বনে মুক্ত করে দিলেও উড়ে যায়নি দুই রাজধনেশ, নেওয়া হলো সাফারি পার্কে
Published: 8th, August 2025 GMT
দুই মাস আগে বান্দরবানের থানচি বাজার থেকে উদ্ধার হয় দুটি রাজধনেশের ছানা। বটের ফল, জাম, কলাসহ নানা ধরনের ফলমূল খাইয়ে ছানা দুটিকে লালনপালন করে বন বিভাগ। বড় হওয়া ছানা দুটির এখন শরীরজুড়ে পালক, রয়েছে উড়তে পারার মতো পাখনা। তাই মুক্ত করা হয় গহিন বনে। তবে বনে ছেড়ে দিলেও ধনেশ দুটি মানুষের সংস্রব ছেড়ে যেতে চায় না। উড়ে বেড়ানোর প্রবণতাও নেই তাদের। এমন পরিস্থিতিতে রাজধনেশ দুটিকে বন থেকে ফিরিয়ে এনে পাঠানো হয়েছে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধনেশ দুটিকে সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। এর আগে গত ২ জুন থানচি বাজার থেকে রাজধনেশ দুটিকে উদ্ধার করা হয়েছিল। বান্দরবানের থানচি উপজেলার সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে রাজধনেশের ছানা দুটি ধরে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, থানচি বাজারে রাজধনেশ বিক্রি করতে নিয়ে আসা ব্যক্তির আইনকানুন সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। বন থেকে ছানা দুটি সংগ্রহের পর টাকা পাওয়ার আশায় তিনি বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। বন বিভাগ নানা স্তরে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে বাজার থেকে ছানা দুটি উদ্ধার করে। এরপর বন বিভাগের কর্মীরা সেটি লালনপালন করে। ২ আগস্ট রাজধনেশ দুটিকে সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চলসংলগ্ন এলাকায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে রাজধনেশ দুটি উড়ে যায়নি। মানুষের সংস্রব ছেড়ে উড়ে যাওয়ার কোনো প্রবণতাও দেখা যায়নি ধনেশ দুটির। তাই ধনেশ দুটিকে ফিরিয়ে আনে বন বিভাগ।
বান্দরবান বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) আবদুর রহমান বলেন, ধনেশ ছানাদের মা-বাবা বড় করে। উদ্ধার হওয়া ধনেশ বড় হয়েছে মানুষের সংস্পর্শে। বন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বুনো স্বভাব হারিয়েছে ধনেশ দুটি। তাই বনে মুক্তির পর পুনরায় ফেরত এনে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে। সেখানে খোলামেলা পরিবেশে টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করলে বনে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইনে পোস্টিং জিরো ট্রেন্ডে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি এখন বিশ্বব্যাপী এক বড় সমস্যা। মানসিক স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। আর তাই অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় আগের তুলনায় কমিয়ে দিয়েছেন।
সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত একটি জরিপে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের পরিমাণ বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ শতাংশ কমে গেছে। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। শুনতে অবাক লাগলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত বাণিজ্যিকীকরণ, বিজ্ঞাপনের আধিক্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি আধেয়ের (কনটেন্ট) কারণে এমনটা ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনাকেই ‘পোস্টিং জিরো’ বলা হচ্ছে। এই ট্রেন্ডের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ব্যক্তিগত তথ্য নিয়মিত পোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছেন।
৫০টি দেশের আড়াই লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন অনলাইনে ব্যক্তিগত জীবনের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশের প্রবণতা ক্রমে কমে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার প্রায় ১০ শতাংশ কমে গেছে। এই পতনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম।
মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্কের সাংবাদিক কাইল চেয়কা তাঁর সাপ্তাহিক কলাম ইনফিনিট স্ক্রলে প্রথম পোস্টিং জিরো শব্দটি ব্যবহার করেন। চেয়কা পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফিডে বন্ধুদের দৈনন্দিন জীবনের তুচ্ছ ঘটনার তথ্য বা ছবি দেখা যেত বেশি। বর্তমানে এই প্রবণতা কমে গেছে বলা যায়।
আরও পড়ুনঅনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫কাইল চেয়কা তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘আমরা হয়তো পোস্টিং জিরোর দিকে এগোচ্ছি। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে সাধারণ মানুষ যাঁরা পেশাদার নন, তাঁরা অতিরিক্ত প্রকাশ থেকে বাঁচতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা বন্ধ করে দেন। পোস্টিং জিরো মানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ধারণাগত সমাপ্তি।’
আরও পড়ুনঅনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এমন পতনকে ‘ডেড ইন্টারনেট থিওরি’র মাধ্যমেও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই তত্ত্ব অনুসারে, অনলাইনে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে বেশির ভাগ কনটেন্ট আর প্রকৃত মানুষের তৈরি করছে না। বিভিন্ন বট, এআই মিলে কনটেন্ট তৈরির প্রবণতা বাড়ছে। ফলে অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন।
সূত্র: দ্য প্রিন্ট
আরও পড়ুনসামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাঁরা কিছু পোস্ট করেন না, তাঁদের ৭টি বৈশিষ্ট্য২০ অক্টোবর ২০২৫