বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ বলেছেন, “মসজিদে জামায়াত-শিবিরের দলীয় কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীতে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। যা কাম্য নয়। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব, মসজিদ নিয়ে আমরা রাজনীতি না করি।”

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেয়াজপুরে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত বিএনপি নেতাকর্মীদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

জামায়াতের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে বিএনপি নেতার দুঃখ প্রকাশ

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা করব

বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ বলেন, “হাসিনার পতনের পর দেশে একটা ভালো সময় এসেছে। গণতন্ত্রের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এসময় আমরা যারা গত ১৭ বছর একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, তারা যদি নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-মারামারি করি তাহলে ফ্যাসিস্ট সুবিধা নেবে।”

তিনি বলেন, “বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতার জন্য বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। আমরা বলে দিয়েছি, আমাদের নেতাকর্মীরা সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণ করবে, সংযম দেখাবে। আমাদের নেতাকর্মীরা কাউকে আক্রমণ করবে না। তবে, আমাদেরকে বাঁচানোর অধিকার আমাদের আছে। আমাদের ওপর কেউ জুলুম করতে আসলে তা প্রতিহত করার অধিকার আমাদের আছে।” 

বিএনপির এই নেতা বলেন, “বিএনপির তৃণমূলের সব নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার অর্জনে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত আছে। যতদিন পর্যন্ত দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হবে, ভোটাধিকার অর্জিত না হবে, আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণ করব। জনগণ যদি আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে, আমরা জনগণের অধিকার রক্ষায় এ দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করব।”

এর আগে, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ১৯ অক্টোবরের ঘটনায় আহত নেয়াজপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফারুক, সাধারণ সম্পাদক রায়হান ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঈনকে দেখতে তাদের বাড়িতে যান। তিনি খোঁজ খবর নেন এবং চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

গত ১৯ অক্টোবর রবিবার জামায়াত-শিবিরের দলীয় কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজার জামে মসজিদে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের হয়। ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ গণতন ত র ন ত কর ম ব এনপ র আম দ র র জন ত মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

পরপর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কি না, জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে: রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পরপর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেশের জনগণের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একটা বড় ধরনের সিরিজ নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে, জনগণ এমনটা মনে করছে। জনগণের মনে এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ‘সিরিজ অব ইনসিডেন্ট’ যখন হয়, তখন বুঝতে হবে, এখানে কোনো না কোনো কালো হাত কাজ করছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এবং হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ ঠিকমতো চলছে না—এটা আন্তর্জাতিকভাবে দেখানোর জন্য দেশি-বিদেশি শক্তির হাত থাকতে পারে।

আজ সোমবার দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ফুলমুড়ি গ্রামে দৃষ্টিহীন গায়ক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। সম্প্রতি জাহাঙ্গীর আলম নামের দৃষ্টিহীন ওই ব্যক্তির গান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয় বিষয়টি। তিনি ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনকে দৃষ্টিহীন জাহাঙ্গীর আলমের খোঁজখবর নেওয়ার দায়িত্ব দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে আসেন বিএনপির নেতারা। এ সময় জাহাঙ্গীরের পরিবারকে আর্থিক অনুদান তুলে দেয় সংগঠনটি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয়, নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রধান একটি জ্বালানি। এই যে গাড়িতে চাকা আছে, ইঞ্জিন আছে, সব আছে, কিন্তু জ্বালানি না হলে কি গাড়ি চলবে? তেল ছাড়া গাড়ি চলবে না। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের জ্বালানিশক্তি, এটা ছাড়া গণতন্ত্র এগিয়ে যাবে না। প্রকৃত গণতন্ত্র, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন, মানুষের ভোটের অধিকার, নাগরিক অধিকার, কথা বলার অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার, নির্ভয়ে পরিবারের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার হাসিনা কেড়ে নিয়েছিলেন। এখন সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। আমরা সেই গণতন্ত্রের সুবাতাস বইয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছি।’

পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশের মানুষ পিআর বোঝে না, আমরাও বুঝি না। এখন যাঁরা পিআর পিআর করছেন, তাঁরা এক বছর আগে, দুই বছর আগে, পাঁচ বছর আগে বলেননি কেন? আপনি এখন কেন এটা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন? জনগণ জানে, তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে তারা ভোট দেবে। পছন্দমতো প্রার্থীকে তো জনগণের চিনতে হবে—তাদের এলাকার এমপি হবেন কে? আপনি চিনলেন না, ভোট দিলেন একটি মার্কায়। তারপর হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, অমুক লোক আপনাদের এমপি। আপনাদের ভালো লাগবে? কিন্তু কিছু কিছু দল এটা নিয়ে আসছে—আনুপাতিক নির্বাচন। পিআর হলো জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা করা, বিভ্রান্তি তৈরি করা, জনগণের মনকে অন্য দিকে সরিয়ে দেওয়া। জনগণ এটা কখনোই মেনে নেবে না।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদ, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’–এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান, সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাহমুদ, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা প্রমুখ।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার চান্দিনা উপজেলার এতবারপুরে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ইমাম হাসান ভূঁইয়ার কবর জিয়ারত করেন রুহুল কবির রিজভী। জিয়ারত শেষে শহীদের বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং আমরা বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে চেক প্রদান করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরপর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কি না, জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে: রুহুল কবির রিজভী
  • সরকার ও সেনাবাহিনী: গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয়
  • যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে কত লোক যোগ দিয়েছে?