মঙ্গল শোভাযাত্রা বর্জনের ঘোষণা ঢাবির চারুকলা শিক্ষার্থীদের
Published: 27th, March 2025 GMT
চিরায়ত প্রথা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যস্ত থাকে নববর্ষের আয়োজন। বিশেষ করে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন তারা।
এবার সেই আয়োজনের ব্যতিক্রম হয়েছে দাবি করে মঙ্গল শোভাযাত্রা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন অনুষদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাতে চারুকলার ২৬তম ব্যাচের (চারুকলা ৭০) শিক্ষার্থীদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, অনুষদে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, ছাত্র প্রতিনিধি কারো সঙ্গে কোনো পূর্ব আলোচনা ছাড়াই এবারের নববর্ষের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবারের বৈশাখের আয়োজনের সঙ্গে আমাদের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। মূলত বৈশাখ প্রতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট ব্যাচের তত্ত্বাবধানে ও সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের যৌথ প্রয়াসে আয়োজিত হয়ে থাকে।
আয়োজনের সম্পূর্ণ অর্থ অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের শিল্পকর্ম বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। চারুকলার রীতি অনুযায়ী, এ বছর আমাদের ব্যাচের দায়িত্ব হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবারের আয়োজন একেবারেই চারুকলা অনুষদের পূর্বাপর রীতির ব্যতিক্রমীভাবে কোনো রকম শিক্ষার্থীদের সম্মতি ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শুধু শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে করা হচ্ছে, যা আমাদের বিশ্বাস ও ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।
বিবৃতিতে তারা আরো বলেছেন, শোভাযাত্রায় বানানো স্ট্রাকচারের ডিজাইন ও আইডিয়া সম্পূর্ণ শিক্ষকদের দেওয়া, চারুকলার আপামর সাধারণ শিক্ষার্থী এর সঙ্গে কোনোভাবেই সংযুক্ত এবং অবগত না। শহীদ আবু সাঈদের স্ট্রাকচার সম্পর্কেও আমরা অবগত ছিলাম না। কারো ব্যক্তিগত মতাদর্শে আঘাত দেওয়ার পক্ষেও না আমরা। এসব কুরুচিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে নেওয়া হয়নি। চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ছিল না। অতএব এর জন্য অনলাইনে তৈরি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার দায় সমগ্র চারুকলার নয়; বরং দায়িত্বে থাকা নির্দিষ্ট কতিপয় আয়োজক এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ওপর বর্তায়।
তারা বলেন, এ আয়োজনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের চাটুকারিতাপূর্ণ মনোভাবের কারণে শিক্ষকদের আয়োজন করা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা ও শোভাযাত্রা সমর্থন করছি না। স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা মোটাদাগে প্রতি বছর চারুকলা অনুষদে আয়োজিত হয়ে আসা বৈশাখের আয়োজন এটা নয়। বরং স্বজনপ্রীতিদুষ্ট ও দেশের পরিবর্তনকালীন সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এবারের বৈশাখ ১৪৩২ এর আয়োজন ও আয়োজক কমিটিতে রয়েছে। এজন্য আমরা চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, আমাদের এই সিদ্ধান্তকে সবাই সমর্থন ও সম্মান জানাবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র চ র কল র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ঢাকাইয়া দেবদাস’ নিয়ে আসছেন বুবলী-আদর
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা শবনম বুবলী। এর আগে আদর আজাদের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হয়েছেন। ফের জুটি বেঁধে অভিনয় করতে যাচ্ছেন এই যুগল। ‘ঢাকাইয়া দেবদাস’ শিরোনামের সিনেমাটি পরিচালনা করবেন জাহিদ হোসেন। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর একটি ক্লাবে মহরত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হবে সিনেমাটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা।
জাহিদ হোসেন জানান, ‘ঢাকাইয়া দেবদাস’ মূলত প্রেমের গল্পের সিনেমা। তবে এটিকে শুধু প্রেমকাহিনিও বলতে নারাজ। প্রেমের গল্পের পাশাপাশি পুরান ঢাকার কৃষ্টি ও সংস্কৃতিও উঠে আসবে সিনেমাটির গল্পে।
আরো পড়ুন:
শাকিবের ‘রহস্যময়’ বার্তা
বুবলীর যত লুক
পরিচালক জাহিদ হোসেন বলেন, “জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায়ের ভাষা, সমাজ–সংস্কৃতিভিত্তিক চলচ্চিত্র বিরল। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এমন বিষয়ের চলচ্চিত্রের সমাদর যথেষ্ট। সমাজ, ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন হচ্ছে পুরান ঢাকা। রয়েছে হাজার বছরের বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্য ও সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থানের গৌরবোজ্জ্বল চিত্র। এখানে সবাই মিলে সাকরাইন, ঈদ, মহররম, নববর্ষ, ব্যবসা-বাণিজ্যের হালখাতা, পূজাপার্বণ উদ্যাপন করে। আরো অনেক সংস্কৃতি আছে, যা এখনকার প্রজন্মের অনেকেই জানে না। এসব সংস্কৃতিও উঠে আসবে দুটি মানুষের গল্পের মাধ্যমে।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে নির্মাতা বলেন, “ঢাকাবাসীদের নবজাতক আগমনের নানা উৎসব ও কালচার থাকবে সিনেমাটিতে। মেয়েদের নাক-কান ফোঁড়ানো থেকে ছেলেদের সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান, মাজার শরিফ জিয়ারতসহ শিয়াদের হোসনি দালানের বৈচিত্র্যময় অধ্যায়—সব নিয়েই আমাদের চলচ্চিত্র ‘ঢাকাইয়া দেবদাস’।”
ঢাকাবাসীর জন্ম-মৃত্যু, বিয়েসহ পারিবারিক নানা বৈচিত্র্যময় কৃষ্টি-কালচার থাকবে সিনেমাটিতে। নববর্ষের গান, কাসিদা, কাওয়ালি, হিজড়া সম্প্রদায়ের গানসহ শিয়াদের শোকের গান। চলচ্চিত্রের নায়ক–নায়িকাসহ পুরান ঢাকার তরুণ–তরুণীদের প্রেম–ভালোবাসার ছন্দময় সংগীত থাকবে চলচ্চিত্রটিতে থাকবে বলেও জানান এই নির্মাতা।
আদর-বুবলী ছাড়াও এ চলচ্চিত্রে অভিনয় করবেন—তারিক আনাম খান, শহীদুজ্জামান সেলিম, রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ। আগামী জানুয়ারিতে সাকরাইন উৎসবের সময়ে সিনেমাটির শুটিং শুরু হবে। সিনেমাটির প্রযোজনা ও পরিবেশনায় থাকছে এক্সেল ফিল্মস ও রেভুলেশন মুভিজ ইন্টারন্যাশনাল।
ঢাকা/শান্ত