হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লেগেছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) আনুমানিক দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস, বিমানবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত রয়েছে।

আরো পড়ুন:

সৌদির ফ্লাইট সিলেটে অবতরণ, ঢাকাগামী বিমান বন্ধ

ঢাকায় নামতে না পেরে ৪ ফ্লাইটের চট্টগ্রামে অবতরণ

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট কাজ করছে। এছাড়া বিমানবন্দর বাহিনীর ফায়ার ইউনিট, ঢাকা ওয়াসার গাড়িও দেখা যায়।

বিমানবন্দরের কর্তব্যরত ব্যক্তিরা গণমাধ্যমকে জানান, বিমানবন্দরের ক্যানোপি-১ থেকে ক্যানোপি-৬ পর্যন্ত, বিমানের স্টোররুম, বিজিএমইএর কুরিয়ার সেকশনে আগুন জ্বলছে।

বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটসংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজ হাউসে দুপুর সোয়া ২টার দিকে আগুন লাগে।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দর ফায়ার সেকশন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ফায়ার ইউনিট এবং অন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যক্রম শুরু করে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, বিমানবন্দরের ভেতরে ৮ নম্বর গেটের কাছে স্কাই ক্যাপিটালের অফিস ও ইম্পোর্ট কার্গো এরিয়ায় আগুন লেগেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, কার্গো সেকশনে আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ সিভিল অ্যাভিয়েশনসহ বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট।

ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, “কার্গো ভিলেজে অনেক দাহ্য পদার্থ রয়েছে। সেই সঙ্গে প্রচুর কেমিক্যালের উপস্থিতিও আমরা পেয়েছি। তাই সহজে ফায়ার সার্ভিসের ভেতরে প্রবেশ করে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রিমোট কন্ট্রোল ফায়ার ফাইটিং রোবট আনা হয়েছে।”

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে তদন্ত শুরু করেছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সবাইকে নিরাপদ ও সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র স্কোয়াড্রন লিডার মো.

মাহমুদুল হাসান মাসুদ জানান, অগ্নিকাণ্ডের কারণে ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। রাত ৯টা পর্যন্ত রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে বন্ধ থাকবে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন আগ ন ল গ আগ ন ন ফ ল ইট ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ ও সুবর্ণাকে

রংপুরের তারাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) ও তার স্ত্রী সুর্বণা রায়কে (৬০) চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে নিজ বাড়িতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার সকালে রহিমাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে তাদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে যোগেশ রায়ের মাথার পেছনে এবং সুবর্ণা রায়ের কপালে কোপ মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গ্রামবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, যোগেশ চন্দ্র রায় উত্তর রহিমাপুর নয়াহাট মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ও সাবেক প্রধান শিক্ষক। ২০১৭ সালে তিনি অবসরে যান। তার দুই ছেলে চাকরির কারণে ঢাকা থাকেন। ফলে স্বামী-স্ত্রী দুজনই গ্রামে একা থাকতেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার, মারুফাত হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ২২ মিনিটে ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায়ের সঙ্গে শেষবার কথা হয় যোগেশের। রবিবার সকাল ৭টার দিকে দিনমজুর দীপক চন্দ্র রায় প্রতিদিনের মতো বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ করেন। প্রতিবেশীদের ডেকে মই বেয়ে ভেতরে ঢুকে তিনি খাবার ঘরে যোগেশ রায়ের এবং রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে সুরতহাল শেষে বিকেলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় ডিবি, সিআইডি, পিবিআই এবং র‍্যাব-১৩ এর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঘটনাস্থলে গিয়েছেন রংপুর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার এবং জামায়াতের প্রার্থী এটিএম আজহারুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত নেতাকর্মী ও উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা।

এটিএম আজহারুল ইসলাম জানান, নিজ বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে এভাবে কুপিয়ে হত্যা করা দেশে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির চরম অবনতির ইঙ্গিত। তাই দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

এ দিকে দুপুরেই কর্মস্থল থেকে ছুটে আসেন পুলিশে কর্মরত নিহতের দুই ছেলে। মেঝেতে বাবা-মায়ের মরদেহ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তারা। তবে বড় ছেলের স্ত্রী কল্যাণী রায় বলেন, ‘‘আমার শ্বশুর-শাশুড়ি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। চাকরির সুবাদে আমরা ঢাকা থাকি। প্রতিনিয়ত তাদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আমাদের। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই যখন শুনি তাদের হত্যা করা হয়েছে বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারিনি।’’

শ্বশুর-শাশুড়িকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দ্রুত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন কল্যাণী রানী।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, বিজয়ের মাসে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে এভাবে হত্যা করা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দ্রুত তদন্ত করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

রংপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন বলেন, “চুরি-ডাকাতির কোনো আলামত নেই। বাড়ির উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে ঘাতকরা ঢুকতে পারে। খুব দ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।’’

ঢাকা/আমিরুল//

সম্পর্কিত নিবন্ধ