চাঁদা না দেওয়ায় দাড়ি ধরে টান, মারধরের অভিযোগ
Published: 24th, June 2025 GMT
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় চাঁদা না দেওয়ায় এক ব্যক্তির দাড়ি ধরে টানাটানি, অশালীন ভাষায় গালাগালসহ মারধরের অভিযোগ উঠেছে নাসিম ভূইয়া নামে ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সোমবার (২৩ জুন) রাত ৯টার দিকে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকার মানিক কম্পিউটার নামে একটি দোকানের ভেতরে ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগী আলী আজম মানিক ঘটনার পরপরই ঘিওর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ দায়ের হলেও নাসিমকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ঘিওর থানার ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরো পড়ুন:
খাতা জমা দিতে দেরি করায় ১৬ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত, হাসপাতালে ২
লঞ্চের ডেকে টাকা তুলছিলেন বিএনপির কর্মী, যাত্রীদের পিটুনি
লিখিত অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাসিম প্রায়ই আলী আজম মানিকের দোকানে বিভিন্ন কাজ নিয়ে যান। কাজ শেষে ঠিকমতো টাকা না দিয়েই চলে যান তিনি। পাওনা টাকা চাইলে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়াসহ চাঁদা দাবি করেন নাসিম। চাঁদা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি ব্যবসা করতে দেবেন না বলে হুমকি দেন।
সোমবার রাতে জরুরি কিছু কাজ নিয়ে আলী আজম মানিকের দোকানে যান নাসিম। এসময় অন্য কাস্টমারের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নাসিমকে অপেক্ষা করতে বলেন আলী আজম মানিক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলী আজম মানিকের দাড়ি ধরে টানাহেঁচড়া এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ মারধর করেন নাসিম। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়াসহ ব্যবসা করতে দেবেন না বলে হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান তিনি। এ ঘটনার পরে ভুক্তভোগী ঘিওর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
ঘিওর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান খান কুদরত বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি, তবে নাসিম ভূইয়া আমাদের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তাকে কখনো কোনো মিটিং বা মিছিল করতে দেখিনি।”
এ বিষয়ে জানতে ভুক্তভোগী আলী আজম মানিকের মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “নাসিম ভূইয়া আমার দোকানে প্রায়ই বিভিন্ন কাজ নিয়ে আসতেন। আমি তার কাজগুলো করেও দেই। কাজ শেষ করে ঠিকমতো টাকা না দিয়েই চলে যান তিনি। পাওনা টাকা চাইলে আমাকে ব্যবসা করতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন।”
তিনি আরো বলেন, “গতকাল রাতে জমির খারিজের কাজ করতে দোকানে আসেন নাসিম ভূইয়া। অন্য কাস্টামার থাকায় তাকে অপেক্ষা করতে বলি। এরপরই তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। আমার দাড়ি ধরে টানাহেঁচড়া করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। আমি থানায় অভিযোগ করেছি। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।”
ঢাকা/চন্দন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর অভ য গ আজম ম ন ক র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হলগুলোতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো ধরনের রাজনীতি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘোষণায় ছাত্রনেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের নানা পর্যায়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে।
গত শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে রাজনীতি বন্ধের ওই ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল শনিবার দিনভর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ বিষয়ে করণীয় ও রূপরেখা ঠিক করতে গতকাল দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠক করেছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন তাঁরা।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের জন্য সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ ছাত্র–ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। তখন উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। পরে রাত তিনটার দিকে বিক্ষোভের মুখে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোতে ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের আশ্বাসে উল্লাস প্রকাশ করে হলে ফিরে যান। প্রক্টরের ওই ঘোষণার আধঘণ্টা পর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অফিস থেকে এক প্রজ্ঞাপন আসে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কমিটিভুক্তরা পদত্যাগ ও মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে পারবেন। অন্যথায় তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে বিতাড়িত হয় ছাত্রলীগ। সে সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হলের হল প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে—এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেয়। মূলত সেই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন