ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার কুরস্কে নিহত ৩
Published: 9th, July 2025 GMT
রাশিয়ার কুরস্ক ওব্লাস্টের একটি পাবলিক সমুদ্র সৈকতে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত এবং পাঁচ বছরের এক শিশুসহ সাতজন আহত হয়েছেন।
আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বুধবার (৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনেএ তথ্য জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া।
কুরস্কের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেকজান্ডার খিনশটাইন তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেন, “মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি কোনো সামরিক লক্ষ্যবস্তু ছিল না। গ্রীষ্মের সন্ধ্যায়, ছুটির দিনে, এমন একটি জায়গায় হামলা করা হয়েছে, যেখানে শিশুদের নিয়ে পরিবারগুলো বিশ্রাম নিচ্ছিল।”
আরো পড়ুন:
ইউক্রেনে আরো অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা ট্রাম্পের
মার্কিন অস্ত্র সহায়তা স্থগিতে রুশ হামলা জোরদারের শঙ্কায় ইউক্রেন
নিহতদের মধ্যে রাশিয়ান ন্যাশনাল গার্ডের একজন সিনিয়র সার্জেন্টও রয়েছেন। খিনশটাইন বলেন, “প্রথম ড্রোন হামলার পর অফিসার এবং তার এক সহকর্মী বেসামরিক মানুষদের সরিয়ে নিতে সাহায্য করছিলেন। এসময় আরো একটি ড্রোন হামলা চালালে সার্জেন্ট নিহত হন।”
এক শিশুসহ পাঁচজন আহতের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। তাদেরকে আঞ্চলিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতদের শরীরে গভীর ক্ষত হওয়ার পাশাপাশি শরীর পুড়ে গেছে।
খিনশটাইন আরো বলেন, “জরুরি পরিষেবার সদস্যদের তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।”
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্টে ইউক্রেন প্রথমবারের মতো রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করার পাশাপাশি বিশাল অংশ দখল করেছিল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ-মাত্রায় রুশ আক্রমণ শুরু করার পর থেকে এটিই রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনীয় সেনাদের সবচেয়ে গভীর এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অনুপ্রবেশ।
দীর্ঘ ৮ মাস পর চলতি বছরের এপ্রিলে রাশিয়ার সেনাবাহিনী কুরস্ক অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে পুনর্দখলে নেওয়ার দাবি করে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন ক রস ক
এছাড়াও পড়ুন:
কীটনাশকমুক্ত করতে কৃষকদের শপথ, গ্রামের জন উন্নয়ন কেন্দ্রকে ‘ফসলের হাসপাতাল’ ঘোষণা
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের সাধুপাড়া গ্রাম। প্রত্যন্ত এই গ্রামের কৃষকেরা শপথ নিয়েছেন নিজেদের গ্রামকে কীটনাশকমুক্ত করতে। গ্রামের জন উন্নয়ন কেন্দ্রকে ‘ফসলের হাসপাতাল’ হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে। কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে ফসল উৎপাদনে উৎসাহী হচ্ছেন এই গ্রামের কৃষকেরা।
গত শুক্রবার সকালে মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে গ্রামের কৃষকেরা সাধুপাড়া কৃষক সংগঠনের মাধ্যমে পরিচালিত জন উন্নয়ন কেন্দ্রে আলোচনা সভা করেন। সেখানে তাঁরা কীটনাশকমুক্ত কৃষির জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। সেখানে তাঁরা জন উন্নয়ন কেন্দ্রকে ‘ফসলের হাসপাতাল’ ঘোষণা করেন। কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এ সময় কৃষকেরা ‘খাদ্যের থালায় বিষ কেন’, ‘মাটি, বায়ু, পানিদূষণ বন্ধ করো’, ‘বিপজ্জনক কীটনাশক নিষিদ্ধ করো’, ‘বিষমুক্ত জীবন চাই’, ‘জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করি, মাটির স্বাস্থ্য ভালো রাখি’, ‘জৈব কৃষি নিরাপদ খাদ্য’, ‘কীটনাশক পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে’ প্রভৃতি লেখা ফেস্টুন তুলে ধরেন।
এর আগে কৃষকের উন্নয়নে পরিচালিত জন উন্নয়ন কেন্দ্রের কার্যালয়ে জৈব বালাইনাশকের উপকারিতা, তৈরি ও ব্যবহার নিয়ে কৃষকেরা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করেন। এ সময় ময়মনসিংহ অঞ্চলের ১০ ধরনের মাটি প্রদর্শন করা হয় এবং এর গুণাগুণ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয় কৃষকদের।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৯ সালে কৃষকের উন্নয়নের জন্য সাধুপাড়া কৃষক সংগঠনটি গঠিত হয়। গ্রামবাসীর সহায়তায় কৃষক আবদুল হেকিমের দেওয়া ৩ শতক জমিতে একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। কৃষক-জেলে, কামার-কুমার, কুটিরশিল্পী, শিক্ষার্থীসহ সব প্রান্তিক মানুষের জন্য কেন্দ্রটির নাম রাখা হয় জন উন্নয়ন কেন্দ্র। যদিও সাধারণ মানুষের মুখে এটি ‘কৃষক সমিতি’ নামেই পরিচিত। প্রতি মাসে এক দিন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সাধুপাড়া গ্রামের ২৬ জন কৃষক এই সমিতির সদস্য।
এই কেন্দ্রে বিলুপ্ত প্রজাতিসহ মাঠে চাষ হওয়া ৭০ ধরনের ধান ও বিভিন্ন জাতের ২০ ধরনের সবজিবীজ কৌটায় ভরে দেয়ালে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ফসলের রোগবালাই মোকাবিলায় জৈব বালাইনাশক সম্পর্কেও একটি কর্নার রয়েছে। কৃষকেরা নিজেদের গ্রামকে কীটনাশকমুক্ত করতে জন উন্নয়ন কেন্দ্রটিকে ‘ফসলের হাসপাতাল’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ফসলে যত ধরনের রোগবালাই হয়, সেগুলো এখানে আনা হয় এবং জৈব উপায়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান থেকে ওষুধ তৈরি করে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সাধুপাড়া কৃষক সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ আবদুল বারী গ্রামবাসীকে জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। তিনি তিন মাস আগে হর্টিকালচার সেন্টার থেকে তিন দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন জৈব বালাইনাশক তৈরির ওপর। এখন নিজের অভিজ্ঞতা গ্রামের কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আবদুল বারী বলেন, ‘আমাদের সংগঠন কীটনাশকবিরোধী। আমরা এখন জৈব বালাইনাশকের ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। কীটনাশক ব্যবহার করলেও তা ধীরে ধীরে কমানোর চেষ্টা চলছে। প্রকৃতি থেকেই বিভিন্ন গাছ থেকে ওষুধ বানিয়ে ফসলের রোগবালাই দমন করছি। সবজিতে এগুলো বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই বালাইনাশক বেশি ব্যবহার করলেও ফসলের ক্ষতি হয় না। কীটনাশক ব্যবহারে মানুষের রোগবালাই বাড়ছে। ফসলে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহারের ফলে এটি ঘটছে। তাই আমরা বিষমুক্ত খাবার উৎপাদনে জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করছি।’
২০০৯ সালে কৃষকের উন্নয়নের জন্য সাধুপাড়া কৃষক সংগঠন গঠিত হয়। নাম দেওয়া হয় জন উন্নয়ন কেন্দ্র। সম্প্রতি তোলা