ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর
Published: 26th, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ রবিবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালামপুরে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তিকে ‘মহান শান্তি চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি নিজেও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমও এসময় উপস্থিতিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
দ্বিতীয় দিনের মতো বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র-চীন
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া শান্তি চুক্তির জন্য মালয়েশিয়া সফরে ট্রাম্প
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবর বলছে, অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জানান, জুলাই মাসে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে ‘রক্তপাতের’ পর তাদের চারজনের মধ্যে অনেক ফোনালাপ হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেছেন, তিনি শান্তি চুক্তি সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের চেয়ে অনেক ভালো।
এরপর তিনি থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার ‘সাহসী’ নেতাদের মধ্যে ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরো বলেন যে, এই চুক্তি ‘বহু মিলিয়ন জীবন’ বাঁচাতে পারে।
গত জুলাই মাসে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৩ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
পাঁচ দিনের লড়াইয়ের পর ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ট্রাম্প দুই দেশের তৎকালীন নেতাদের ফোন করে সংঘাত বন্ধ করার আহ্বান জানান, অন্যথায় ওয়াশিংটনের সাথে দেশ দুটির বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করার হুমকি দেন। সেসময় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সম্পাদিত একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির উপর ভিত্তি করে আজ রবিবার ট্রাম্পের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশ দুটির মধ্যে নতুন ‘শান্তি চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হলো।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র কম ব ড য কম ব ড য় ও কম ব ড
এছাড়াও পড়ুন:
মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ চালু, মতিঝিল অংশে কত সময় লাগবে
রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক যুবকের মৃত্যুর পর আজ দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মেট্রোরেলের যাত্রীরা।
সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজ বিকেল তিনটার কিছু পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেন, মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে উত্তরা অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেছে। বাকি অংশ চালু করতে একটু সময় লাগবে। কারণ ক্রেন আসতে হবে। আবার দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য মেরামতের পর পরীক্ষা করতে হবে।
দুর্ঘটনায় নিহত আবুল কালামের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আজ দুপুর ২টা ১০ মিনিটে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) তাদের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে কারিগরি ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের ধৈর্যধারণের অনুরোধ জানিয়েছে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, কারিগরি ত্রুটি মেরামতের চেষ্টা চলছে।
২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ফার্মগেটে মেট্রোরেলে একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছিল। এ কারণে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে মেট্রো ট্রেন চলাচল।
মেট্রোরেল পরিচালনায় যুক্ত একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগের বার দুর্ঘটনার সময় প্রায় ১১ ঘণ্টা লেগেছিল মেট্রোরেল সচল করতে। এবার কত সময় লাগে, তা বলা যাচ্ছে না।
মেট্রোরেলের লাইনের নিচে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের বিয়ারিং প্যাড থাকে। ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, এগুলোর প্রতিটির ওজন আনুমানিক ১৪০ বা ১৫০ কেজি। এসব বিয়ারিং প্যাড ছাড়া ট্রেন চালালে উড়ালপথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্যই মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফিরে যাচ্ছেন যাত্রীরা২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়। উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে মেট্রোরেল চলাচল করে। ডিএমটিসিএলের তথ্য বলছে, উদ্বোধনের পর থেকে গত জুন পর্যন্ত ১৫ কোটি ৭৫ লাখের মতো যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেছে।
মেট্রোরেল এখন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় গণপরিবহন। আজ দুপুরে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধের পর স্টেশন থেকে যাত্রীদের চলে যেতে দেখা যায়।
কারওয়ান বাজারের মেট্রো স্টেশনে চারটি প্রবেশপথ রয়েছে। রোববার দুপুরে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় আনসার ও পুলিশ সদস্যরা ভেতরে অবস্থান নিয়ে সব প্রবেশপথ বন্ধ করে রেখেছেন।
কারওয়ান বাজার মোড়ের বিএসইসি ভবন সংলগ্ন প্রবেশপথের মুখে অর্ধশতাধিক যাত্রী ভিড় দেখা গেল। যাত্রীরা কখন মেট্রোরেল চালু হবে জানতে চাইলে আনসার ও পুলিশ সদস্যদের কেউ স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।
এ সময় তোরাব হাসান নামের এক যাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশন থেকে মতিঝিল যেতে এসেছিলাম। এসে দেখি প্রবেশপথ বন্ধ। শুনলাম দুর্ঘটনা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কখন মেট্রো চালু হবে। কেউ বলতে পারছেন না কবে চালু হবে।’
মেট্রো স্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্য জুয়েল আহমদ যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলছিলেন, ‘আজকে মেট্রোরেল চালু হবে না। আপনারা অপেক্ষা না করে চলে যান।’
জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফার্মগেটে দুর্ঘটনার পর সাড়ে ১২টার দিকে গেট বন্ধ করেছি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই আমরা গেট খুলব।’