বারবার অগ্নিকাণ্ড স্পষ্ট করেছে নিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা: তারেক রহমান
Published: 18th, October 2025 GMT
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে বারবার আগুন লাগার ঘটনা জননিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা ও শৃঙ্খলা জোরদারের প্রয়োজনীয়তার কথা স্পষ্ট করে দিচ্ছে বলে মন্তব৵ করেন তিনি।
আজ শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে এক ফেসবুকে পোস্টে তারেক রহমান এই মন্তব৵ করেন। পাশাপাশি আগুনের ঘটনায় তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করলেও সন্ধ্যায়ও আগুন নেভানো যায়নি।
তার এক দিন আগে শুক্রবার চট্টগ্রাম ইপিজেডে একটি কারখানায় আগুন লাগে। তার আগে গত বুধবার আগুন লাগে ঢাকার মিরপুরে একটি পোশাক কারখানা এবং রাসায়নিকের গুদামে। সেই আগুনে ১৬ জনের মৃত্যু হয়।
আজ আগুনের ঘটনায় পরে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ফেসবুকে ইংরেজিতে লেখা পোস্টে তারেক রহমান লেখেন, ‘হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত ও আক্রান্ত সবার প্রতি রইল আমার সহমর্মিতা ও প্রার্থনা। আশা করি সবাই নিরাপদে আছেন।’
আগুনের ঘটনায় দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য ফায়ার সার্ভিস, সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, তাঁদের পেশাদারত্ব ও জনসেবার প্রতি নিষ্ঠা সত্যিই প্রশংসনীয়।
বারবার আগুনের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তে জোর দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লেখেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা—বিশেষ করে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের কারখানা ও মিরপুরের পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জননিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা ও শৃঙ্খলা জোরদারের প্রয়োজনীয়তার কথা স্পষ্ট করে দিচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন আগ ন ল গ র আগ ন ব রব র
এছাড়াও পড়ুন:
কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপারকে আসামি করে দুদকের মামলা
মাদারীপুরে একটি এতিমখানার অন্তত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপারকে আসামি করে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন মাদারীপুরের সাবেক শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা শ্যামল পাণ্ডে ও হজরত শাহ মাদার (র.) দরগাহ শরিফ এতিমখানার সুপার মোহাম্মদ আল-আমিন। সমাজসেবা কর্মকর্তা শ্যামল বর্তমানে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
এর আগে গত ১৫ জুলাই মাদারীপুর পৌর এলাকার দরগাহ শরিফ–সংলগ্ন এলাকায় হজরত শাহ মাদার (র.) দরগাহ শরিফ এতিমখানায় অভিযান চালায় দুদক। এ সময় দুদকের সদস্যরা এতিমখানার মোহতামিম মোহাম্মদ আল-আমিনসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। অভিযানে এতিমদের জন্য প্রাপ্ত সরকারি বরাদ্দ, ছাত্রসংখ্যা এবং আর্থিক লেনদেনের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হলে সেখানে ব্যাপক অনিয়ম লক্ষ করা যায়।
দুদকের সূত্র জানায়, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে সরকারি হিসাবে ১৪৫ জন এতিম শিশুর জন্য মাসে ২ হাজার টাকা হারে প্রায় ২ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে এতিমখানায় মাত্র ৪০ জন শিক্ষার্থী আছে। এ ছাড়া এতিমখানার সুপার আল-আমিনের বিরুদ্ধে ৪৭ লাখ টাকার এফডিআর (স্থায়ী আমানত) জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে উত্তোলন করার অভিযোগ আছে।
মামলায় দুদক উল্লেখ করে, সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপার দুজনে পরস্পর যোগসাজশে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তাঁরা উভয়ই এতিমখানায় প্রকৃত এতিমের সংখ্যা গোপন করেছেন। ৪ বছরে অতিরিক্ত ক্যাপিটেশনগ্র্যান্ট–ভুক্ত দুস্থ ও এতিম নিবাসী দেখিয়ে ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে এতিমদের কল্যাণে ব্যবহৃত ইসলামী ব্যাংক, মাদারীপুর শাখার এমএমপিডিআর (মুদারাবা মান্থলি প্রফিট ডিপোজিট স্কিম) ৪৭ লাখ টাকা, অনুদানকৃত ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৯১৭ টাকাসহ মোট ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ৯১৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
মামলা রেকর্ডকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপসহকারী পরিচালক শ্যামল চন্দ্র সেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০–এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে তাঁদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।’
দুদকের মাদারীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অভিযানের পর কমিশন থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে আজ মামলা করা হয়। এখন পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হলেই আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’