মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে গরু ও মাদক চোরাচালানে জড়িত চক্রের প্রধান এবং রামুর গর্জনিয়ার যুবলীগ নেতা শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীনকে (৩২) কে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপির সদস্য ও তাঁর শ্বশুর শাকের আহমদের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানার পুলিশ ও বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে গরু ও মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেট চালাচ্ছিলেন শাহীন। র‌্যাব-পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়েও তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে সেনাবাহিনীর অভিযানে তিনি এবার ধরা পড়েছেন।

সেনাবাহিনী জানায়, শাহীনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র, মাদকসহ ২০টি মামলা রয়েছে। তাঁর নামে গঠিত ‘শাহীন বাহিনী’র প্রায় ৪০–৪৫ জন সদস্য রয়েছে, যাদের কাছে রয়েছে ভারী অস্ত্র, মাদক ও বিপুল পরিমাণ টাকা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনোয়ার হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর চারটি দল বুধবার রাত থেকে অভিযান চালায়। বৃহস্পতিবার সকালে শ্বশুরের বাড়ি থেকে শাহীনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি একে ২২, তিনটি একনলা বন্দুক, ২০ হাজার ইয়াবা, ১০টি ধারালো অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। এ সময় আরও দুজন সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

‘ত্রাসের রাজত্ব’ ও সিন্ডিকেটের উত্থান

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ২০১০ সালের দিকে ঈদগড়ের কালু ও কলিম ডাকাতের মাধ্যমে অপরাধজগতে প্রবেশ করেন শাহীন। পরে নিজেই ‘শাহীন বাহিনী’ গড়ে তোলেন। এই বাহিনী রাবারবাগান দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন ও মাদক চোরাচালানে জড়ায়।

স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানান, ২০১৪ সালের পর সীমান্তে চোরাচালানের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ চলে যায় শাহীনের হাতে। তখন প্রতি মাসে মিয়ানমার থেকে এক লাখের বেশি গরু-মহিষ আসত। একই সঙ্গে ইয়াবা ও আইসের চালানও খালাস হতো তাঁর বাহিনীর মাধ্যমে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ ও হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমলের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠার পর যুবলীগের রাজনীতিতে যোগ দেন শাহীন। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময়েই তাঁর সিন্ডিকেট শক্তিশালী হয়। ২০২২ সালের পর রাখাইনে সংঘাত শুরু হলে সীমান্তে তাঁর প্রভাব আরও বাড়ে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে র‌্যাব শাহীনকে গ্রেপ্তার করলেও জামিনে বেরিয়ে আবার সক্রিয় হন তিনি।

অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র–গুলি, মাদকসহ নানা সরঞ্জাম.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

মাদক ব্যবসার দায়ে হারিয়েছেন পুলিশের চাকরি, এবার মাদকসহ গ্রেপ্তার

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করেছে জেলার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার চারমাথা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার দায়ে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।

ওই ব্যক্তির নাম মনিরুজ্জামান। তিনি গাইবান্ধা সদর উপজেলার দক্ষিণ ফলিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গাইবান্ধার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক মামুনুর রশিদ জানান, মনিরুজ্জামান দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাদকের ব্যবসা করে আসছিলেন। গতকাল রাত তিনটার দিকে উপজেলা সদরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চারমাথা এলাকায় সন্দেহভাজন একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়। পরে এর ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে ১ হাজার ৮০০টি ইয়াবা বড়ি পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ওই গাড়িটি জব্দের পাশাপাশি মালিক মনিরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাদকদ্রব্য ছাড়াও তাঁর কাছ থেকে নগদ ৬৩ হাজার ২৫০ টাকা পাওয়া গেছে। পরে তাঁকে পলাশবাড়ী থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, মনিরুজ্জামান আগে পুলিশে চাকরি করতেন। পাঁচ বছর আগে একই অপরাধে তাঁর চাকরি চলে যায়।

মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী জানান, মামলার পর আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদক ব্যবসার দায়ে হারিয়েছেন পুলিশের চাকরি, এবার মাদকসহ গ্রেপ্তার