হঠকারিতা বা ভুল পদক্ষেপে সম্ভাবনা যেন বিনষ্ট না হয়: মির্জা ফখরুল
Published: 11th, January 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, হঠকারিতা করে, ভুল সিদ্ধান্ত বা ভুল পদক্ষেপের কারণে সেই সম্ভাবনা যাতে বিনষ্ট না হয়, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দ্রুত নির্বাচন হলে আমাদের শক্তি আরও বাড়বে এবং যেসব সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো দূর হয়ে যাবে।’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। এবি পার্টির নতুন চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে বিএনপি, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান মির্জা ফখরুল। এবি পার্টির তরুণ নেতারা ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ভূমিকা রাখবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নেতা–কর্মীদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পাঁচ মাস পরে অনেকেই জিজ্ঞাসা করছেন যে আমাদের অর্জন কী। আমি যে এখানে দাঁড়িয়ে নিঃসংকোচে-নির্ভয়ে কথা বলতে পারছি, এটা একটা বড় অর্জন। সশস্ত্র ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে, হাসিনার বিরুদ্ধে উত্তাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকে সফল করেছেন। আমরা একটা ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এখন একটা পরিবেশ এসেছে, যে পরিবেশে আমরা বাংলাদেশকে নতুন করে নির্মাণের স্বপ্ন দেখছি। এই পরিবেশ ও স্বপ্নটাকে আমরা যেন নষ্ট করে না দিই। আমরা একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই, বৈষম্য দূর করতে চাই।’
‘কিছু মানুষ ঐক্যে ফাটল
ধরানোর চেষ্টা করছেন’
বাংলাদেশের তরুণদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে ও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চান উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনো বিভেদ নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আমাদের দেশেরই কিছু মানুষ বিভিন্নভাবে এই ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছেন। আমি জানি, সেই চেষ্টা সফল হবে না।.
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশকে নতুন করে নির্মাণের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। হঠকারিতা করে, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে, ভুল পদক্ষেপ করে আমরা যেন সেই সম্ভাবনাকে বিনষ্ট না করি। হ্যাঁ, দেশের অবস্থা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে খুব ভালো নয়, রাজনৈতিক দিক থেকেও ভঙ্গুর অবস্থানে আছে। সবাই মিলেই আমরা সমস্যাগুলো সমাধান করতে চাই। সবাই মিলে একসঙ্গে হয়ে যদি আমরা সেই দানব ও ফ্যাসিস্টকে সরাতে পারি, তাহলে আমরা কেন পারব না নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ করতে?’ অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আগেই বিধ্বস্ত আদানির তৈরি করা ড্রোন
ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার আগেই গুজরাটের পোরবন্দরে বিধ্বস্ত হয়েছে আদানি ‘ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস’ নির্মিত ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ ড্রোন। মঙ্গলবার হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
ইজ়রায়েলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আদানি গ্রুপ এই ড্রোন তৈরি করেছিল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই স্বয়ংক্রিয় ড্রোন তৈরি করা হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের পাশাপাশি আকাশপথে নজরদারি চালাতে বিশেষ ভাবে উপযোগী এই যন্ত্র। প্রতিটি ড্রোনের জন্য খরচ পড়েছে ১৪৫ কোটি রুপি।
‘প্রধানমন্ত্রী মোদির ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার ড্রোন কেনা নিয়ে কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো প্রশ্ন তুলেছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিটেড এবং ভারত ডায়নামিক্স ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম হলেও তাদের বাদ দিয়ে আদানিকে ড্রোন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়ে সরব হন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেছিলেন, আদানি গোষ্ঠী ইজ়রায়েল থেকে চারটি ‘হার্মিস-৯০০’ ড্রোনের যন্ত্রাংশ আমদানি করে। আর তা জুড়ে দিয়ে সেই ড্রোনের নাম ‘দৃষ্টি-১০ স্টারলাইনার’ রেখেছে। তারা শুধু ড্রোনের এয়ারফ্রেম তৈরি করেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, সামুদ্রিক অভিযানে যুক্ত হতে ড্রোনটিকে হায়দারাবাদ থেকে পোরবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আগে পরীক্ষামূলক উড়ানের সময় এটি বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত ড্রোনটি উদ্ধার করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। বিষয়টি সম্পর্কে এখনও কোনও বিবৃতি জারি করেনি আদানি গ্রুপ।
উপকূলে নজরদারি বৃদ্ধিতে এই ড্রোনটি নৌবাহিনীর বিশেষ সম্পদ হয়ে উঠতে পারে বলে আশা করা হয়েছিল। নৌবাহিনীর হাতে এই ড্রোন আসলে সমুদ্রে শত্রুপক্ষের জাহাজ বা জলদস্যুদের জলযানে নজরদারি করতে সুবিধা হবে। যেকোনো পরিবেশে কার্যকর এই ড্রোন, ঝড়-ঝঞ্ঝা সইতেও সক্ষম বলে দাবি করেছিল প্রস্তুতকারক সংস্থা।
ঢাকা/শাহেদ