রাজশাহীর তানোর উপজেলার শতবর্ষী গোকুল-মথুরা খেলার মাঠ রক্ষায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৩ জনকে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) বেলার আইনজীবী এস হাসানুল বান্না রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

ভূমিসচিব ছাড়া আরও যাঁদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজশাহীর পরিচালক ও সহকারী পরিচালক; শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী; জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং গোকুল–মথুরা দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মথুরা মৌজায় এই খেলার মাঠটি আরএস খতিয়ানে জমির শ্রেণি হিসেবে স্পষ্টভাবে ‘খেলার মাঠ’ উল্লেখ রয়েছে। পরিমাণ ১ একর ৬ শতাংশ। মালিক হিসেবে লেখা আছে ‘গোকুল-মথুরা ফুটবল ক্লাবের সেক্রেটারি’। গোকুল-মথুরা দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও গোকুল-মথুরা প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খুব গোপনে পুরো মাঠের মালিকানা কাগজপত্রে নিজেদের করে নেয়। যদিও আইন অনুযায়ী এই শ্রেণির জমি অন্য কোনোভাবে ব্যবহার বা হস্তান্তর করার সুযোগ নেই। তারপরও ভুয়া দলিল দেখিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ওই মাঠে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। মাঠ দখল করে মাদ্রাসার ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হলে গতকাল সোমবার খননযন্ত্রের (ভেকু) সামনে শুয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুনজালিয়াতি করে শতবর্ষী খেলার মাঠ দখলের চেষ্টা, ভবন নির্মাণের সময় মাটিতে শুয়ে বাধা২৩ জুন ২০২৫

বেলার লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, মাঠটি এলাকার বহুল ব্যবহৃত একটি উন্মুক্ত স্থান। পাশের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকার স্থানীয় শিশু-কিশোর ও তরুণ-যুবকেরা নিয়মিত এ মাঠে খেলাধুলা করে থাকেন এবং এখানে প্রায় দুই শ পঞ্চাশের অধিক বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়েছে। এ ছাড়া মাঠে জানাজা, ঈদের জামাত, ইসলামি মাহফিল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদ্‌যাপন, শরীরচর্চা, মৌসুমি ধান মাড়াইয়ের কার্যক্রম হয়ে থাকে। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই খেলার মাঠের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের আবেগ-অনুভূতি জড়িয়ে আছে।

নোটিশে আরও বলা হয়, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ‘খেলার মাঠ’ হিসেবে চিহ্নিত কোনো ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করার সুযোগ নেই। ‘খেলার মাঠ’ হিসেবে রেকর্ডভুক্ত ভূমিকে ‘খেলার মাঠ’ হিসেবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারা আইন বাস্তবায়ন বা প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে নোটিশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ব্যর্থতার পরিচায়ক।

শ্রেণি পরিবর্তনসম্পর্কিত সব কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বাতিল করে ‘খেলার মাঠ’ হিসেবে যথাযথ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়ে নোটিশে বলা হয়, এ বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপ নোটিশের মাধ্যমে সাত দিনের মধ্যে বেলার আইনজীবীকে অবহিত করার অনুরোধ করা হয়েছে। তা না হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার আদালতে হট্টগোল, আসামিপক্ষের আইনজীবীকে হেনস্তা

ঢাকার একটি আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীর শুনানির সময় হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে ওই আইনজীবীকে আদালতকক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলামের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

রাজধানীর পল্টন থানায় করা মামলায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধনসহ সাত আসামিকে বুধবার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।

বরিকুল ইসলামের আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন এ এস এম আলী হায়দার। একপর্যায়ে তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘একটা সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলার অনেক ফ্লো (গতি) ছিল। সময়ের পরিক্রমায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলাগুলো এখন স্তিমিত হয়ে গেছে। আমরা দেখেছি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যারা মামলা করেছে, তাদের অনেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় আমরা দেখব, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা থেকেও অনেকে নাম প্রত্যাহার করবে। আমরা দেখেছি, এর জন্য বিহাইন্ড দ্য সিন অনেক টাকার লেনদেনও হয়েছে।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী আলী হায়দারের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। তাঁরা বলেন, ‘আপনি এটা কী বলছেন? এটা এক্সপাঞ্জ করেন।’

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে চান। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাঁকে ব্যাখ্যা দেওয়ার কোনো সুযোগ দেননি। একপর্যায়ে তাঁকে এজলাস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় আদালতকক্ষে হট্টগোল হয়। কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পরে অন্য আসামির আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডের পক্ষে বক্তব্য দেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যকের ১০ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় মিছিল বের করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বরিকুল ইসলামসহ ১৩ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে আজ ওই মামলায় আদালতে হাজির করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবাদিকের ওপর চড়াও আইনজীবী, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা
  • যুক্তরাষ্ট্রে ৬ বছরের ছাত্রের গুলিতে আহত শিক্ষককে কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
  • আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, মেজবাহউদ্দীন ফরহাদকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান
  • পদে থেকেও নির্বাচন করা যায়: অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় লতিফ সিদ্দিকী ও মঞ্জুরুল আলমের হাইকোর্টে জামিন
  • ঢাকার আদালতে হট্টগোল, আসামিপক্ষের আইনজীবীকে হেনস্তা
  • সজলকে ধরে রাখে রনি, পরে একটি গুলির শব্দ পাই
  • নায়িকা তিশার বিরুদ্ধে মামলা
  • ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী: কে কেন কীভাবে
  • ভালো কাজের বিনিময়ে কারামুক্তি, কেমন আছেন তাঁরা