তানোরের শতবর্ষী খেলার মাঠ রক্ষায় ভূমিসচিবসহ ১৩ জনকে আইনি নোটিশ
Published: 24th, June 2025 GMT
রাজশাহীর তানোর উপজেলার শতবর্ষী গোকুল-মথুরা খেলার মাঠ রক্ষায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৩ জনকে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) বেলার আইনজীবী এস হাসানুল বান্না রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
ভূমিসচিব ছাড়া আরও যাঁদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজশাহীর পরিচালক ও সহকারী পরিচালক; শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী; জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং গোকুল–মথুরা দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মথুরা মৌজায় এই খেলার মাঠটি আরএস খতিয়ানে জমির শ্রেণি হিসেবে স্পষ্টভাবে ‘খেলার মাঠ’ উল্লেখ রয়েছে। পরিমাণ ১ একর ৬ শতাংশ। মালিক হিসেবে লেখা আছে ‘গোকুল-মথুরা ফুটবল ক্লাবের সেক্রেটারি’। গোকুল-মথুরা দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও গোকুল-মথুরা প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খুব গোপনে পুরো মাঠের মালিকানা কাগজপত্রে নিজেদের করে নেয়। যদিও আইন অনুযায়ী এই শ্রেণির জমি অন্য কোনোভাবে ব্যবহার বা হস্তান্তর করার সুযোগ নেই। তারপরও ভুয়া দলিল দেখিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ওই মাঠে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। মাঠ দখল করে মাদ্রাসার ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হলে গতকাল সোমবার খননযন্ত্রের (ভেকু) সামনে শুয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুনজালিয়াতি করে শতবর্ষী খেলার মাঠ দখলের চেষ্টা, ভবন নির্মাণের সময় মাটিতে শুয়ে বাধা২৩ জুন ২০২৫বেলার লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, মাঠটি এলাকার বহুল ব্যবহৃত একটি উন্মুক্ত স্থান। পাশের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকার স্থানীয় শিশু-কিশোর ও তরুণ-যুবকেরা নিয়মিত এ মাঠে খেলাধুলা করে থাকেন এবং এখানে প্রায় দুই শ পঞ্চাশের অধিক বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়েছে। এ ছাড়া মাঠে জানাজা, ঈদের জামাত, ইসলামি মাহফিল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদ্যাপন, শরীরচর্চা, মৌসুমি ধান মাড়াইয়ের কার্যক্রম হয়ে থাকে। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই খেলার মাঠের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের আবেগ-অনুভূতি জড়িয়ে আছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ‘খেলার মাঠ’ হিসেবে চিহ্নিত কোনো ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করার সুযোগ নেই। ‘খেলার মাঠ’ হিসেবে রেকর্ডভুক্ত ভূমিকে ‘খেলার মাঠ’ হিসেবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারা আইন বাস্তবায়ন বা প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে নোটিশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ব্যর্থতার পরিচায়ক।
শ্রেণি পরিবর্তনসম্পর্কিত সব কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বাতিল করে ‘খেলার মাঠ’ হিসেবে যথাযথ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়ে নোটিশে বলা হয়, এ বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপ নোটিশের মাধ্যমে সাত দিনের মধ্যে বেলার আইনজীবীকে অবহিত করার অনুরোধ করা হয়েছে। তা না হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২৮ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন আগামী ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচ তলায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রদানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভা ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এবং ৩ সদস্যের আপিল বোর্ড গঠন করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া।
অন্যরা হলেন- এডভোকেট বোরহানউদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা, এডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, এডভোকেট সুমন মিয়া ও এডভোকেট মতিউর রহমান মতিন।
৩ শতদের আপিল বোর্ডের প্রধান হলেন এডভোকেট নবী হোসেন। বাকি দুইজন হলেন এডভোকেট আজিজুল হক হান্টু ও অ্যাডভোকেট মনজুরুল হক খান।
বার্ষিক সাধারণ সভার শুরুতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন। এরপর সমিতির সদস্যগণ তাদের বক্তব্য পেশ করেন। সকলের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয় জেলা আইনজীবী সমিতির এবারের বার্ষিক সাধারণ সভা।