সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক ভুয়া সুবিধাভোগী থাকার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে সরকার। কর্মসূচিগুলো অডিট বা নিরীক্ষার পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। আগামীতে এ কর্মসূচির কৌশল বদলানো হবে। নিখুঁত টার্গেটিংয়ের জন্য নির্ভুল পদ্ধতিতে যেতে হবে। 
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষার ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বিভিন্ন প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভুয়া বা ত্রুটিপূর্ণ সুবিধাভোগী থাকার কথা বিষয়টি তুলে ধরেছে। এমনটি হলে বাজেটে এ খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, তার প্রায় অর্ধেকই অপচয় হয়েছে– যা রীতিমতো উদ্বেগজনক। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি যদি সত্যিকারার্থে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হয়, তাহলে এটিকে নির্ভুল করতে হবে। এতদিন কাজটি কেন করা হয়নি বিস্ময়ের।  

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, একজন মায়ের জন্য ৮০০ টাকা মাসিক ভাতা কোনো কাজেই আসে না। এটি একটি প্রহসন। ৮০০ টাকা দিয়ে নারীর কী ক্ষমতায়ন হবে? বিশ্বব্যাপী সামাজিক নিরাপত্তার ব্যয় করা হয় খুবই দুর্বল মানুষদের জন্য। রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া, শিক্ষার ব্যবস্থা করা। তাদের সুস্থ রাখার দায়িত্বও রাষ্ট্রের।
অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তী কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, নগদ অর্থের সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জীবিকা নির্বাহ, প্রশিক্ষণ, আচরণগত পরিবর্তন এবং পুষ্টি গ্রহণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি আর্থিক সহায়তা একত্র করে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি মানব পুঁজি তৈরি ও দারিদ্র্যের চক্র ভাঙতে সহায়তা করে।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ। এ কর্মসূচির অধীন অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের ৩৬ মাস পর্যন্ত মাসিক ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়। বয়স্ক ও বিধবারা মাসে ভাতা পান ৫৫০ টাকা। প্রতিবন্ধীরা পান ৮৫০ টাকা। চলতি অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের প্রায় ১৭ শতাংশ।
উন্নয়ন সহযোগী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন খাতের উন্নয়নকর্মী কর্মশালায় অংশ নেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ধুরন্ধর ঝড়: ৭ দিনে আয় ৪১৩ কোটি টাকা

বলিউড অভিনেতা রণবীর সিংয়ের নতুন সিনেমা ‘ধুরন্ধর’। লাদাখে শুটিং করতে গিয়ে সিনেমাটির শতাধিক ক্রু সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন, ট্রেইলার মুক্তির পর রণবীরের মারকাটারি উপস্থিতিও আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। ফলে আদিত্য ধর নির্মিত এ সিনেমার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন সিনেমাপ্রেমীরা। অপেক্ষার ইতি টেনে সিনেমাটি নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হয়েছেন রণবীর সিং। গত ৫ ডিসেম্বর ৪ হাজার পর্দায় মুক্তি পায় এটি। চলতি বছরে রণবীর সিংয়ের এটিই প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা।    

প্রিয় তারকার সিনেমার জন্য বছরজুড়ে অপেক্ষায় ছিলেন রণবীরের ভক্ত-অনুরাগীরা। বছর শেষে পর্দায় এসে ভক্তদের হতাশ করেননি এই তারকা। চলচ্চিত্র সমালোচক, বক্স অফিস রিপোর্ট অন্তত তেমনই খবর দিয়েছে।    

আরো পড়ুন:

রণবীরের হাঁটুর বয়সি নায়িকা সারাকে কতটা জানেন?

পাঁচ দিনে ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার আয় ৩০৬ কোটি টাকা

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার রেণুকা ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার রেটিং পাঁচে সাড়ে তিন দিয়েছেন। ‘ধুরন্ধর’ সিনেমাকে ‘শক্তিশালী করাচি মাফিয়া থ্রিলার’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তার মতে, “সিনেমাটির প্রধান অভিনেতা রণবীর সিং ‘সংযত কিন্তু জ্বলন্ত’ পারফরম্যান্স করেছেন; যা চলচ্চিত্রের সামগ্রিক প্রভাবকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে। সিনেমাটি প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের হলেও বিরক্তিকর মনে হয়নি। কারণ এতে রয়েছে ‘স্টাইলিশ, নিবিড় গাঁথুনির গল্প। আর নির্মাণশৈলী বিশ্বমানের।”     

হিন্দুস্তান টাইমসের ঋষভ সুরি পাঁচে রেটিং দিয়েছেন ৩। ‘দীর্ঘ কিন্তু উপাদানে ভরপুর স্পাই ড্রামা’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। রণবীর সিং ও অক্ষয় খান্নার অভিনয়, পাশাপাশি পরিচালক আদিত্য ধরের কাজের প্রশংসা করেছেন। তবে সমালোচক রেণুকার সঙ্গে খানিকটা দ্বিমত পোষণ করেছেন ঋষভ। কারণ চলচ্চিত্রটির দৈর্ঘ্য অতিরিক্ত ও উপ-কাহিনি কম বলে বর্ণনা করেছেন এই সমালোচক।     

এনডিটিভির রাধিকা শর্মা পাঁচে রেটিং দিয়েছেন ৩। অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্স ও সাউন্ডট্র্যাকের প্রশংসা করেছেন তিনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধের সমালোচনা করে সিনেমাটিকে ‘একেবারে ভিন্ন আরেকটি চলচ্চিত্রের মতো’ বলে মন্তব্য করেছেন রাধিকা। পিঙ্কভিলার গায়ত্রী নির্মল চলচ্চিত্রটিকে পাঁচে রেটিং দিয়েছেন ৪। তিনি চলচ্চিত্রটির দ্বিতীয়ার্ধ, চিত্রনাট্য, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের প্রশংসা করেছেন। যদিও চলচ্চিত্রটির দৈর্ঘ্য নিয়ে সমালোচনা করেছেন রাধিকা।    

বক্স অফিসে ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার শুরুটা মন্দ হয়নি। বলি মুভি রিভিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত বলিউডের ৪৪টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া সিনেমার শীর্ষে রয়েছে ‘ছাবা’ (২৯ কোটি রুপি)। এ তালিকার চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ‘ধুরন্ধর’ সিনেমা। মুক্তির প্রথম দিনে সিনেমাটি আয় করেছে ২৪ কোটি রুপি (নিট), দ্বিতীয় দিনে আয় করেছে ৩০ কোটি রুপি (নিট), তৃতীয় দিনে আয় করে ৩৭ কোটি রুপি (নিট), চতুর্থ দিনে আয় করে ২১ কোটি রুপি (নিট), পঞ্চম দিনে আয় করে ২৫.৫ কোটি রুপি (নিট), ৬ষ্ঠ দিনে আয় করে ২৫ কোটি রুপি (নিট), সপ্তম দিনে আয় করে ২৫ কোটি রুপি (নিট)। সাত দিনে বিশ্বব্যাপী সিনেমাটির মোট আয় দাঁড়িয়েছে ২৭৬.৫৪ কোটি রুপি (গ্রস)। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৭৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা।        

তবে স্যাকনিল্কের তথ্য অনুসারে, ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার আয় খানিকটা বেশি। মুক্তির ৭ দিনে শুধু ভারতে আয় করেছে ২০৭.২৫ কোটি রুপি (গ্রস)। বিশ্বব্যাপী সিনেমাটির মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৩০৬.২৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪১৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা)।  

ভারতীয় একজন গুপ্তচরের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রণবীর সিং। পাকিস্তানের লিয়ারি শহরের ভেতরে ঢুকে অপারেশন চালান তিনি। সত্য-মিথের সীমানা মিলিয়ে সিনেমাটিতে উঠে এসেছে বাস্তব চরিত্রও। অক্ষয় খান্না অভিনয় করেছেন আলোচিত গ্যাংস্টার রেহমান ডাকাতের চরিত্রে আর সঞ্জয় দত্তকে দেখা গেছে এসপি চৌধুরী আসলামের ভূমিকায়।    

এ সিনেমায় রণবীর সিংয়ের বিপরীতে অভিনয় করেছেন সারা অর্জুন। এ সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয়েছে তার। তাছাড়াও অভিনয় করেছেন—অর্জুন রামপাল, রাজেশ বেদি, আর. মাধবন, মানব গোহিল প্রমুখ। ২৮০ কোটি রুপি বাজেটের এ সিনেমা প্রযোজনা করেছেন আদিত্য ধর, লোকেশ ধর, জ্যোতি দেশপান্ডে।   

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ