মেট গালায় কেন পেঁয়াজ-রসুন নিষিদ্ধ, কেন স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বসতে পারেন না
Published: 5th, May 2025 GMT
রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে ফ্যাশনের সবচেয়ে বড় রাত ‘মেট গালা’। বরাবরের মতো মে মাসের প্রথম সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টে বসতে চলেছে এর আসর। দুনিয়ার নামীদামি তারকারা হাজির হন এক ছাদের নিচে। তবে মেট গালা যতটা না তারকাদের মেলা, তার চেয়েও বেশি আলোচনায় থাকে এর আলাদা কিছু বিশেষত্বের জন্য। যত বড় তারকাই হোক না কেন, মেট গালার চেয়ারপারসন অ্যানা উইনটোর না চাইলে ওই তারকার জায়গা হবে না মেট গালায়। শুধু আমন্ত্রণ পাওয়া নয়, মঞ্চে প্রবেশ থেকে শুরু করে আফটার পার্টি পর্যন্ত সব জায়গায় বাঁধাধরা নিয়মের মধ্যে থাকতে হয় তারকাদের।
আমন্ত্রণপত্র ছাড়া প্রবেশ নিষেধমেট গালার প্রথম ও একমাত্র শর্ত হলো আমন্ত্রণ। মেট গালার চেয়ারপারসন অ্যানা উইনটোর নিজ হাতে আমন্ত্রণপত্র তৈরি করেন। সেই আমন্ত্রণপত্র আমন্ত্রিত অতিথির বাসায় পৌঁছালেই কেবল মেট গালায় প্রবেশের সুযোগ মেলে। যত বড় তারকাই হোক না কেন, আমন্ত্রণপত্র ছাড়া মেট গালায় প্রবেশ নিষেধ।
তবে মেট গালায় থাকে আসন কেনার ব্যবস্থা। গত বছর থেকে জনপ্রতি ৭৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে বিক্রি হয় একেকটি আসন। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৯১ লাখ টাকা। এ ছাড়া বড় বড় ফ্যাশন হাউস তাদের তারকাদের জন্য আলাদা করে টেবিল কেনে। এ বছর ১০ জনের টেবিল বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ লাখ ডলারে! বেশির ভাগ নামীদামি তারকা ফ্যাশন ব্র্যান্ডের আমন্ত্রণ থেকে যোগ দেন মেট গালায়।
এত কিছুর পরও সবটা থাকে অ্যানা উইনটোরের হাতে। তাঁর যদি মনে হয়, এই গালার জন্য উপযুক্ত নন কেউ, তাহলে যেকোনো মুহূর্তে কেটে দিতে পারেন তারকাদের নাম। সব হিসাব-নিকাশ শেষে মেট গালার সর্বেসর্বা আদতে ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের এডিটর-ইন-চিফ অ্যানা।
আসন বদলানোতেও নিষেধাজ্ঞামেট গালার ভেতরে ঠিক কী হয়, এত বছর পর এসেও তা সবার অজানা। কারণ, সবটাই থাকে লোকচক্ষুর আড়ালে। কিন্তু এটুকু নিশ্চিত, গালায় আমন্ত্রিত সব তারকার জন্য থাকে নির্দিষ্ট চেয়ার। অ্যানা উইনটোর নিজ হাতে ঠিক করেন কোন তারকা কোথায় বসবেন, কার সঙ্গে বসবেন। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য চেয়ার থাকে নির্দিষ্ট। সেই চেয়ার সরিয়ে নিয়ে অন্য কোথাও বসারও নিয়ম নেই। অর্থাৎ অ্যানা উইনটোর যেখানে বলেছেন, সেখানেই বসতে হবে।
স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নয়মজার ব্যাপার হলো, মেট গালায় কখনোই স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে বসতে দেওয়া হয় না। বরং দুজনের জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা থাকে আলাদা প্রান্তে। পুরো আসনবিন্যাস এমনভাবে করা হয়, যাতে তারকারা নিজেদের মধ্যে যেমন আলোচনা করতে পারেন, তেমনই নতুন কারও সঙ্গে মিশে বন্ধনও তৈরি করতে পারেন।
পোশাক বাছাইমেট গালার প্রতিটি আসরের জন্য নির্দিষ্ট থিম থাকে। সেই থিম অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করতে হয় তারকাদের। এ বছরের থিম নির্ধারিত হয়েছে ‘সুপারফাইন: ট্যালোরিং ব্ল্যাক স্টাইল’। মূলত দাসপ্রথা নিষিদ্ধের পর কীভাবে আটলান্টিকপ্রবাসী কৃষ্ণাঙ্গরা নিজেদের পরিচয় বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন, সেটা খেয়াল করেছে মেট। এবারের পোশাকে তাই থাকবে কৃষ্ণাঙ্গদের ইতিহাস, স্টাইল ও পরিচয়। তবে যে ডিজাইনারের পোশাকই বানানো হোক না কেন, অ্যানা উইনটোরের অনুমতি ছাড়া তা পরা একেবারে নিষিদ্ধ। তিনি দেখে সবুজসংকেত দিলেই সেই পোশাক জায়গা পাবে মেট গালায়।
মুঠোফোনে কড়াকড়িস্মার্টফোন ছাড়া একমুহূর্ত কল্পনা করা সম্ভব? না। কিন্তু মেট গালায় প্রবেশ করতে হলে ফোনটা রেখে আসতে হয়। এই আসরে ফোন নিয়ে আছে বেশ কড়াকড়ি। কোনোভাবেই যাতে মেট গালার ভেতরের দৃশ্য বাইরে না যায়, সে নিয়েই অ্যানা উইনটোর নজরদারি ভীষণ কড়া। যে কারণে মঞ্চের ভেতর না থাকে কোনো ক্যামেরা, না থাকে মুঠোফোন। লোকচক্ষুর আড়ালে তারকারা যাতে সময়টা উদ্যাপন করতে পারেন, সে ব্যবস্থাই থাকে মেট গালায়। কয়েক বছর ধরে শিথিল হয়েছে এই ব্যবস্থা। অনেক তারকাকে দেখা যায় মেট গালার ওয়াশরুমে গিয়ে সেলফি তুলতে। তবে মূল মঞ্চে মুঠোফোনের এখনো নিষিদ্ধ।
পেঁয়াজ-রসুন নয়মেট গালাকে ধরা হয় আভিজাত্যের আসর। ফ্যাশনই এর কেন্দ্রবিন্দু। এতে যাতে কোনো কিছুই বাধা না হতে পারে, সে ব্যবস্থা থাকে পুরো ভেন্যুতে। সেটা খাবারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মেট গালায় উপস্থিত তারকাদের জন্য বানানো খাবারে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে, এমন খাবার একেবারে নিষিদ্ধ। এর মধ্যে আছে পেঁয়াজ, রসুন, পাসলি, এমনকি ব্রুসকেত্তার মতো খাবারও।
নিষিদ্ধ ধূমপানযে মঞ্চে খাবারের দুর্গন্ধ পর্যন্ত সহ্য করা হয় না, সেখানে ধূমপান? অসম্ভব! যত বড় চেইন স্মোকার হন না কেন, মেট গালায় ধূমপানের কোনো সুযোগ থাকে না। তবে ধূমপান যতটা না গন্ধের জন্য, তার চেয়ে বেশি সাবধানতার জন্য। দামি পোশাক পরে তারকারা হাজির হন মেট গালায়। অনেকের পোশাকও তৈরি হয় দাহ্য উপাদান দিয়ে। এ ছাড়া মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টে থাকা জিনিসপত্রের যেন ক্ষতি না হয়, সে জন্যও সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সূত্র: ইয়াহু
আরও পড়ুনজন্মের আগে তৈরি হওয়া পোশাক পরে মেট গালা মাতালেন তিনি, সঙ্গে দেখুন আরও তারকার নজরকাড়া উপস্থিতি০২ মে ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আমন ত রণপত র আমন ত র ব যবস থ র জন য প রব শ
এছাড়াও পড়ুন:
একসঙ্গে দেখা দিলেন প্রাক্তন প্রেমিক যুগল দেব-শুভশ্রী
ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় তারকা জুটি শুভশ্রী গাঙ্গুলি ও দেব। তাদের পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়িয়েছিল। দীর্ঘ দিন চুটিয়ে প্রেম করেছেন এই যুগল। কিন্তু শেষটা ভালো হয়নি এই জুটির। দুজনের পথ দুটো আলাদা হয়ে গেছে।
দীর্ঘ বিরতির পর গত বছর একই মঞ্চে দেখা যায় শুভশ্রী-দেবকে। অতিথি হিসেবে শুভশ্রীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন দেব। এ মুহূর্তের একটি ভিডিও ক্লিপ ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, দেব যখন শুভশ্রীকে পুরস্কারটি তুলে দেন, তখন শুভশ্রীও চোখ তুলে দেবের দিকে তাকায়নি।
দেব-শুভশ্রীর প্রেম ভাঙার পর ‘ধূমকেতু’ সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেন দেব-শুভশ্রী। ২০১৫ সালে সিনেমাটির শুটিং করেন তারা। তারপর কেটে গেছে এক দশক। কিন্তু মুক্তির আলো পায়নি সিনেমাটি। অবশেষে সব বাধা কাটিয়ে ১৪ আগস্ট মুক্তি পেতে যাচ্ছে সিনেমাটি। কিন্তু সিনেমাটির প্রচারে কি দেব-শুভশ্রীকে একসঙ্গে দেখা যাবে? তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। সব সংশয় কাটিয়ে একসঙ্গে দেখা দিলেন দেব-শুভশ্রী।
আরো পড়ুন:
আমার ফেলে আসা প্রত্যেকটি সম্পর্কই গুরুত্বপূর্ণ: জয়া
প্রাক্তন প্রেমিক মিঠুনের জন্মদিনে যে বার্তা দিলেন মমতা
দেব তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যায়, শুভশ্রীর পরনে কালো রঙের টপ, জিন্স। শুভশ্রী বলেন, “নমস্কার, আমি শুভশ্রী গাঙ্গুলি।” তারপরই ভেসে ওঠে দেবের মুখ। তাকেও কালো টি শার্ট ও নীল জিন্সে দেখা যায়। তিনি বলেন, “নমস্কার আমি দেব।” ফের ক্যামেরার সামনে আসেন শুভশ্রী। এ নায়িকা বলেন, “১২ বছর পর।” দেব বলেন, “আমরা আবার একসঙ্গে।”
এরপর শুভশ্রী বলেন, “সমস্ত অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে।” দেব বলেন, “আপনাদের কাছের সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ধূমকেতু।” তারপর অভিনেত্রীকে বলতে শোনা যায়, “ধূমকেতু আসছে বড় পর্দায়।” নায়িকার কথার রেশ টেনে অভিনেতা বলেন, “অবশেষে এই ১৪ আগস্ট।” শেষে শুভশ্রী বলেন, “আর অপেক্ষা নয়, দেখা হচ্ছে সকলের সঙ্গে বড় পর্দায়।” দেব বলেন, “আমাদের সিনেমা ধূমকেতু আসছে ১৪ আগস্ট।”
দেব-শুভশ্রীর ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর তাদের ভক্ত-অনুরাগীরা ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন কমেন্ট বক্স। একজন লেখেন, “দেবের আইডিতে শুভশ্রী, এ যেন সত্যিই ধূমকেতু।” আরেকজন লেখেন, “পর্দায় আবার সেরা জুটি ফিরছে।” অন্যজন লেখেন, “প্লিজ একসঙ্গে সিনেমার প্রচারে আসবেন।” একজন লেখেন, “আনন্দটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।” এমন অসংখ্য মন্তব্য শোভা পাচ্ছে কমেন্ট বক্সে।
দেবের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান শুভশ্রী। ২০২০ সালে বিয়ে করেন তারা। এ সংসারে তাদের একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে, অভিনেত্রী রুক্মিণীর সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন দেব।
ঢাকা/শান্ত