স্বপ্নপূরণের পথে এক ধাপ এগোল মহির
Published: 10th, July 2025 GMT
বয়স যখন সবে তিন মাস, তখন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় মহির উদ্দিন। এতে দৃষ্টিশক্তি হারায় সে। তবে এতে দমে যায়নি। মনের জোরে দৃষ্টিহীনতাকে জয় করে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে সে। এবারের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে মহির।
মহির উদ্দিন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পূর্ব শুখানপুকুরী গ্রামের মিলন হোসেনের ছেলে। প্রতিকূলতার মধ্যেও তার স্বপ্ন, শিক্ষাজীবন শেষে প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই স্বপ্নপূরণের পথে এক ধাপ এগোল সে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দৃষ্টিশক্তি হারালেও ছেলে মহিরকে লেখাপড়া শেখানোর ইচ্ছা ছিল কৃষক মিলনের। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুখে মুখে পড়াতে শুরু করেন তিনি। সেসব পড়া মহিরও দ্রুত রপ্ত করে ফেলত। পরে ছেলেকে বাড়ির পাশের পূর্ব শুখানপুকুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন মিলন। সেখানে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে মহির। ২০১৭ সালে তাকে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেওয়া হয়। এরপর একের পর এক শ্রেণি পেরিয়ে যেতে থাকে সে। এবারে শ্রুতলেখকের সাহায্যে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয় মহির। শ্রুতলেখকের দায়িত্ব পালন করেছে মহিরের ছোট ভাই মাসুদ রানা।
আজ বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে সে জিপিএ ৩ দশমিক ৬৭ পেয়েছে।
মিলন হোসেন বলেন, ‘ওর (মহির) ফলাফলে আমি কী যে খুশি, এটা বোঝাতে পারব না। যতই কষ্ট হোক, ওর লেখাপড়া আমি চালিয়ে নিতে যা করার করব।’
মহিরের ছোট ভাই মাসুদ রানা বলে, ‘ভাইয়ের হয়ে পরীক্ষায় লেখেছি। ভাই পাস করায় শান্তি লাগছে।’
মহির বলে, ‘লেখাপড়া শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে চাই। শেষে চাকরি করে মা-বাবার ঋণ শোধ করার চেষ্টা করব।’
আরও পড়ুনদুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে দৃষ্টিহীন মহির১৭ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে ৪ বিদ্যালয়ে পাস করেনি কেউ
২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ঝালকাঠির জেলার নলছিটি উপজেলার চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া চারটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সবাই অকৃতকার্য হয়েছে, যার ফলে এসব বিদ্যালয়ের পাসের হার দাঁড়িয়েছে শতভাগ শূন্যতে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত বরিশাল বোর্ডের এসএসসি ফলাফলে এ তথ্য উঠে আসে।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, উপজলার কুলকাঠি ইউনিয়নের দেলদুয়ার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৩ জন, রানাপাশা ইউনিয়নের ভেরনবাড়িয়া সিএসইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭ জন, মাটিভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৭ জন ও দপদপিয়া ইউনিয়নের জুরকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়য়ের ১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু চার বিদ্যালয়ের কেউই উত্তীর্ণ হতে না পারায় জেলার শিক্ষা মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, “নলছিটিতে চারটি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। কেন তাদের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি, সেই বিষয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হবে এবং ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/অলোক/এস