ইনাফি বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৫–২৬: মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের পরামর্শ সভা’ শীর্ষক একটি জাতীয় পরামর্শ সভায় দারিদ্র্য বিমোচনে এ খাতের কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার একটি ঘূর্ণায়মান তহবিল গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। 

সোমবার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে এ সভায় দেশের মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের প্রতিনিধিরা আসন্ন জাতীয় বাজেট নিয়ে তাদের প্রত্যাশা তুলে ধরেন। ব্র্যাকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথি  ছিলেন মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, আশার প্রেসিডেন্ট  আরিফুল হক চৌধুরী এবং শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ড. হুমায়রা ইসলাম। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইনাফি বাংলাদেশ ও সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং সাবেক কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনাফি বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরী। মূল প্রবন্ধে মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের প্রধান নীতিগত ও আর্থিক প্রত্যাশাগুলো তুলে ধরে বলা হয়, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও দারিদ্র্য বিমোচনে মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের ভূমিকা অপরিসীম। এ খাতের কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল জরুরি। পাশাপাশি করনীতি সরল হলে আরও বেশি মানুষের কাছে সহজে পৌঁছানো সম্ভব হবে। 

সভায় দাতাদের সহায়তা কমে যাচ্ছে উল্লেখ করে অনুদান-নির্ভর সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে সরকারি অনুদান বরাদ্দের আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা অর্থ মন্ত্রণালয় ও মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নিয়মিত প্রাক-বাজেট পরামর্শ সভাগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন, যাতে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা ও চাহিদার প্রতিফলন দেখা যায়।

আসিফ সালেহ্ বলেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে আমরা স্থিতিশীলতার দিকে এগোলেও সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা ভুলে গেলে চলবে না। বর্তমানে দেশ নানা সংকটের মুখোমুখি। কোভিডের সময়ের মতো এই প্রেক্ষাপটেও মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে জলবায়ু অভিযোজন ও নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে বেকারত্ব মোকাবিলার মতো বিষয়গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিক খাতগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাজেটে বরাদ্দ রাখা হলে আমরা এই ভারসাম্য বজায় রাখতে পারব।

ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হলে নীতিনির্ধারক ও উন্নয়ন সহযোগীদের সমর্থন আদায় আরও সহজ হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থায়নের সুযোগ বাড়াতে হবে। বড় মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ব্যাংকের মতো সঞ্চয় সংগ্রহ করতে পারে এবং সেটি ছোট প্রতিষ্ঠানে অর্থায়নে ব্যবহার করতে পারে, তাহলে এ খাতের অর্থনৈতিক সংকট অনেকটাই দূর হবে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মানসিক চাপ তৈরি হয় কেন

যেকোনো ধরণের মানসিক চাপ আমাদের মনে এক ধরণের অসহায়ত্ব তৈরি করে। বিশেষ করে যে বিষয়গুলো আমাদের ভালো থাকার জন্য এক ধরণের হুমকি স্বরূপ সেগুলো আমাদের মনে চাপ তৈরি করে।

মনোবিদরা বলেন, ‘‘সাধারণত বাহ্যিক যেকোন কিছুকে আমরা চাপ হিসেবে দেখতে পারি, যদি আমরা সেগুলোকে ভালো থাকার জন্য হুমকি মনে করি।  আমাদের প্রতিদিনের কিছু সমস্যা, যেমন—জ্যামে আটকে থাকা, কাজের সহকারী আসলো কি আসলো না, সংসারের কাজগুলো গুছিয়ে করতে পারলাম কি না, বাসায় হয়তো কোনো গেস্ট আসবে; এগুলোও আমাদের মনে চাপ সৃষ্টি করে। এ ছাড়া, আর্থিক সমস্যা, সম্পর্কের জটিলতা, পেশাগত কোনো সমস্যাও আমাদের মনে চাপ তৈরি করে। আর কিছু জিনিস আমাদেরকে অবশ্যই চাপে ফেলে যেগুলোতে আমরা অসহায়ত্ব বোধ করি। ’’

ডা. মেখলা সরকার, সাইকিয়াট্রিষ্ট একটি পডকাস্টে বলেন, ‘‘যেসব জিনিস আমাদেরকে চাপে ফেলে সেগুলোর কারণে আমরা সাধারণত অসহায়ত্ব বোধ করি। এমন অনেক জিনিস আছে সেগুলোর ওপর আমাদের কোনো কনট্রোল থাকে না এবং দেখা যায় যে সেগুলো আমাদের মনের মধ্যে এক ধরণের ওভার লোড তৈরি করে। আমাদের মনে যেসব জিনিস খুব চাপ সৃষ্টি করে সেটা হলো যেকোন ধরণের মৃত্যু। সেটা হতে পারে প্রিয়জনের মৃত্যু। অথবা প্রিয়জনের বড় ধরণের কোনো অসুখ, সেপারেশন বা ডিভোর্স অর্থাৎ সম্পর্কে যখন বিচ্ছেদ ঘটে সেটা অবশ্যই আমাদের মনে চাপ তৈরি করে। আবার নিজের রোগও আমাদের মনে চাপ তৈরি করে।’’

আরো পড়ুন:

পদত্যাগ করবেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পিও ডা. মাহমুদুল

সারাদিন সুস্থ থাকতে সকালে যে সাতটি কাজ করতে পারেন

ডা. মেখলা সরকার আরও বলেন, ‘‘বডি ইমেজ, ওয়েট নিয়ে ওভার কনসার্ন, কেমন লাগছে আমাকে দেখতে; এই ধরণের ভাবনাও আমাদেকে চাপে ফেলে থাকে। ’’ 

 মানসিক চাপ কমানোর জন্য ব্যায়াম করলে ভালো উপকার পেতে পারেন। নিরাময় হসপিটালের তথ্য, ‘‘মানসিক চাপ কমানোর উপায় হিসেবে ব্যায়াম অনেক ভালো একটা পদ্ধতি। ব্যায়াম যেমন মানসিক চাপ কমায় তেমনই শারীরিক দিক থেকেও উন্নতি সাধন করে। যেমন—হাঁটা, সাইক্লিং, জগিং, ইয়োগা, মেডিটেশন।’’

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ