সীমান্তে পুশইনের সংখ্যা বেড়েছে, আমরা প্রতিবাদ করেছি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 27th, May 2025 GMT
রাজশাহীতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে পুশইনের সংখ্যা বেড়েছে, এজন্য আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমরা ভারতকে বলেছি, বাংলাদেশিদের প্রোপার চ্যানেলে ফেরত পাঠানোর জন্য। কিন্তু তারা তা করছে না। এজন্য আমরা ভারতের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করেছি। আমরা বলেছি, প্রোপার চ্যানেলে আমাদের নাগরিক পাঠালে আমরা তাদের গ্রহণ করবো।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত নবীন রিক্রুট ১৪তম ব্যাচ ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম ব্যাচ কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
দেশে চুরি ডাকাতি ছিনতাই বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা শিথিল করা হয়নি। বারবার একটা বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করা হলে প্রতিবেশী দেশ এটা নিয়ে সুবিধা নেয়। এজন্য অতিরঞ্জন করা ভালো না। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেক উন্নত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।
দেশের কারাগারগুলোকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলেও এসময় জানান তিনি।
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডেপুটি জেলার এবং কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক মানের কারা ব্যবস্থাপনা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেজন্য নানা ধরনের আধুনিক ব্যবস্থা চালু করছে।
তিনি বলেন, বন্দিকে অপরাধী নয়, সংশোধিত মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। এখানে প্রশিক্ষিত বন্দিরা দক্ষ জনবল হয়ে জেলে বসেই আয় রোজগার করে পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারবে। এটি জেলের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
উপদেষ্টা বলেন, এখন সময় সংস্কারের। অন্তর্বর্তী সরকার একটি সংস্কারমুখী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা ড.
সরকার কারারক্ষীদের সাহসিকতা ও কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশে জেল মেডেল প্রবর্তনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া অবসরগামী কারা সদস্যদের আজীবন রেশন প্রদানের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব বাস্তবায়নে জেল একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
কারারক্ষীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকের শপথ হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। বাস্তবায়নে নিষ্ঠা ও আন্তরিক থাকতে হবে। দুর্নীতি মুক্ত থেকে কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের প্রতি অনুগত থাকতে হবে।
পরে তিনি কৃতি নবীন প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নবীন ডেপুটি জেলারদের র্যাংক ব্যাচ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সৈয়দ মোতাহের হোসেন এবং রাজশাহী বিভাগের ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেনসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ১৮ জন নবীন ডেপুটি জেলার এবং ৫০৮ জন নবীন কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী অংশ নেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক র রক ষ ব যবস থ অন ষ ঠ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইকো-ট্যুরিজমে তুরস্কের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবে বাংলাদেশ
বন পুনরুদ্ধার ও পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকো-ট্যুরিজম) উন্নয়নে তুরস্কের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। মঙ্গলবার রাজধানীর পানি ভবনে ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আগ্রহের কথা জানান।
বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, হাতি-মানুষ দ্বন্দ্বপ্রবণ এলাকায় বন পুনরুদ্ধার এখন সময়ের দাবি। বনভূমি সংকোচন, খাদ্যঘাটতি এবং অনুপ্রবেশের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে হাতি মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। টেকসই বন ব্যবস্থাপনায় এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠবে। তুরস্কের অভিজ্ঞতা ও কারিগরি জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এ সংকট মোকাবিলায় যুগান্তকারী সহযোগিতার সূচনা হতে পারে বলেও তিনি মত দেন। বিশেষ করে, উপযুক্ত গাছ রোপণ এবং স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ইকো-ট্যুরিজম অবকাঠামো গড়ে তুলতে কারিগরি সহায়তার ওপর উপদেষ্টা জোর দেন।
উপদেষ্টা জানান, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত অঞ্চলে ইকো-ট্যুরিজম সাইট গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে পরিবেশের ওপর কম প্রভাব পড়বে।
রাষ্ট্রদূত রামিস সেন বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি জানান, তুরস্কের সরকারি সহযোগিতা ও সমন্বয় সংস্থা টিকা ঢাকায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। পরিবেশবান্ধব খাতে মধ্যম পরিসরের প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত আছে তারা।
রাষ্ট্রদূত সেন বলেন, বাংলাদেশে টেকসই পর্যটনের ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর বিপুল সুযোগ আছে। আমরা টিকার ঢাকা অফিসের মাধ্যমে উপদেষ্টার দপ্তরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে সম্ভাব্য প্রকল্প চিহ্নিত ও বাস্তবায়নে কাজ করব।