৯ দফা দাবিতে রুয়েটের প্রশাসন ভবনে তালা
Published: 15th, January 2025 GMT
পরীক্ষার খাতায় কোডিং সিস্টেম চালু, দুই শিক্ষকের চাকরিচ্যুতিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে বিকেল সোয়া চারটায় উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, বেলা ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক এস এম আব্দুর রাজ্জাক। শিক্ষার্থীরা তার কাছে ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা শেষে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। উপাচার্যের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বিকেল সোয়া চারটার দিকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা- এডমিন যদি ছাত্র চালায়, শিক্ষক কেন বেতন পায়; আমার ভাইয়ের জীবন নাই, শিক্ষকের হুঁশ নাই; আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই; শাট ডাউন শাট ডাউন, কমপ্লিট শাটডাউন; দালালের ঠিকানা, রুয়েটে হবে না এবং ফ্যাসিস্টের কুলাঙ্গার, হুঁশিয়ার সমাধান প্রভৃতি শ্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবিগুলো হচ্ছে- পরবর্তী সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার খাতায় কোডিং সিস্টেম চালু করতে হবে যাতে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয় এবং এ বিষয়ক প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে; সেমিস্টারের রেজাল্ট ও গ্রেড-শিট দ্রুত প্রকাশ করতে হবে এবং খাতা রিভিউ করার সুযোগ দিতে হবে; রুয়েটের যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে বিভিন্ন অভিযোগ আছে তাদের অনতিবিলম্বে সাময়িক বহিষ্কার এবং অতিদ্রুত তদন্তের সাপেক্ষে স্থায়ী বহিষ্কার করে আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এছাড়া ছাত্রলীগের পোস্টেড নেতাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে; শিক্ষকদের নিয়মিত ক্লাস পরিচালনা নিশ্চিত করতে হবে। যদি শিক্ষকের ব্যস্ততা/অনুপস্থিতির কারণে কোনো ক্লাস মিস যায়, তবে সেক্ষেত্রে সকল শিক্ষার্থীকে ওইদিনের উপস্থিতি দিতে হবে এবং কোনোদিন এক্সট্রা ক্লাস নিলে তা একটা ক্লাসের অ্যাটেন্ডেন্স হিসাবে কাউন্ট করতে হবে; প্রতি মাসে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক সেশন আয়োজন করতে হবে। এছাড়া প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকদের নিয়ে প্রতি মাসে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনার আয়োজন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- রুয়েট ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে; ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অকৃতকার্য করার দায়ে মো.
কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে কেমিক্যাল প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহান উদ্দিন বলেন, গত আগস্ট মাসে আমরা প্রশাসনের কাছে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরি। সেগুলোর মধ্য থেকে কিছু কিছু দাবি পূরণ হলেও আমাদের প্রধান দাবিগুলো পূরণ হয়নি। তাই প্রশাসনকে সাতদিনের আল্টিমেটাম দিই দাবি মেনে নেওয়ার জন্য। বলেছিলাম দাবি মানা না হলে প্রশাসন ভবন তালা মেরে দিব। এজন্য আজ আমরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছি। আর কত আন্দোলন করতে হবে? আর কত ক্লাস বর্জন করতে হবে? এটা আমাদের শেষ আন্দোলন। অতিদ্রুত আমাদের দাবি মেনে নিতে হবে।
আর্কিটেকচার বিভাগের শিক্ষার্থী সাফিন বলেন, বিভিন্ন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে নিজস্ব ক্ষোভ এবং প্রতিহিংসার জেরে শিক্ষার্থীকে ফেল করিয়ে দিয়েছে। যে জিনিসটা একটা শিক্ষার্থীর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এসব ঘটনায় জড়িত শিক্ষকদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া আমরা আজ ৯ দফা দাবি প্রশাসনের কাছে তুলে ধরেছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব দাবি মেনে না নিলে আগামীকাল থেকে আমরা কমপ্লিট শাটডাউন পালন করবো।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মেনে নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীরা যে দুজন শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে সেটি আজকের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র
এছাড়াও পড়ুন:
শাবানার আজ জন্মদিন
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি শাবানা। রবিবার (১৫ জুন) এ অভিনেত্রীর জন্মদিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সিনেমার অবিস্মরণীয় এই তারকা। তার প্রকৃত নাম আফরোজা সুলতানা রত্না। কিন্তু সারা দেশের মানুষ তাকে হৃদয়ে ধারণ করে ‘শাবানা’ নামে।
মাত্র ১০ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে ‘নতুন সুর’ (১৯৬২) সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক হয় শাবানার। সেখান থেকে শুরু—তারপর এক দীর্ঘ পথচলা, যেখানে শাবানা হয়ে ওঠেন একের পর এক যুগান্তকারী সিনেমার মুখ। চার দশকের ক্যারিয়ারে প্রায় ৩০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বাংলা সিনেমার আকাশে নিজেকে স্থায়ী নক্ষত্রে রূপান্তরিত করেন।
‘ভাত দে’, ‘অবুঝ মন’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘ওরা এগারো জন’, ‘চাঁপা ডাঙার বউ’, ‘আক্রোশ’, ‘রাঙা ভাবি’, ‘বাংলার নায়ক’—এমন অসংখ্য কালজয়ী সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের মনে দাগ কেটেছেন শাবানা। জনপ্রিয়তা ও অভিনয়গুণে অনন্য এক শিল্পী, যিনি রোমান্স থেকে শুরু করে সমাজধর্মী, দেশপ্রেম বা পারিবারিক—সব ধরনের চরিত্রে নিজেকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন।
আরো পড়ুন:
‘অত্যাচারী’ স্বামীর মৃত্যুতে কারিশমার শোক, যা বললেন জয়া
দর্শক বলছেন আমি যেন শুভ ভাইকে বিয়ে করি: মন্দিরা
অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাবানা। প্রযোজক হিসেবেও পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। নাট্য ও সংস্কৃতি জগৎ থেকেও অর্জন করেছেন বাচসাস, নাট্যসভা, ললিতকলা একাডেমি ও কথক একাডেমি পুরস্কার।
ব্যক্তিজীবনে ১৯৭৩ সালে বিয়ে করেন সরকারি কর্মকর্তা ও প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিককে। তিন সন্তানের জননী শাবানা ১৯৯৭ সালে হঠাৎ করেই অভিনয় জীবন থেকে বিদায় নেন। ২০০০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তিনি।
অভিনয়ে ফিরবেন কি না, সে প্রশ্ন বহুবার উঠেছে। কিন্তু শাবানা এমন এক নাম, যার অবদান আর স্মৃতিময়তা কখনো ম্লান হওয়ার নয়।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত