ক্যানসার বিষয়ে রাষ্ট্রে সচেতনতা তৈরি করতে হবে
Published: 6th, February 2025 GMT
প্রত্যেক ক্যানসার রোগীই আলাদা। তাঁদের স্বাতন্ত্র্য আছে। এটা বিবেচনায় নিয়ে ক্যানসারের চিকিৎসা দিতে হয়। ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও দেশে ক্যানসার চিকিৎসার সক্ষমতা নিয়ে আরও বেশি প্রচার করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষে গত মঙ্গলবার এসকেএফ অনকোলজির আয়োজনে ‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় এ কথা উঠে আসে। এ আলোচনা সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
নাসিহা তাহসিনের উপস্থাপনায় এ পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের মেডিকেল অনকোলজিস্ট ও চিফ মেডিকেল অফিসার ডা.
অনুষ্ঠানের শুরুতেই উপস্থাপক জানতে চান, এ বছর ক্যানসার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ইউনাইটেড বাই ইউনিক’-এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে।
উত্তরে এ টি এম কামরুল হাসান বলেন, ‘“ইউনাইটেড বাই ইউনিক” কথাটি ছোট হলেও এর অর্থ অনেক ব্যাপক। প্রত্যেক ক্যানসার রোগী ইউনিক। তাঁদের নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য আছে। আরেক দিকে আমাদের লক্ষ্য একটাই; প্রতিটি ক্যানসার নির্মূল করা। আমরা সব রোগীকে স্বতন্ত্র বিবেচনা করে তাঁদের চিকিৎসা দেব। এই বিষয়কে মাথায় রেখেই এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’
ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কাদের বেশি আর ক্যানসারের লক্ষণগুলো কী কী? এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ক্যানসার বিভিন্ন রকমের রয়েছে। নারীদের কিছু ক্যানসার হয়, পুরুষের কিছু আলাদা ক্যানসার আছে। মোটাদাগে বলতে গেলে, কিছু রিস্ক ফ্যাক্টরের কারণে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ধূমপান, বায়ুদূষণ, জন্মনিয়ন্ত্রণের ট্যাবলেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার ওজন বেশি থাকলে ক্যানসার হতে পারে। বয়সের কারণেও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
ক্যানসারের লক্ষণ প্রসঙ্গে সৈয়দ মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘একেকটা ক্যানসারের একেক ধরনের লক্ষণ রয়েছে। তারপরও বড় লক্ষণ যদি বলতে চাই, সেগুলো হচ্ছে, শরীরের কোথাও চাকা বা টিউমারজাতীয় কিছু দেখা দেওয়া, ওজন কমে যাওয়া, অস্বাভাবিকভাবে নাক-মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়া, কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ক্লান্ত বোধ করা ইত্যাদি। ত্বকের ক্যানসারের ক্ষেত্রে নতুন করে চামড়ায় ক্ষত দেখা দেবে, যেটা আগে ছিল না। এসব লক্ষণ দেখলে সাধারণত ধারণা করা হয় যে ক্যানসার হয়েছে।’
স্ক্রিনিং ও ক্যানসার নির্ণয়ের প্রক্রিয়াগুলো সম্পর্কে এ টি এম কামরুল হাসান বলেন, ‘স্ক্রিনিং একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এর দ্বারা কোনো মানুষের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কতটুকু, সেটা যাচাই করা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম স্ক্রিনিং হয়, আমাদের দেশে জরায়ুমুখের ক্যানসারের স্ক্রিনিং অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। ব্রেস্ট ক্যানসারের স্ক্রিনিংও হচ্ছে।’
এ টি এম কামরুল হাসান আরও বলেন, ‘আমাদের মতো দরিদ্র দেশে স্ক্রিনিং বিষয়টি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কোনো রোগীর যদি শুরুর দিকে ক্যানসার শনাক্ত হয়ে যায়, তাহলে সেই ক্যানসার সহজেই নিরাময়যোগ্য, আর্থিক চাপটাও কম পড়ে। আর আমরা পারিবারিক ইতিহাস ও বিভিন্ন লক্ষণ বিচার করে পরীক্ষা করে রোগটা নির্ণয় করে থাকি।’
বিশ্ব ক্যানসার দিবস, বাংলাদেশে ক্যানসারের বর্তমান অবস্থা, ডায়াগনোসিস, রোগ নির্ণয়ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে পরামর্শ দেন ডা. এ টি এম কামরুল হাসান ও ডা. সৈয়দ মো. আরিফুল ইসলামউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বিনা মূল্যে সেবা মিলবে বারডেমসহ ৩ কেন্দ্রে
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। জাতিসংঘ ঘোষিত দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য—‘কর্মস্থলে ডায়াবেটিস সচেতনতা গড়ে তুলুন’।
দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বারডেম, ন্যাশনাল হেলথকেয়ার নেটওয়ার্ক (এনএইচএন) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্সেসের (বিআইএইচএস) বিভিন্ন কেন্দ্রে বিনা মূল্যে ডায়াবেটিস নির্ণয় সেবা দেওয়া হবে।
দিবসটি উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয় রোড শো ও অবস্থান কর্মসূচি। বারডেম জেনারেল হাসপাতাল থেকে টেনিস ক্লাব পর্যন্ত এই রোড শো কর্মসূচি হয়।
এ কর্মসূচিতে অংশ নেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক মির্জা মাহবুবুল হাসান, বারডেম একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান, ডেন্টাল সার্জারি বিভাগের ভিজিটিং প্রফেসর অরূপ রতন চৌধুরী, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সচিব মুহম্মদ আবু তাহের খানসহ সমিতির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ।
এদিন বারডেম হাসপাতালের আউটডোরে সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলে রক্তদান কর্মসূচি। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সারা দেশে পোস্টার, লিফলেট, স্টিকার বিতরণের মাধ্যমে চলছে সচেতনতামূলক প্রচারণা।
শনিবার সকাল ১০টায় বারডেম মিলনায়তনে রোগী ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিইউএইচএসের ইমেরিটাস অধ্যাপক হাজেরা মাহতাব। সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান।