পাখির বাসা দেখে কী বোঝা যায় বৃষ্টি বেশি হবে নাকি কম হবে?
Published: 25th, October 2025 GMT
পাখিরা কখনও গাছের উঁচু শাখাতে বাসা বাঁধে আবার কখনও নিচু শাখাতে বাসা বাঁধে। গাছের কোথায় বাসা বাঁধছে, এই দেখেই কৃষকেরা বুঝতে পারেন বর্ষাকালে বৃষ্টি বেশি হবে নাকি কম হবে।
জানা যায়, পাখি গাছের উঁচুতে বাসা বাঁধলে এর অর্থ কম বৃষ্টি হবে। পাখি গাছের নিচের দিকে বাসা বাঁধলে তার অর্থ প্রচুর বৃষ্টি হবে।–এ হলো আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার এক প্রাচীন পদ্ধতি। এখনও এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে ভারতের ধারাশিভ এলাকার কৃষকেরা কাজ করে চলেছেন।
আরো পড়ুন:
১১০০ কোটি টাকা বাজেট: আইটেম কন্যা পূজার পারিশ্রমিক কত?
‘কানতারা টু’ সিনেমার আয় ১ হাজার ৭৩ কোটি টাকা
এলাকাটিতে খুব কম বৃষ্টিপাত হয়। তারমধ্যেও স্থানীয় কৃষকেরা ঠিকই তাদের জমিতে ঠিকই ফসল ফলান। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তারা এই কৌশল রপ্ত করেছেন। কিন্তু গত এক বছরে এই অঞ্চলে আচমকা ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েছে। আখ এবং সয়াবিন এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ফসল।
ওই অঞ্চলে নারী কৃষকেরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য জমির এক মাটি খুঁড়ে পানি সংরক্ষণ করেন তারা। এই পদ্ধতিতে এক ফসলি চাষাবাদ ছেড়ে একাধিক ফসল ফলাতে পারছেন।
এই অঞ্চলের এক নারী কৃষক সংঘমিত্রা। তিনি জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করেন না, বরং নিজেই প্রয়োজনীয় সার উৎপাদন করেন। ‘এসএসপি’ থেকে তিনি এই চাষ পদ্ধতি শিখেছেন। এই সংগঠনটি বিশ বছরের বেশি সময় ধরে নারী অধিকার রক্ষায় কাজ করে আসছে। নারী কৃষকেরা পরিবেশ বান্ধব উপায়ে চাষাবাদ শিখছেন।
এখানকার নারীরা কৃষিকাজ করেন। ফসল তোলা শেষ হলে তাদের স্বামীরা সেই ফসল বাজারে বিক্রি করেন। নারীদের লাভ শূন্য। নারীরা যাতে পরিবারের কাজ থেকে জমির অধিকার পেতে পারেন, সে ব্যাপারে সাহায্য করে আসছে কিছু সংগঠন। সংগঠনের প্রচেষ্টায়- এই জেলায় দুই শতাংশ নারী তাদের নিজেদের নামে জমি পেয়েছেন।
কিরণ মানে, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার, এসএসপি বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে, নারীরা যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুক্ত থাকেন এবং আয় করেন তাহলে পুরো পরিবার উপকৃত হবেন। এবং নারীরাও কর্মব্যস্ত থাকবে। তাই আমি প্রতিটি পরিবারের পুরুষ কৃষকদের বলা শুরু করলাম-আপনার কাছে দশ একর জামি থাকলে তার এক একর নারীকে নিজের মতো করে চাষ করতে দিন। ’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাওয়াল-মান্দানার ব্যাটে সেমিফাইনালে ভারত, নিউ জিল্যান্ডের বিদায়
তিন ম্যাচ টানা হারার পর যেন আগুনে ঝাঁপ দিল ভারত। নবি মুম্বাইয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দারুণ স্টাইলেই নিউ জিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল তারা। এখন শনিবারের দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচই ঠিক করবে শেষ চারে ভারতের প্রতিপক্ষ কে হবে।
টস হারলেও ভারত এদিন হার মেনে নিতে আসেনি। অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর ব্যাটিংয়ে নামিয়েছিলেন দলকে। আর ব্যাট হাতে আগুন ঝরালেন স্মৃতি মান্দানা ও প্রতিকা রাওয়াল। দুজনেই করলেন সেঞ্চুরি। সঙ্গে অপরাজিত ৭৬ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন জেমিমা রদ্রিগেজ। এই ম্যাচে তিনি দলে ফিরেছিলেন অলরাউন্ডার অমানজোত কৌরের জায়গায়।
ফলাফল, ভারতের বোর্ডে ঝলমল করছে ৪৯ ওভারে ৩৪০/৩। যা তাদের নারী বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংগ্রহ। তবে বৃষ্টির কারণে ডিএলএস পদ্ধতিতে নিউ জিল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৪ ওভারে ৩২৫ রান। নারীদের একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসে এটিই হতো সর্বোচ্চ রান তাড়া। কিন্তু নিউ জিল্যান্ডের মন্থর ব্যাটিংয়ে শেষ ১৫ ওভারে দরকার ছিল অসম্ভব ১৬৮ রান। যা আর সম্ভব হয়নি।
ব্রুক হ্যালিডে একাই লড়লেন এদিন। খেললেন ৮১ বলে ৮৪ রানের ইনিংস। তবে দলের বাকিদের সঙ্গ না পাওয়ায় সেই চেষ্টা বৃথাই গেল। ইনিংসের শুরুতেই রেনুকা সিংয়ের দুই ইন-ডাকার ডেলিভারিতে সাজঘরে ফেরেন জর্জিয়া প্লিমার ও অধিনায়ক সোফি ডিভাইন। এরপর ভারতীয় স্পিনাররা বেঁধে রাখেন নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটারদের।
ইসাবেলা গেজের সঙ্গে হ্যালিডে ষষ্ঠ উইকেটে ৭২ রানের জুটি গড়লেও শেষ পর্যন্ত দল থামে ২৭১/৮-এ। ভারতের বোলারদের মধ্যে রেনুকা, ক্রান্তি গৌড় ও রাওয়াল সবাই ছিলেন শৃঙ্খলিত। প্রথম ছয় ওভারে কোনো বাউন্ডারি পর্যন্ত দেননি তারা। রাওয়াল নিজে বল হাতে তুলে নেন তার প্রথম বিশ্বকাপ উইকেটও। ম্যাডি গ্রিনকে ফেরান তিনি।
কিন্তু আসল জাদুটা রাওয়ালের ব্যাটেই দেখা গেল এদিন। ইনিংসের প্রথম ছয় ওভারে মাত্র ১৮ রান তুলেছিল ভারত। এরপর ধীরে ধীরে গতি বাড়িয়ে মান্দানা ও রাওয়াল গড়েন শতরানের পার্টনারশিপ। যা নারী একদিনের ক্রিকেটে ভারতের কোনো জুটির যৌথ সর্বোচ্চ রেকর্ড। মান্দানা ৪৯ বলে, আর রাওয়াল ৭৫ বলে তুলে নেন ফিফটি।
স্পিনার ইডেন কারসনের বিপক্ষে প্রথমবার সুইপ করে বাউন্ডারি হাঁকান মন্দানা। এরপর পরের ওভারেই লং-অফের ওপর দিয়ে ছক্কা মারেন। রাওয়াল তখন স্কয়ার অঞ্চলে ছিলেন দুর্দান্ত। লিয়া তাহুহুকে দুটি চার মেরে জানান দিলেন আজ তিনি অন্য মেজাজে।
৭৭ রানে একবার ভাগ্যও সহায় হলো মান্দানার। এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত রিভিউ না নিলে সাজঘরে ফিরতে হতো। কিন্তু ‘আল্ট্রাএজ’ দেখাল ব্যাটে হালকা ছোঁয়া ছিল। এরপর ৮৮ বলে পূর্ণ করেন নিজের ১৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। যা মেগ ল্যানিংয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ডের ঠিক নিচে। কিছুক্ষণ পর ক্র্যাম্পে কাবু হয়ে পড়া মান্দানা শেষ পর্যন্ত সুজি বেটসের বলে ১০৪ রানে ধরা পড়েন হান্নাহ রোর হাতে। তাতে শেষ হয় ২১২ রানের দারুণ ওপেনিং জুটি।
রাওয়াল ১২২ বলে তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তার পর জেমিমা রদ্রিগেজ যখন ব্যাটে নামেন, তখন যেন ইনিংসে নতুন ছন্দ আসে। নিখুঁত টাইমিং, চমৎকার প্লেসমেন্টে সাজানো তার ৫৫ বলে ৭৬ রানের ইনিংসে ছিল ১১টি চার। তিনি কখনও সুইপ করেছেন, কখনও রিভার্স সুইপ। আবার ফুল লেংথ ডেলিভারিতে কভার ড্রাইভে বল উড়িয়েছেন বাউন্ডারিতে।
৪৮ ওভারে বৃষ্টি নামলে ম্যাচ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। পরে খেলা ৪৯ ওভারে নির্ধারিত হয়। আর নিউ জিল্যান্ডের লক্ষ্য নামানো হয় ৪৪ ওভারে।
সব মিলিয়ে ভারতের জন্য দিনটি ছিল একেবারে নিখুঁত; ব্যাটে, বলে, কৌশলে। বিশেষ করে রদ্রিগেজকে দলে ফিরিয়ে তিন নম্বরে পাঠানোর সিদ্ধান্তটি যে সঠিক ছিল, সেটি প্রমাণিত হলো বেশ জোরালোভাবে। এখন দল তাকিয়ে সেমিফাইনালের দিকে, যেখানে তারা চায় এই ফর্মই ধরে রাখতে।
ঢাকা/আমিনুল