রাজবাড়ীতে আবার মহাবিপন্ন বাগাড় বিক্রি, ২৭ কেজির মাছের দাম ৪৩ হাজার টাকা
Published: 10th, July 2025 GMT
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পদ্মা ও যমুনা নদীতে এখনো শিকার হচ্ছে মহাবিপন্ন বাগাড় মাছ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জেলেদের জালে ধরা পড়া প্রায় ২৭ কেজি ওজনের একটি বাগাড় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে বিক্রি হয়। স্থানীয় এক মৎস্য ব্যবসায়ী বাগাড়টি ৪০ হাজার ৫০০ টাকায় কিনে ৪৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীরা জানান, নদীতে পানি বাড়ায় জেলেদের জালে মাঝেমধ্যে বড় বড় মাছ ধরা পড়ছে। রুই, কাতলা, পাঙাশ ও বড় ইলিশের পাশাপাশি ধরা পড়ছে বাগাড় মাছও।
সিরাজগঞ্জের বেলকুচির নাকালিয়ার জেলে গোপাল হালদার আজ দুপুরে চর করনেশনা এলাকার পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জাল ফেলেন। এ সময় তাঁর নৌকায় বড় একটি বাগাড় ধরা পড়ে। এরপর তিনি সেটি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটে। ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মাছটি কিনে নেন।
আজ সন্ধ্যায় শাহজাহান শেখ বলেন, বাগাড়টির ওজন প্রায় ২৭ কেজি। ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে ৪০ হাজার ৫০০ টাকায় তিনি সেটি কিনে নেন। মাছটি তাঁর আড়তে এনে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেন। বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকার এক সিঙ্গাপুরপ্রবাসীর কাছে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে ৪৩ হাজার ২০০ টাকায় মাছটি বিক্রি করেন। বিকাশে টাকা পরিশোধের পর বাগাড়টি নারায়ণগঞ্জে পাঠানো হয়।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় মহাবিপন্ন। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, বাগাড় শিকার, ধরা ও বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ।
বিষয়টি জানেন কি না, জানতে চাইলে শাহজাহান শেখ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে স্থানীয় প্রশাসন বাগাড় বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু জেলেদের জালে ধরা পড়লে কী করবেন? জেলেরা বিক্রির জন্য ঘাটে আড়তে নিয়ে আসেন। এ সময় নিলামে তোলা হলে আমরাও কিনে অন্যত্র বিক্রি করে দিই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে বাগাড় শিকার ও বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও মৎস্য সংরক্ষণ আইনে এমন কিছু না থাকায় তাঁরা পদক্ষেপ নিতে পারেন না। উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুননৌ পুলিশ ফাঁড়ির পাশেই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে মহাবিপন্ন বাগাড়, আইনের প্রয়োগ নেই৩০ জুন ২০২৫আরও পড়ুনআইন প্রয়োগে অবহেলা দুঃখজনক০২ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনপদ্মা নদীতে ধরা পড়েছে ৫০ কেজির মহাবিপন্ন বাগাড়, ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি২৮ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র হতে পারে, আশা আসিফ মাহমুদের
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে কাজ চলছে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা রয়েছে, যাতে আগামী ৫ আগস্ট ঘোষণাপত্র দেওয়া যায়। সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই রাজনৈতিক ঐকমত্যে আসা প্রয়োজন। সবার মতামতের ভিত্তিতে সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে চায়। আমরা আশা করছি, আগামী ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ এ কথা বলেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজনের জন্য যেসব স্টেকহোল্ডার রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত, সবাই যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছে। এখনো তো সরকারের চূড়ান্ত তারিখ পাইনি আমরা, সবেমাত্র সম্ভাব্য ডেট পেয়েছি, চূড়ান্ত ডেট পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন সংস্কার কমিশনগুলো কাজ করছে। সবাই ঐকমত্যে পৌঁছাচ্ছেন। সেই ভিত্তিতে একটা জুলাই চার্টার হবে, কী কী সংস্কার হবে। এর মধ্যে যেগুলো বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো বাস্তবায়ন হবে। ইতিমধ্যে আমরা কাজ করছি। স্থানীয় সরকার বিভাগকে যেসব সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেগুলো আমরা বাস্তবায়নে কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। আশা কিছুদিনের মধ্যে হয়তো আপনারা ফলাফল দেখতে পাবেন।’
এ সময় কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. সহিদ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমানসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।