বিচ্ছেদের পর স্বামী–স্ত্রীর দুজনেরই অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে কন্যাসন্তান কার জিম্মায় থাকবে?
Published: 21st, May 2025 GMT
প্রশ্ন: বিচ্ছেদের পর স্বামী–স্ত্রীর দুজনেরই অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে কন্যাসন্তান কার জিম্মায় থাকবে? আইন অনুযায়ী যদি বাবা অভিভাবকত্ব পান, সে ক্ষেত্রে তিনি কি মায়ের থেকে সন্তানকে দূরে রাখার অধিকার রাখেন? এমন পরিস্থিতিতে কোন ধরনের আইনিব্যবস্থা নিলে সুফল পাওয়া যাবে? নিজেদের মধ্যে আলোচনায় ব্যর্থ হয়েই পরামর্শ চাইছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর: পারিবারিক আইনের আওতায় প্রায় সব ধর্মেই বাবা সন্তানের প্রকৃত আইনগত অভিভাবক। সাধারণত সব ধর্মেই মা–বাবার বিচ্ছেদ বা যেকোনো একজনের মৃত্যুর পরই অভিভাবকত্বের প্রশ্নটি আসে। মুসলিম পারিবারিক আইনে সন্তানের তিন ধরনের অভিভাবকত্বের কথা বলা আছে, সেগুলো হলো সন্তানের অভিভাবকত্ব, সন্তানের সম্পত্তির অভিভাবকত্ব, সন্তানের বিয়ের অভিভাবকত্ব।
মুসলিম আইনে শিশুসন্তানের দেখাশোনার বিষয়ে (জিম্মাদারের ক্ষেত্রে) সবচেয়ে বড় অধিকারী হলেন মা। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্তানের জিম্মাদার হয়ে থাকেন, কিন্তু কখনো অভিভাবক হতে পারেন না। এই জিম্মাদারির সময়কাল ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর, মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত। তবে নাবালকের কল্যাণেই নির্দিষ্ট বয়সের পরও মায়ের জিম্মায় সন্তান থাকতে পারে। যদি আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয় যে সন্তান মায়ের কাছে থাকলে তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ স্বাভাবিক হবে, সন্তানের কল্যাণ হবে এবং স্বার্থ রক্ষা হবে, সে ক্ষেত্রে আদালত মাকে ওই বয়সের পরও সন্তানের জিম্মাদার হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশে সন্তান কি দত্তক নেওয়া যায়১৫ মে ২০২৪নাবালক সন্তানের ভরণপোষণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য সব ব্যাপারে নৈতিক এবং অর্থনৈতিক সব সুবিধা প্রদান করা একজন অভিভাবকের দায়িত্ব। প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে যে মা পুনরায় বিয়ে করলে নাবালক সন্তানের জিম্মার অধিকার হারান। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে আদালত অবস্থা বিবেচনা করে নাবালককে তার মায়ের পুনর্বিবাহ হলেও তাঁর জিম্মায় রাখার আদেশ দিতে পারেন। কাজেই বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের ব্যাপার। আপনার সন্তানের বয়স কত, তা জানাননি। আদালত সন্তানের কল্যাণের বিষয়টি আমলে নিয়ে নির্ধারণ করবেন সন্তান কার কাছে থাকবে। আপস-মীমাংসার মাধ্যমেও সন্তানকে নিজের কাছে আনা যায়। তবে সেটাতেও যেহেতু ব্যর্থ হয়েছেন, এখন আপনি চাইলে নাবালক সন্তানের জিম্মাদারির জন্য পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন। পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজের আদালতে আপিল করা যায়।
একজন শিশুর সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য মা ও বাবা দুজনের ভালোবাসাই প্রয়োজন আছে। আশা করি, দুজনই সন্তানের সর্বোত্তম কল্যাণের কথা ভেবে বিষয়টি সমাধান করার পদক্ষেপ নেবেন।
লেখা পাঠানোর ঠিকানাপাঠকের প্রশ্ন পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। ই–মেইল ঠিকানা: [email protected] (সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’) ডাক ঠিকানা : প্র অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫। (খামের ওপর লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’) ফেসবুক পেজ: fb.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চবি ছাত্রদলের ৪২০ জনের কমিটিতে নারী মাত্র ১১
আংশিক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রদলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ৪২০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নারী সদস্য রয়েছেন মাত্র ১১ জন। যা শতকরা হিসেবে তাদের অংশগ্রহণের হার মাত্র ২.৬২ শতাংশ।
এর মধ্যে, সহ-সভাপতি পদে একজন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে একজন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একজন, মানবাধিকার সম্পাদক পদে একজন, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে একজন, ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক পদে একজন এবং সহ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক পদে দুইজন।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক
কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীকে মারধর-তালাক, অন্যজনের সঙ্গে বিয়ে
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে ৬০ জন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ৯২ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক ৬৩ জন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ৬৪ জন এবং সদস্য রয়েছেন ৬২ জন।
এর আগে, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে মো. আলাউদ্দিন মহসিনকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি পায় চবি ছাত্রদল। এরপর নানা জটিলতা ও সাংগঠনিক স্থবিরতায় ২ বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি সংগঠনটি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে ৪২০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, একটি কমিটির মেয়াদ থাকে সর্বোচ্চ ২ বছর। সেখানে চবি ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ।
এদিকে, গত ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে মোহাম্মদ মামুন উর রশিদ মামুনকে সংগঠনের সদস্য পদসহ স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদটি শূন্য রয়েছে।
পূর্বের আংশিক কমিটিতে সভাপতি ছিলেন মো. আলাউদ্দিন মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও তারা একই পদে বহাল আছেন।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী