আইএফআইসি ব্যাংকে সিআরআইয়ের নামে ৩৫ কোটি টাকার এফডিআর
Published: 4th, February 2025 GMT
রাজধানীর ধানমন্ডিতে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর কোনো অফিস খুঁজে পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে সিআরআইয়ের নামে ৩৫ কোটি ২১ লাখ টাকার এফডিআর পেয়েছে দুদক।
মঙ্গলবার দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল এই অভিযান চালায়।
রাজু আহমেদ বলেন, বিভিন্ন সূত্রে আমরা দুটি ঠিকানা পেয়েছি। সে অনুযায়ী ধানমন্ডি-৩২ এর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও ৬/এ রোডে অভিযান চালিয়ে সিআরআইয়ের অফিসের কোনো খোঁজ পাইনি।
এদিকে সংবাদ বিবৃতিতে দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেছেন, তদন্তে সিআরআইয়ের নামে আইএফআইসি ব্যাংকে ৩৫ কোটি ২১ লাখ টাকার এফডিআর থাকার কথা জানতে পেরেছে দুদক। এছাড়াও, সোনালী ব্যাংকের লেনদেনের রেকর্ডও পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, সিআরআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ বিভিন্ন রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিলের অপব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। তদন্তে নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, সিআরআইয়ের চেয়ারম্যান সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়), ভাইস-চেয়ারম্যান হলেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
অভিযানে ডাচ-বাংলা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সিআরআইয়ের ব্যাংকিং রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান দুদক মহাপরিচালক।
আখতার হোসেন জানান, সিআরআই ট্রাস্টিদের মধ্যে রয়েছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে, এনফোর্সমেন্ট টিম সিআরআই অফিস পরিদর্শন করে সেটি বন্ধ পান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো’—সিডনির মঞ্চে হিমু-রূপার নস্টালজিয়া
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ। ‘পড়ুয়ার আসর’ আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠান ‘প্রিয় পদরেখা’ ছিল কেবল আলোচনা নয়, এ ছিল হুমায়ূনের সৃষ্টিকে অনুভব করার, তাঁর চরিত্রদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার এক আবেগঘন আয়োজন। গদ্য, পদ্য, গান ও নাট্য-আলাপ মিলেমিশে মনে রাখার মতো এক আসর।
অপূর্ব এক দৃশ্যের দেখা মিলল। তরুণ শিল্পী রূপন্তি আকিদ—সিডনির বাঙালি কমিউনিটির তরুণ অভিনেত্রী। নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাঁকে তরুণ প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। সেদিন তাঁর পরনে ছিল হিমুর স্বাক্ষররং নীল শাড়ি, হাতে হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুর আছে জল’ উপন্যাস।
রূপন্তির পাশে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাজনুন মিজান—গায়ে উজ্জ্বল হলুদ পাঞ্জাবি, হাতে ফুল। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন ও টেলিভিশনে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করা মিজান বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, টেলিফিল্ম ও সিনেমায় কাজ করে দর্শকের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও প্রবাসে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন এবং সিডনির শিল্পমহলে তিনি পরিচিত ও সম্মানিত মুখ।
এই নাট্য-আলাপে হিমু ও রূপার ভূমিকায় অভিনয় করেন রূপন্তি ও মিজান। তাঁদের সংলাপ, দৃষ্টিভঙ্গি আর অভিনয়ের কোমল আবেগ যেন মঞ্চে সত্যিই ফিরিয়ে আনল হিমুর হাঁটাচলার সেই নরম আলো, রূপার শান্ত উপস্থিতি আর দুজনের অদ্ভুত অনুভবের জটিল সুন্দর সম্পর্ক।
নাট্য-আলাপ শুরু হতেই মঞ্চ যেন গল্পের পাতায় পরিণত হলো। যখন তাঁদের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো—
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?’
‘না, ভালোবাসি না...কারণ, ভালোবাসলে তো প্রাপ্তির বাসনা থাকে। আমি তোমাকে অনুভব করি।’
তখন হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল নিস্তব্ধতার গভীর ঢেউ। দর্শকের চোখে ভেসে উঠল হিমু-রূপার নরম, শীতল, হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তগুলো।
পরিবেশ আরও আবেগময় হয়ে ওঠে পরিচিত সুরে—‘নেশা লাগিল রে, বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিল রে...’
গানের সুর মিশে গিয়েছিল সিডনির প্রবাসী আবেগে—হিমুর হলুদ, নীল আর স্নিগ্ধ প্রেমের গন্ধে। ‘পড়ুয়ার আসর’-এর অন্যতম সদস্য রোকেয়া আহমেদ বলেন, ‘তাঁর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিডনিতে এই আয়োজন। আমরা চাই তাঁর সৃষ্টির আলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক। প্রবাসে থেকেও তাঁকে নতুন করে উপলব্ধি করার একটি জায়গা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুনগানের সুরে, মেজবানের ঘ্রাণে—সিডনি যেন এক দিনের চট্টগ্রাম১০ নভেম্বর ২০২৫একজন মুগ্ধ দর্শক অনুষ্ঠান শেষে মন্তব্য করেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন গল্পের চরিত্ররা সত্যি সত্যি সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আলোচনার প্রতিটি কথাই হৃদয় ছুঁয়ে গেল।’
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ