পারমাণবিক শক্তিচালিত নতুন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া
Published: 26th, October 2025 GMT
পারমাণবিক শক্তিচালিত নতুন একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম ‘বুরেভেস্তনিক’।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল ভ্যালেরি ক্ষেপণাস্ত্রটির সফল পরীক্ষার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবহিত করেন। খবর রয়টার্সের।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা
যুক্তরাজ্যের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় ‘সফল’ হামলার দাবি ইউক্রেনের
পুতিনকে জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমভ জানান, ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৪ হাজার কিলোমিটার (৮ হাজার ৭০০ মাইল) দূরত্ব অতিক্রম করেছে এবং প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে আকাশে ছিল।
রাশিয়া কয়েক বছর ধরেই এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। বুরভেস্টনিক ক্ষেপণাস্ত্র শুধু পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম নয়, বরং এটি নিজেই পারমাণবিক শক্তিধর। সামুদ্রিক পাখির মতো খুব নিচ দিয়েও উড়ে যেতে সক্ষম।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ‘বুরেভেস্টনিক’ এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র যার সমকক্ষ কেউ নেই। প্রায় সীমাহীন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এটি যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরাজিত করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর কাছে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি অবশ্য ‘স্কাই ফল’ নামে পরিচিত। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সংস্থা নিউক্লিয়ার থ্রেট ইনিশিয়েটিভের তথ্যানুসারে, ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে রাশিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্রের ১৩টি পরীক্ষা চালিয়েছিল এবং সেই পরীক্ষার সবই ব্যর্থ হয়েছিল।
পুতিন জানান, কিছু রাশিয়ান বিশেষজ্ঞ তাকে একবার বলেছিলেন যে, এই অস্ত্রটি কখনও সম্ভব হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু বর্তমানে এর ‘গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা’ সম্পন্ন হয়েছে।
পুতিন রুশ সামরিক বাহিনীর প্রধানকে বুরেভেস্টনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি মোতায়েনের জন্য অবকাঠামোর কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘চায়না দুয়ারি’ জাল নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন
দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ‘চায়না দুয়ারি’ জাল নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন স্থানীয় জেলেরা। বরেন্দ্র অঞ্চলের নদ–নদী, খাল–বিল ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার আহ্বান জানিয়ে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে সবুজ সংহতি ও উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বারসিকের যৌথ উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে চায়না দুয়ারি জাল নিষিদ্ধের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবি–সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলেরা ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার সরঞ্জাম—খোরা জাল, পলো, চাঁই, খলই, বিনকি ইত্যাদি হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘চায়না দুয়ারি জাল বন্ধ করো, দেশীয় মাছ রক্ষা করো।’
কর্মসূচিতে বারসিকের গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. শহিদুল ইসলাম বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলেদের পর্যবেক্ষণভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রায় সব নদ–নদী ও খাল–বিলে চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে নির্বিচারে মাছ ধরা হচ্ছে। ছোট ফাঁসের কারণে পোনা মাছও এতে ধরা পড়ে মারা যাচ্ছে। এর ফলে দেশীয় মাছ ও জলজ জীববৈচিত্র্য বিলুপ্তির মুখে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটারের কম ফাঁসের জাল নিষিদ্ধ। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না। এ কারণে মাছের পাশাপাশি জলজ উদ্ভিদ, পাখি, ব্যাঙ, কচ্ছপসহ পুরো জলজ বাস্তুসংস্থান হুমকির মুখে।
গোকুল-মথুরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের বিলকুমারী বিলে আগে কত জাতের মাছ ছিল। এখন আর কিছুই নেই। চায়না জালের কারণে আমরা মৌসুমেও মাছ পাই না।’ বিলকুমারী বিলপারের আরেক জেলে আফাজ উদ্দিন কবিরাজ বিলের হারিয়ে যাওয়া মাছের নাম স্মরণ করে এই জাল বন্ধের দাবি জানান।
সবুজ সংহতি রাজশাহীর আহ্বায়ক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, আইন থাকলেও মাঠপর্যায়ে এর কোনো কার্যকর প্রয়োগ নেই। অবিলম্বে চায়না দুয়ারি জালের আমদানি, তৈরি ও বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। এর কারখানাগুলোও বন্ধের আওতায় আনতে হবে।
মানববন্ধনে বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিকের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পবা উপজেলার নওহাটা মৎস্যজীবী সমবায়ের সাধারণ সম্পাদক আবু সামা, জেলে রঘুনাথ হালদার, সামাজিক কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সম্রাট রায়হান, আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি উপেন রবিদাস, জুলাই ৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী প্রমুখ।