শুধু পৃষ্ঠা উল্টানো নয়—একটি বই কখনো হয়ে ওঠে ভাবনার খোরাক, কখনো গবেষণার উপকরণ, আবার কখনো নিজেকে নতুনভাবে চিনে নেওয়ার এক দরজা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ঠিক তেমনই এক জায়গা, যেখানে পাঠ্যবইয়ের গণ্ডি পেরিয়ে জ্ঞান, মনন ও সৃজনশীলতার চর্চা প্রতিদিনই ঘটে চলেছে।

১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ধীরে ধীরে আধুনিকায়নের পথে হাঁটছে। বর্তমানে এখানে প্রায় ৩৫ হাজারের বেশি বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পাঠ্যবই, গবেষণাপত্র, জার্নাল, উপন্যাস, জীবনীগ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা। 

প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী এ গ্রন্থাগারে আসেন বলে জানিয়েছেন ব্যক্তিগত সহকারী কম্পিউটার অপারেটর আবদুর রহমান।

আরো পড়ুন:

কুয়েটের ভিসিকে অপসারণে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

খুলনায় ৩ ঘণ্টা বন্ধ ছিল বাস চলাচল

গ্রন্থাগারের দুটি প্রধান অংশ—রেফারেন্স সেকশন ও জেনারেল রিডিং সেকশন। উভয় সেকশনই শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। এছাড়াও রয়েছে ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকা পড়ার আলাদা ব্যবস্থা, কম্পিউটার সুবিধাসহ অনলাইন ক্যাটালগিং সিস্টেম, যা বই খোঁজার প্রক্রিয়াকে সহজ করে তুলেছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইউসুফ আহমেদ বিপ্লব বলেন, “লাইব্রেরির পরিবেশ একদম মনোযোগ ধরে রাখার মতো। আমি নিয়মিত গল্পের বই পড়ি, পাশাপাশি একাডেমিক রেফারেন্স বইও ব্যবহার করি। এখানে সময় কাটানো মানে কেবল পড়াশোনা নয়, বরং চিন্তাকে শাণিত করা।”

মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিসিপ্লিনের ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রুহিন রুমি বলেন, “আমি প্রতিদিন লাইব্রেরি ব্যবহার করি। গবেষণামূলক বই ও ইংরেজি পত্রিকা পড়ে নিজের জ্ঞানভাণ্ডার বাড়াই। লাইব্রেরির পরিবেশ আমার জন্য মানসিক প্রশান্তির জায়গা। তবে স্মার্ট আইডি কার্ড, ই-বুক অ্যাকসেস ও পুরোনো বই রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।”

লাইব্রেরিতে রয়েছে বই ইস্যু ও রিটার্ন ব্যবস্থাপনা, ওয়াইফাই সংযোগ, কম্পিউটার ও প্রিন্টিং সেবা। তবে চাহিদা অনুযায়ী সব বিষয়ের বই মজুদ রাখা সম্ভব হয় না, যা বড় একটি চ্যালেঞ্জ। অনেক শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণা করতে চায়। ফলে তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ করাটা সময়ের দাবি।

সহকারী গ্রন্থাগারিক মো.

সোহেল রানা বলেন, “আমরা শিগগিরই স্মার্ট আইডি কার্ড চালু করতে যাচ্ছি, যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বই ইস্যু করতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে ই-বুক সেবা, বই জমার স্বয়ংক্রিয় মেশিন, অনলাইন জার্নাল ব্যবস্থাপনা ও ডিজিটাল ল্যাব চালুর পরিকল্পনা।”

তিনি বলেন, “থিসিসপত্রের ডিজিটাল সংগ্রহশালা তৈরি, দলগত আলোচনার কক্ষ স্থাপন ও প্রয়োজনীয় বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি—এ উদ্যোগগুলো আমাদের গ্রন্থাগারকে গবেষণাবান্ধব ও আধুনিক করে তুলবে।”

ঢাকা/হাসিব/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ আজ, কোথায়, কখন, কোন দল

ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একযোগে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল।

বিক্ষোভের আগে বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় দলগুলো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।

প্রায় অভিন্ন দাবিতে সাতটি দল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায়, আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে দলগুলোর।

জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই কর্মসূচি পালন করবে। সাতটি দলের কেউ ৫ দফা, কেউ ৬ দফা, কেউ ৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সবার মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। দাবিগুলো হচ্ছে

জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে (কেউ কেউ উচ্চকক্ষে) সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সাড়ে চারটায় জামায়াত

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াত। সমাবেশে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।জোহরের পর ইসলামী আন্দোলন

জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আসরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ কর্মসূচিতে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ছাড়া খেলাফত মজলিস বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এতে দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।

একই সময়ে, একই জায়গায় মিছিল করবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও। বিকেল চারটায় একই জায়গায় বিক্ষোভ করবে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।

আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর মধ্য এলাকায় একযোগে সাতটি দলের বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘিরে নেতা-কর্মীদের সমাগমে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নগরবাসী দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। যদিও আজ ও আগামীকাল সকালে বিসিএস পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এই সাত দল কর্মসূচি বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ