বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিটি এডিটর মির্জা মেহেদী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বাংলা টিভির এম এম বাদশা।

আজ শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় নবনির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করা হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। এবার ভোটার ছিলেন ২৯৮ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৮৬ জন।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু তাহের। ক্র্যাবের সদস্য আহমদ আতিক ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব। নির্বাচনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২৫।

সভাপতি পদে মির্জা মেহেদী তমাল ১২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী যুগান্তরের মাহবুব আলম লাবলু পেয়েছেন ৯৫ ভোট। একই পদে দেশ রূপান্তরের সরোয়ার আলম পেয়েছেন ৪৯ এবং দৈনিক পূর্বকোণের আসাদুজ্জামান বিকু পেয়েছেন ১২ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে এম এম বাদশা ১৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম নুরুজ্জামান পেয়েছেন ১০৪ ভোট।

সহসভাপতি পদে ১৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন উমর ফারুক আলহাদী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিজানুর রহমান (মাসুম মিজান) পেয়েছেন ১২০ ভোট।

যুগ্ম সম্পাদক পদে নিয়াজ আহমেদ লাবু ১৬৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুল লতিফ রানা পেয়েছেন ১০২ ভোট।

সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ১৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সাজ্জাদ মাহমুদ খান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফ বাবলু পেয়েছেন ৯৪ ভোট এবং খন্দকার হানিফ রাজা পেয়েছেন ২৯ ভোট।

কল্যাণ সম্পাদক পদে ১৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মো.

মাহমুদুল হাসান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ কালিমউল্ল্যাহ পেয়েছেন ১১৬ ভোট।

কার্যনির্বাহী সদস্যের তিনটি পদে ২০৩ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন জিয়া খান, ১৮৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন ইমরান রহমান ও ৭৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন মোহাম্মদ জাকারিয়া।

এ ছাড়া এবার দপ্তর সম্পাদক পদে ওয়াসিম সিদ্দিকী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে নিহাল হাসনাইন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রকিবুল ইসলাম মানিক, প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. জসীম উদ্দীন এবং আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে হাবিবুল্লাহ মিজান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর যে জায়গা মহাশূন্যের নিকটতম

সন্ধ্যার আকাশে নানা তারকা আমাদের মুগ্ধ করে। রাজধানী ঢাকার শাহবাগে দাঁড়িয়ে ঠিক সন্ধ্যায় ওপরের মহাকাশের দিকে তাকালে মহাকাশ মনে হয় খুব নিচে নিমে এসেছে। যেকোনো বিস্তৃত দিগন্ত এলাকায় দাঁড়ালেই মনে হয়, এই তো কাছেই মহাকাশ। আসলে দৃষ্টিভ্রম হয় তখন আমাদের। পৃথিবীর সব এলাকা সমান নয়, যে কারণে মহাশূন্যের কাছাকাছি সব এলাকার অবস্থান থাকে না। পাহাড়ি এলাকার উচ্চতা বেশি বলে তারা মহাকাশের কাছাকাছি থাকে, এমনটাও মনে করেন অনেকে। আসলে আমাদের পৃথিবী পূর্ণাঙ্গ গোলক নয়, কমলালেবুর মতো বলে মধ্য দিকটা বা বিষুবরেখার এলাকা মহাকাশের দিকে বেশিই ধাবিত হয়।

আমরা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু চূড়া বলতে এত দিন মাউন্ট এভারেস্টকেই জানি। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, এত উঁচু কাঠামো থেকেও মহাকাশ বেশ দূরে। মহাশূন্যের সবচেয়ে কাছাকাছি এলাকা বলা হয় দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডরের মাউন্ট চিম্বোরাজোকে। উচ্চতা বেশি হলেই যে মহাকাশের কাছে চলে যাবে কেউ, বিষয়টি এমন নয়। বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর বিষুবীয় এলাকা বিশেষ স্ফীতি দেখেন। এই স্ফীতির কারণেই চিম্বোরাজো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক নিচে হলেও মহাবিশ্বের সবচেয়ে কাছের বিন্দু হওয়ার সম্মান অর্জন করেছে। বিজ্ঞানীদের চোখে, ইকুয়েডরের এ পাহাড়টিই মহাবিশ্বের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান করছে!

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে দেখা যায়, পৃথিবী আসলে নিখুঁত গোলক নয়। এর ঘূর্ণনের কারণে বিষুবরেখার চারপাশে এটি সামান্য স্ফীত হয়ে একটি উপগোলক আকার ধারণ করেছে। এর বিষুবীয় ব্যাসার্ধ মেরু ব্যাসার্ধের চেয়ে প্রায় ২১ কিলোমিটার বেশি। অর্থাৎ পৃথিবী তার মাঝখানে ওপর ও নিচের অংশ মানে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর চেয়ে বেশি প্রশস্ত। এই বিষুবীয় স্ফীতি উচ্চতার পরিমাপকে প্রভাবিত করে।

নেপাল ও চীনের মাঝে অবস্থিত মাউন্ট এভারেস্ট সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার উচ্চতার বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়া। কিন্তু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা পরিমাপ করলে পৃথিবীর এই স্ফীত আকারটিকে হিসাবে আনা হয় না। সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তে যখন পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্ব পরিমাপ করা হয়, তখন বিষুবরেখার কাছাকাছি স্থান আসলে আরও দূরে চলে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশান সার্ভিস অনুসারে, ইকুয়েডরের মাউন্ট চিম্বোরাজো পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে পৃষ্ঠের অন্য যেকোনো বিন্দুর চেয়ে বেশি ওপরে উঠেছে। যদিও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা মাত্র ৬ হাজার ২৬৩ মিটার। বিষুবরেখার কাছাকাছি অবস্থানের কারণে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্বের হিসাবে এটি এভারেস্টের চেয়ে প্রায় দুই হাজার মিটার বেশি এগিয়ে থাকে। মাউন্ট চিম্বোরাজোর শীর্ষে দাঁড়ানো যে কেউ ভৌগোলিকভাবে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় দাঁড়ানো ব্যক্তির চেয়ে মহাশূন্যের নিকটবর্তী হবেন।

ইকুয়েডরিয়ান আন্দিজের একটি সুপ্ত স্ট্র্যাটোভলকানো হচ্ছে মাউন্ট চিম্বোরাজো আগ্নেয়গিরি। ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এবং বিষুবরেখা থেকে মাত্র ১ ডিগ্রি দক্ষিণে দাঁড়িয়ে আছে এই পবর্ত। পৃথিবীর বিষুবীয় স্ফীতির কারণে চিম্বোরাজোর চূড়া পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে যেকোনো স্থানের চেয়ে বেশি দূরে অবস্থিত। চিম্বোরাজোর চূড়া পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে প্রায় ৬ হাজার ৩৮৪ দশমিক ৪ কিলোমিটার দূরে, অন্যদিকে এভারেস্টের চূড়া প্রায় ৬ হাজার ৩৮২ দশমিক ৩ কিলোমিটার দূরে। ২ দশমিক ১ কিলোমিটারের এই পার্থক্য নিশ্চিত করছে চিম্বোরাজোর শীর্ষ পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দু।

বৈজ্ঞানিক পরিভাষায়, একটি স্থানকে মহাশূন্যের নিকটতম হিসাবে বর্ণনা করার অর্থ এই নয় যে এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরের শূন্যতার সঙ্গী স্পর্শ করে বা কাছাকাছি যায়। মহাকাশের স্বীকৃত সীমানা কারমান লাইন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার ওপরে অবস্থিত, যা যেকোনো পাহাড়ের চেয়ে অনেক বেশি। মাউন্ট এভারেস্ট ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার। হিসাবের গন্ডগোল এড়াতে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী পৃষ্ঠ বিন্দুকে শনাক্ত করা হয়।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পৃথিবীর যে জায়গা মহাশূন্যের নিকটতম