পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের পাশে রয়েছে অর্ধশতাধিক হাটবাজার। ঈদের কেনাকাটায় ক্রমান্বয়ে ভিড় বাড়ায় পরিধি বাড়ছে হাটবাজারগুলোর। অপরিকল্পিতভাবে হাটবাজার সম্প্রসারিত হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এ কারণে এবার ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হাইওয়ের পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা রংপুর অঞ্চলের হাটবাজারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দশমাইল, সৈয়দপুর বাইপাস, বীরগঞ্জ, তারাগঞ্জ, পাগলাপীর, মডার্ন মোড়, দমদমা, বৈরাগীগঞ্জ, বিশমাইল, কলাবাগান, জামতলা, খেজমতপুর, ধাপের হাট, শঠিবাড়ী, বড়দরগাহ, পলাশবাড়ী, কোমরপুর, বালুয়া ও গোবিন্দগঞ্জ।
মহাসড়কের পাশে হাটবাজার থাকায় যানজটের পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা। রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জে গত তিন মাসে ১৮ দুর্ঘটনায় পাঁচজনের প্রাণহানিসহ আহত হয়েছেন ১৫ জন।
মহাসড়ক আইন, ২০২১ অনুযায়ী মহাসড়কের ওপর বা নিয়ন্ত্রণরেখার মধ্যে হাটবাজারসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। কিন্তু বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে মহাসড়কের ওপর এবং নিয়ন্ত্রণরেখার মধ্যে সম্প্রসারিত হচ্ছে হাট। মহাসড়ক থেকে ২০০-৩০০ ফুট দূরে বসানোর শর্তে হাট ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করে এসব হাট ক্রমে মহাসড়কের কাছে চলে আসে। আবার কোথাও সেগুলো বসানো হচ্ছে মহাসড়কের সংরক্ষণরেখার মধ্যে। বিশেষ করে ঈদকে ঘিরে নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসায় হাট সম্প্রসারিত হচ্ছে।
শঠিবাড়ীতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের ধার ঘেঁষে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে। দুই পাশে বিভিন্ন পণ্যসহ লোকজনের ভিড়ে মহাসড়কে বাসগুলো স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করাতে পারে না। এতে হাটে আসা লোকজনের সঙ্গে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বাসের যাত্রীরা। এ ভোগান্তির সঙ্গে বাড়ছে ঝুঁকিও।
ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, মহাসড়কের দুই পাশে শঠিবাড়ী হাটের আয়তন প্রায় ১৪ বর্গ একর। এখানে দোকান রয়েছে প্রায় দুই হাজার। সপ্তাহের রবি ও বৃহস্পতিবার হাট বসে। প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি টাকা ডাকে ইজারা হয়।
গত রোববার শঠিবাড়ী হাটে গিয়ে দেখা যায়, ছয় লেন মহাসড়কের কাজ চলায় হাট বসে একটু দূরে। তবে ঈদ ঘিরে হাটের দিন ফের সড়কের ধার ঘেঁষে কেনাবেচা চলে। এতে বিভিন্ন পণ্য ও লোকজনের ভিড়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
বাসচালক আলী হোসেন বলেন, ‘মহাসড়কের ধারে হাট বসলে গাড়ি চালানো কষ্টকর। যেখানে প্রয়োজন, সেখানে ভেড়ানো যায় না। প্রধান সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড় করাতে হয়। মানুষজন একপাশ থেকে অন্যপাশে দৌড়াদৌড়ি করে। বাসের গতি কমালে ঝুঁকি থাকে।’
হাটের দোকানদার রুস্তম আলী মিয়া বলেন, ‘প্রায়ই পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়। তারপর সড়কের আশপাশ থেকে হাট তুলেও দেওয়া হয়। ১০ দিন যেতে না যেতে দেখা যায় আবার বসে।’
ইজারাদার আবু নুর প্রধান বলেন, পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় হাটের দিন কয়েকজন ব্যবসায়ী মহাসড়কে ব্যবসা করতেন। সংস্কারকাজ চলায় সড়কের ধারে আর হাট নেই। ঈদ উপলক্ষে নতুন নতুন অস্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হাট কিছুটা সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ অবস্থা মহাসড়কের ধার ঘেঁষে সব হাটবাজার এলাকায়।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘শঠিবাড়ী হাট মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কেউ অবৈধভাবে সড়কের ধারে ব্যবসা করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হাইওয়ে পুলিশ রংপুর অঞ্চলের সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানান, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্যোগ নিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এ জন্য রংপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কের প্রায় ২০০ কিলোমিটারে দুর্ঘটনাপ্রবণ ছয়টি স্থানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, বড়দরগাহ, তারাগঞ্জ বাজার, দশমাইল, সৈয়দপুর শুঁটকির মোড়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। এ ছাড়া যাত্রী ওঠানামার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করাসহ মূল সড়কে তিন চাকার গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বড়দরগাহ, তারাগঞ্জ ও দশমাইল হাইওয়ে থানা এলাকায় বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক র ধ র সড়ক র প শ দ র ঘটন ব যবস হ ইওয়
এছাড়াও পড়ুন:
কেবল গ্লুটেন নয়, ফ্রুকটানের জন্যও হয় হজমের সমস্যা—জানিয়েছে দ্য ল্যানসেট সাময়িকী
ফ্রুকটান কী
ফ্রুকটান হলো গমে থাকা শর্করাজাতীয় উপাদান। এই উপাদান অন্ত্রে পানির পরিমাণ বাড়ায়। কারণ, ফ্রুকটানের বৈশিষ্ট্যই হলো পানি ধরে রাখা।
মানবদেহে ফ্রুকটান হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় সব এনজাইম না থাকায় তা খাওয়ার পর ভাঙে না। এ অবস্থায় ফ্রুকটান যখন বৃহদান্ত্রে পৌঁছায়, তখন সেখানে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে এই ফ্রুকটানের ফারমেন্টেশন বা গাঁজন হয়। তাই সেখানে বেশি পরিমাণ গ্যাসও তৈরি হয় এই ফ্রুকটানের কারণে।
অবশ্য কেবল গম নয়, পেঁয়াজ, রসুন, তরমুজ, আঙুর, আনার, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, রাই, বার্লি প্রভৃতিতেও থাকে ফ্রুকটান।
যে সমস্যা হয়ফ্রুকটানের এমন সব বৈশিষ্ট্যের কারণে পেটব্যথা ও বদহজম হতে পারে। ঢেকুর উঠতে পারে। অতিরিক্ত গ্যাস হতে পারে। কারও কারও মলত্যাগের ধরনেও আসে পরিবর্তন। তবে সবারই এমন সমস্যা হয় না।
যাঁদের ফ্রুকটানে সংবেদনশীলতা আছে, কেবল তাঁদেরই এমন সমস্যা হয়ে থাকে। ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমে (আইবিএস) আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকের ফ্রুকটানের মতো উপাদানে সংবেদনশীলতা থাকতে পারে।
আরও পড়ুনমন খারাপ? হজম সমস্যা? ঘুম আসে না? ১৫ মে ২০২৫কেবল গ্লুটেনই দায়ী নয়গমের তৈরি খাবার খেলে যাঁদের হজমজনিত কোনো সমস্যা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই ধারণা করা হয় যে সমস্যাগুলো গ্লুটেনের প্রতি সংবেদনশীলতার কারণে হচ্ছে। তখন গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলা হয়। এটা ঠিক যে গ্লুটেনের প্রতি সংবেদনশীলতার জন্যও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে সব ক্ষেত্রে যে গ্লুটেনই দায়ী নয়, তা খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
কেবল গম নয়, পেঁয়াজ, রসুন, তরমুজ, আঙুর, আনার, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, রাই, বার্লি প্রভৃতিতেও থাকে ফ্রুকটান