উড়োজাহাজ নেই, রানওয়ে নেই—তবু জায়গার নাম ‘এয়ারপোর্ট’
Published: 25th, October 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের বহরী গ্রামে এমন এক জায়গা আছে, যেখানে নেই কোনো উড়োজাহাজ, নেই রানওয়ে, নেই উড়োজাহাজের শব্দ বা যাত্রীদের কোলাহল, তবু জায়গাটির নাম ‘এয়ারপোর্ট’। প্রায় ৫০ বছর ধরে স্থানীয় লোকজনের কাছে এই জায়গা এ নামেই পরিচিত। এখানে আছে কয়েকটি দোকান, একটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা আর পাশে বিস্তীর্ণ বিল।
উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বহরী গ্রামের মাঝামাঝি তিন রাস্তার মোড়ে এই জায়গার অবস্থান। দক্ষিণে পিংড়াবাজার, পশ্চিমে মুন্সিরহাটবাজার আর উত্তরে বহরী আড়ংবাজার। উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের নথিতে জায়গাটি ‘বহরী’ নামেই আছে, তবে স্থানীয় লোকজনের মুখে এখন এটি এয়ারপোর্ট। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে সড়কের পাশে বহরী উচ্চবিদ্যালয়। সেখান থেকে সামান্য এগোলেই তিন রাস্তার সেই মোড়, যেখানে গড়ে উঠেছে এয়ারপোর্ট এলাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে দু-একটি অটোরিকশা। উত্তর পাশে একটি মহিলা মাদ্রাসা, সাইনবোর্ডে লেখা‘খাদিজাতুল কুবরা মহিলা মাদ্রাসা, এয়ারপোর্ট বাজার, বহরী।’ তার ঠিক উত্তরে মসজিদ। পশ্চিমে বিস্তীর্ণ বিল। পূর্ব পাশে একটি দোকান, সামনে কয়েকজনের জটলা। দোকানটি মোহাম্মদ ব্যাপারীর কনফেকশনারি ও চায়ের দোকান। সেখানে কথা হয় এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা ও আসবাবপত্র মিস্ত্রি শফিকুল ইসলাম (৮০), আবদুল মান্নান (৭৫), মো.
স্থানীয় লোকজন জানান, ব্রিটিশ আমলের আগ থেকেই জায়গাটি বহরী নামে পরিচিত ছিল, তবে ১৯৭৫ সালের দিকে নামটি বদলে যায়। তখন খালেক বকাউল নামে বহরী গ্রামের এক রিকশাচালক প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে তিন রাস্তার মোড়ে এসে রিকশাটি রাখতেন। তখন সব রাস্তা ছিল কাঁচা। রিকশা রেখে তিনি হাসতে হাসতে বলতেন, ‘প্লেন (রিকশা) চালাইয়া এয়ারপোর্টে আইসা নামলাম। এয়ারপোর্টে নাইমা এখন বিশ্রাম করব।’ তাঁর এই কথায় মজা পেতেন আশপাশের লোকজন। একদিন রফিক ঢালী নামের এক ব্যক্তি রসিকতার ছলে মোড়ের পাশে একটি তালগাছে এয়ারপোর্ট নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। এর পর থেকেই জায়গাটি এয়ারপোর্ট নামেই পরিচিতি পায় এবং সেই নাম আজও টিকে আছে প্রায় ৫০ বছর ধরে।
উপাদী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহীদ উল্লাহ প্রধান বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নের এয়ারপোর্ট নামের জায়গাটি এখন খুবই পরিচিত। অনেকে দূর থেকে এসে নাম শুনে অবাক হন, জানতে চান কেন এমন নাম। তবে এটি জেলা শহর, হাজীগঞ্জ ও কুমিল্লার দাউদকান্দি-গৌরীপুরসহ আশপাশের এলাকায় যাতায়াতের সহজ ও সময়সাশ্রয়ী পথ। এ কারণেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। চমকপ্রদ নামের কারণে এর পরিচিতি আরও বেড়েছে।’
মতলব দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমজাদ হোসেন বলেন, ‘উপজেলায় “এয়ারপোর্ট” নামে একটি এলাকা আছে, বিষয়টি আমি জেনেছি। খুব শিগগির সেখানে গিয়ে সবকিছু দেখব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর চ ত কজন র উপজ ল ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
উড়োজাহাজ নেই, রানওয়ে নেই—তবু জায়গার নাম ‘এয়ারপোর্ট’
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের বহরী গ্রামে এমন এক জায়গা আছে, যেখানে নেই কোনো উড়োজাহাজ, নেই রানওয়ে, নেই উড়োজাহাজের শব্দ বা যাত্রীদের কোলাহল, তবু জায়গাটির নাম ‘এয়ারপোর্ট’। প্রায় ৫০ বছর ধরে স্থানীয় লোকজনের কাছে এই জায়গা এ নামেই পরিচিত। এখানে আছে কয়েকটি দোকান, একটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা আর পাশে বিস্তীর্ণ বিল।
উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বহরী গ্রামের মাঝামাঝি তিন রাস্তার মোড়ে এই জায়গার অবস্থান। দক্ষিণে পিংড়াবাজার, পশ্চিমে মুন্সিরহাটবাজার আর উত্তরে বহরী আড়ংবাজার। উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের নথিতে জায়গাটি ‘বহরী’ নামেই আছে, তবে স্থানীয় লোকজনের মুখে এখন এটি এয়ারপোর্ট। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে সড়কের পাশে বহরী উচ্চবিদ্যালয়। সেখান থেকে সামান্য এগোলেই তিন রাস্তার সেই মোড়, যেখানে গড়ে উঠেছে এয়ারপোর্ট এলাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে দু-একটি অটোরিকশা। উত্তর পাশে একটি মহিলা মাদ্রাসা, সাইনবোর্ডে লেখা‘খাদিজাতুল কুবরা মহিলা মাদ্রাসা, এয়ারপোর্ট বাজার, বহরী।’ তার ঠিক উত্তরে মসজিদ। পশ্চিমে বিস্তীর্ণ বিল। পূর্ব পাশে একটি দোকান, সামনে কয়েকজনের জটলা। দোকানটি মোহাম্মদ ব্যাপারীর কনফেকশনারি ও চায়ের দোকান। সেখানে কথা হয় এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা ও আসবাবপত্র মিস্ত্রি শফিকুল ইসলাম (৮০), আবদুল মান্নান (৭৫), মো. ইসমাইল (৬৫), প্রবাসী মো. আলী, স্বাস্থ্যকর্মী মো. মেজবাহ উদ্দিন (৪৫), আবদুর রহমানসহ (৫০) আরও কয়েকজনের সঙ্গে।
স্থানীয় লোকজন জানান, ব্রিটিশ আমলের আগ থেকেই জায়গাটি বহরী নামে পরিচিত ছিল, তবে ১৯৭৫ সালের দিকে নামটি বদলে যায়। তখন খালেক বকাউল নামে বহরী গ্রামের এক রিকশাচালক প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে তিন রাস্তার মোড়ে এসে রিকশাটি রাখতেন। তখন সব রাস্তা ছিল কাঁচা। রিকশা রেখে তিনি হাসতে হাসতে বলতেন, ‘প্লেন (রিকশা) চালাইয়া এয়ারপোর্টে আইসা নামলাম। এয়ারপোর্টে নাইমা এখন বিশ্রাম করব।’ তাঁর এই কথায় মজা পেতেন আশপাশের লোকজন। একদিন রফিক ঢালী নামের এক ব্যক্তি রসিকতার ছলে মোড়ের পাশে একটি তালগাছে এয়ারপোর্ট নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। এর পর থেকেই জায়গাটি এয়ারপোর্ট নামেই পরিচিতি পায় এবং সেই নাম আজও টিকে আছে প্রায় ৫০ বছর ধরে।
উপাদী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহীদ উল্লাহ প্রধান বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নের এয়ারপোর্ট নামের জায়গাটি এখন খুবই পরিচিত। অনেকে দূর থেকে এসে নাম শুনে অবাক হন, জানতে চান কেন এমন নাম। তবে এটি জেলা শহর, হাজীগঞ্জ ও কুমিল্লার দাউদকান্দি-গৌরীপুরসহ আশপাশের এলাকায় যাতায়াতের সহজ ও সময়সাশ্রয়ী পথ। এ কারণেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। চমকপ্রদ নামের কারণে এর পরিচিতি আরও বেড়েছে।’
মতলব দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমজাদ হোসেন বলেন, ‘উপজেলায় “এয়ারপোর্ট” নামে একটি এলাকা আছে, বিষয়টি আমি জেনেছি। খুব শিগগির সেখানে গিয়ে সবকিছু দেখব।’