রাজশাহীতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে পুশইনের সংখ্যা বেড়েছে, এজন্য আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমরা ভারতকে বলেছি, বাংলাদেশিদের প্রোপার চ্যানেলে ফেরত পাঠানোর জন্য। কিন্তু তারা তা করছে না। এজন্য আমরা ভারতের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করেছি। আমরা বলেছি, প্রোপার চ্যানেলে আমাদের নাগরিক পাঠালে আমরা তাদের গ্রহণ করবো।

মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত নবীন রিক্রুট ১৪তম ব্যাচ ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম ব্যাচ কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।

দেশে চুরি ডাকাতি ছিনতাই বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা শিথিল করা হয়নি। বারবার একটা বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করা হলে প্রতিবেশী দেশ এটা নিয়ে সুবিধা নেয়। এজন্য অতিরঞ্জন করা ভালো না। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেক উন্নত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।

দেশের কারাগারগুলোকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলেও এসময় জানান তিনি।

এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডেপুটি জেলার এবং কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক মানের কারা ব্যবস্থাপনা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেজন্য নানা ধরনের আধুনিক ব্যবস্থা চালু করছে।

তিনি বলেন, বন্দিকে অপরাধী নয়, সংশোধিত মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। এখানে প্রশিক্ষিত বন্দিরা দক্ষ জনবল হয়ে জেলে বসেই আয় রোজগার করে পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারবে। এটি জেলের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

উপদেষ্টা বলেন, এখন সময় সংস্কারের। অন্তর্বর্তী সরকার একটি সংস্কারমুখী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূছের নেতৃত্বে এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে কারাগারকে সংশোধন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

সরকার কারারক্ষীদের সাহসিকতা ও কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশে জেল মেডেল প্রবর্তনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া অবসরগামী কারা সদস্যদের আজীবন রেশন প্রদানের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব বাস্তবায়নে জেল একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।

কারারক্ষীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকের শপথ হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। বাস্তবায়নে নিষ্ঠা ও আন্তরিক থাকতে হবে। দুর্নীতি মুক্ত থেকে কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের প্রতি অনুগত থাকতে হবে। 

পরে তিনি কৃতি নবীন প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নবীন ডেপুটি জেলারদের র‍্যাংক ব্যাচ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সৈয়দ মোতাহের হোসেন এবং রাজশাহী বিভাগের ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেনসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ১৮ জন নবীন ডেপুটি জেলার এবং ৫০৮ জন নবীন কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী অংশ নেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক র রক ষ ব যবস থ অন ষ ঠ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত উজ্জ্বল মিয়া (৩৩) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার দৌলতকান্দী রেলস্টেশন–সংলগ্ন আউটার রেললাইন থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত উজ্জ্বল মিয়া রায়পুরার পিরিজকান্দীর সাধুনগর এলাকার মো. মাস্তো মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় লোকজন ও রেলওয়ে পুলিশ জানায়, সকাল ৯টার দিকে ওই যুবক রেললাইন ধরে হাঁটছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বিরতিহীন আন্তনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি একাধিকবার হুইসেল দিলেও ওই যুবক শুনতে পাচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে ট্রেনে কাটা পড়ে তাঁর শরীর খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যায়।

স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে উজ্জ্বলের ছোট ভাই রাকিব মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে গায়ের কাপড় দেখে লাশ শনাক্ত করেন। দুপুর ১২টার দিকে নরসিংদী রেলওয়ে ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জহুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা লাশ উদ্ধার করেন।

নরসিংদী রেলওয়ে ফাঁড়ির এসআই মো. জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বিরতিহীন আন্তনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে ওই যুবক নিহত হয়েছেন। তাঁর স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ