চিরায়ত প্রথা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যস্ত থাকে নববর্ষের আয়োজন। বিশেষ করে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন তারা।

এবার সেই আয়োজনের ব্যতিক্রম হয়েছে দাবি করে মঙ্গল শোভাযাত্রা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন অনুষদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৬ মার্চ) রাতে চারুকলার ২৬তম ব্যাচের (চারুকলা ৭০) শিক্ষার্থীদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, অনুষদে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, ছাত্র প্রতিনিধি কারো সঙ্গে কোনো পূর্ব আলোচনা ছাড়াই এবারের নববর্ষের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবারের বৈশাখের আয়োজনের সঙ্গে আমাদের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। মূলত বৈশাখ প্রতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট ব্যাচের তত্ত্বাবধানে ও সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের যৌথ প্রয়াসে আয়োজিত হয়ে থাকে।

আয়োজনের সম্পূর্ণ অর্থ অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের শিল্পকর্ম বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। চারুকলার রীতি অনুযায়ী, এ বছর আমাদের ব্যাচের দায়িত্ব হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবারের আয়োজন একেবারেই চারুকলা অনুষদের পূর্বাপর রীতির ব্যতিক্রমীভাবে কোনো রকম শিক্ষার্থীদের সম্মতি ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শুধু শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে করা হচ্ছে, যা আমাদের বিশ্বাস ও ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

বিবৃতিতে তারা আরো বলেছেন, শোভাযাত্রায় বানানো স্ট্রাকচারের ডিজাইন ও আইডিয়া সম্পূর্ণ শিক্ষকদের দেওয়া, চারুকলার আপামর সাধারণ শিক্ষার্থী এর সঙ্গে কোনোভাবেই সংযুক্ত এবং অবগত না। শহীদ আবু সাঈদের স্ট্রাকচার সম্পর্কেও আমরা অবগত ছিলাম না। কারো ব্যক্তিগত মতাদর্শে আঘাত দেওয়ার পক্ষেও না আমরা। এসব কুরুচিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে নেওয়া হয়নি। চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ছিল না। অতএব এর জন্য অনলাইনে তৈরি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার দায় সমগ্র চারুকলার নয়; বরং দায়িত্বে থাকা নির্দিষ্ট কতিপয় আয়োজক এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ওপর বর্তায়।

তারা বলেন, এ আয়োজনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের চাটুকারিতাপূর্ণ মনোভাবের কারণে শিক্ষকদের আয়োজন করা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা ও শোভাযাত্রা সমর্থন করছি না। স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা মোটাদাগে প্রতি বছর চারুকলা অনুষদে আয়োজিত হয়ে আসা বৈশাখের আয়োজন এটা নয়। বরং স্বজনপ্রীতিদুষ্ট ও দেশের পরিবর্তনকালীন সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এবারের বৈশাখ ১৪৩২ এর আয়োজন ও আয়োজক কমিটিতে রয়েছে। এজন্য আমরা চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, আমাদের এই সিদ্ধান্তকে সবাই সমর্থন ও সম্মান জানাবে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র চ র কল র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

নববর্ষে ড্রোন শো পরিচালনাকারী চীনা কোম্পানির ভ্যাট মওকুফ

এ বছরের পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষের দিনে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ড্রোন শো হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় শত শত ড্রোন ব্যবহার করে আকাশে নানা ধরনের ড্রোন চিত্র ও রঙিন লেজার রশ্মি তুলে ধরা হয়েছিল। ঢাকার আকাশে এত বড় ড্রোন শো আর দেখা যায়নি।

চীনের সহায়তায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই ড্রোন শোয়ের আয়োজন করে। ড্রোন শো পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সিপিএ থিয়েটার্স ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিকে এই শোয়ের অর্থ পরিশোধের মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট মওকুফ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মূসক বিভাগ। গত ৩০ জুন এক বিশেষ আদেশে এই মওকুফ করা হয়।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ওই ড্রোন শোয়ের জন্য প্রতিষ্ঠান সিপিএ থিয়েটার্স ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিকে ৫ লাখ ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ সরকার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই অর্থ চীন সরকারের কাছে অনুদান হিসেবে পাওয়া গেছে।

এনবিআরের ওই বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে আয়োজিত ড্রোন শোয়ের প্রয়োজনীয় অর্থ চীন সরকারের কাছে অনুদান হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে ড্রোন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেনি এবং তাদের কোনো মুনাফা অর্জিত হয়নি। ওই অর্থ ড্রোন ভাড়া এবং আনা–নেওয়ার জন্য খরচ হয়েছে। তাই পরিশোধিত অর্থের ওপর ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে।

গত পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) বা নববর্ষের এই ড্রোন শোতে ১৯৭১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়কালকে তুলে ধরা হয় বিভিন্ন প্রতিকৃতির মাধ্যমে। উঠে আসে ‘২৪-এর বীর’, পায়রার খাঁচা ভাঙা থিম, ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনা এবং বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বের শুভেচ্ছাবার্তা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেতুর কাজ শেষ না করে ঠিকাদার লাপাত্তা
  • নববর্ষে ড্রোন শো পরিচালনাকারী চীনা কোম্পানির ভ্যাট মওকুফ