ফোনে ট্রাম্পের সমালোচনামূলক বার্তা পাওয়ায় ফরাসি বিজ্ঞানীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা
Published: 21st, March 2025 GMT
ফ্রান্সের এক বিজ্ঞানীর মোবাইল ফোনে ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ে সমালোচনামূলক বার্তা পাওয়া যাওয়ায় তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন শহরের কাছে একটি স্থানে বিজ্ঞানীদের একটি সম্মেলনে তাঁর অংশ নেওয়া কথা ছিল। ফ্রান্সের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণামন্ত্রী ফিলিপ ব্যাপটিস্ট গত সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ফিলিপ ব্যাপটিস্ট বলেন, ‘আমি উদ্বেগের সঙ্গে জানতে পেরেছি, এক ফরাসি গবেষক হিউস্টনের কাছাকাছি স্থানে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এরপর বহিষ্কার করা হয়।’ ওই বিজ্ঞানী ফরাসি জাতীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রের (সিএনআরএ) পক্ষ থেকে সেখানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।
ফ্রান্সের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রী বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের গবেষণা নীতি নিয়ে ওই গবেষক তাঁর সহকর্মী ও বন্ধুদের সঙ্গে ব্যক্তিগত মতামত বিনিময় করেছিলেন। তাঁর মোবাইলে সেগুলো পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ ওই বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’
ব্যাপটিস্ট বলেন, ‘মতামতের স্বাধীনতা, বাক্স্বাধীনতা এবং গবেষণার স্বাধীনতা এমন ধরনের মূল্যবোধ আমরা গর্বের সঙ্গে অব্যাহত রাখব। যতক্ষণ পর্যন্ত ফরাসি গবেষকেরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাঁদের অধিকার রক্ষা করব।’
একটি কূটনৈতিক সূত্র ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, ফ্রান্সের ওই গবেষককে ৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বাধা দেওয়া হয়েছিল।
এএফপিকে আরেকটি সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষগুলো ওই ফরাসি গবেষকের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণ্য এবং ষড়যন্ত্রমূলক বার্তার’ অভিযোগ এনেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে (এফবিআই) ওই ফরাসি গবেষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে বলা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু বহিষ্কার করার আগে তাঁর বিরুদ্ধে আনা ‘অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা’ হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা তাৎক্ষণিক কিছু বলতে রাজি হয়নি।
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ কমানোয় ট্রাম্প প্রশাসন ও ইলন মাস্কের খোলামেলা সমালোচনা করে থাকেন ফিলিপ ব্যাপটিস্ট।
এদিকে ওই ফরাসি বিজ্ঞানী ঠিক কোনো সম্মেলনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চেয়েছিলেন, তা তাৎক্ষণিক নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে গত ১০-১৪ মার্চ হিউস্টনের কাছাকাছি জায়গায় ৫৬তম চন্দ্র ও গ্রহবিজ্ঞান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব শ
এছাড়াও পড়ুন:
তেহরানে আটকা ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার তারেমি
চলমান ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের প্রভাবে জটিল হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক যাতায়াত। এরই মধ্যে বড় এক ভোগান্তির শিকার হয়েছেন ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের নতুন স্ট্রাইকার ও ইরানি ফুটবলার মেহদি তারেমি। তিনি তেহরানে আটকা পড়েছেন, ফ্লাইট জটিলতায় ইতালি পৌঁছাতে পারছেন না।
বার্তা সংস্থা এএফপি শনিবার (১৫ জুন) জানিয়েছে, ইরানে অবস্থানরত মেহেদি তারেমি বর্তমান উত্তেজনার কারণে দেশে আটকে পড়েছেন এবং ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সূচনালগ্নে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারছেন না।
৩২ বছর বয়সি এই ইরানি ফরোয়ার্ড গত সপ্তাহে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে তেহরানে ছিলেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দেশের হয়ে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে একটি গোল করেন তিনি। ম্যাচ শেষে ইউরোপে ফেরার কথা থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ এবং বিমান চলাচলে সীমাবদ্ধতার কারণে তেহরান থেকে কোনো ফ্লাইট পাচ্ছেন না তারেমি।
আরো পড়ুন:
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে হোয়াইট হাউস কী ভাবছে?
ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
এএফপি জানায়, তারেমির লস অ্যাঞ্জেলেসে ইন্টার মিলানের ক্লাব বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার অনুপস্থিতি এখন দলের জন্য বড় এক ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত কেবল রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রেই নয়, এর প্রভাব পড়ছে খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও বৈশ্বিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানেও। তারেমির মতো একজন আন্তর্জাতিক তারকা যেখানে আটকে পড়েন, সেখানে বিশ্ববাসীর ভ্রমণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরো বেড়ে যায়।
এই মুহূর্তে ইন্টার মিলান বা ইরানি ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও ক্লাবের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, তারা তারেমির পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছে এবং যত দ্রুত সম্ভব তাকে যুক্তরাষ্ট্রে আনার জন্য কাজ করছে।
এটি শুধু একজন ফুটবলারের আটকে পড়ার গল্প নয়; এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার একটি বাস্তব ও মানবিক সংকটের প্রতিফলন।
ঢাকা/রাসেল