যক্তি ও চোখের পাতার কম সঞ্চালন; বিভ্রান্তি ও স্মৃতিশক্তি লোপ এবং দুর্বলতা ও অনিদ্রা।
রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা
যদি পরিবারে প্রবীণ ব্যক্তিদের স্বাভাবিক কাজ করার সময় ওপরের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে দেখেন তাহলে দ্রুত ও জরুরিভিত্তিতে একজন নিউরোলজি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। পারকিনকসন্স রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সারা জীবন কিছু ওষুধ সেবন করতে হয়।
ওষুধের পাশাপাশি ‘ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন’ নামক পদ্ধতিতে একটি ক্ষুদ্র ইলেকট্রোড মস্তিষ্কের ভেতরে স্থাপন করা হয়। আর রোগীর বুকে একটি ‘পেসমেকার’ স্থাপন করা হয়। পেসমেকারটির সাহায্যে নির্দিষ্ট মাত্রায় বৈদ্যুতিক স্পন্দন মস্তিষ্কে পাঠানো হয়। ফলে রোগীর শরীরের কাঁপুনি ও জড়তা দূর করা যায়। তবে এ পদ্ধতি জটিল ও ব্যয়বহুল। পারকিনসন্স রোগের স্থায়ী কোনো প্রতিরোধব্যবস্থা এখনো নেই। পরিবারের সদস্যরা সহানুভূতির সঙ্গে পরিচর্যা ও তদারক করলে, যত্ন নিলে রোগীর ভালো থাকার সময়কাল বাড়ে।
ডা.
এম এস জহিরুল হক চৌধুরী: অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে জামায়াত নেতার উদ্যোগে খাল খনন
সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর নেতা প্রিন্সিপাল ডক্টর ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়ার উদ্যোগে দীর্ঘ ৩ কিলোমিটার একটি জন গুরুত্বপূর্ণ খাল খনন শুরু হয়েছে। খালটি খননের ফলে প্রাণ ফিরে পাবে অত্যন্ত ২০০ বিঘার উপরে আবাদি জমি।
রবিবার সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান, গ্রিন এন্ড ক্লিন সোনারগাঁ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই খাল খনন কাজ উদ্বোধন করেন।
খাল খনন কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য, ইসলামিক এডুকেশন সোসাইটির পরিচালক ও জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী (নারায়ণগঞ্জ ৩) প্রিন্সিপাল ডক্টর ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া, অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানার রহমান, সোনারগাঁ উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা সেগুপ্তা মেহনাজ, জামপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব কামরুল ইসলাম, সাদীপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ রমজান আলী, বদরুদ্দীন বদু মেম্বার, তাজুল ইসলাম মেম্বার সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও এলাকাবাসী।
অনুষ্ঠানে ড. ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া বলেন, আমার বাবা একজন কৃষক ছিলেন, আমিও একজন প্রকৃত কৃষক কিন্তু আজ দুঃখের সহিত বলতে হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত চাষাবাদ করতে পারছি না কারণ হলো এখন সবগুলো জমি পানির নিচে থাকে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই খাল খনন হলে আবার চাষাবাদ শুরু হবে। কৃষকরা লাভবান হবে।
শিরাবো গ্রামের বাসিন্দা ডাক্তার আবু সাঈদ বলেন, বস্তল থেকে আমবাগ পর্যন্ত যে খালটি খনন হচ্ছে তা প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই খাল খনন হলে আট গ্রামের কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।