রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে ফ্যাশনের সবচেয়ে বড় রাত ‘মেট গালা’। বরাবরের মতো মে মাসের প্রথম সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টে বসতে চলেছে এর আসর। দুনিয়ার নামীদামি তারকারা হাজির হন এক ছাদের নিচে। তবে মেট গালা যতটা না তারকাদের মেলা, তার চেয়েও বেশি আলোচনায় থাকে এর আলাদা কিছু বিশেষত্বের জন্য। যত বড় তারকাই হোক না কেন, মেট গালার চেয়ারপারসন অ্যানা উইনটোর না চাইলে ওই তারকার জায়গা হবে না মেট গালায়। শুধু আমন্ত্রণ পাওয়া নয়, মঞ্চে প্রবেশ থেকে শুরু করে আফটার পার্টি পর্যন্ত সব জায়গায় বাঁধাধরা নিয়মের মধ্যে থাকতে হয় তারকাদের।

আমন্ত্রণপত্র ছাড়া প্রবেশ নিষেধ

মেট গালার প্রথম ও একমাত্র শর্ত হলো আমন্ত্রণ। মেট গালার চেয়ারপারসন অ্যানা উইনটোর নিজ হাতে আমন্ত্রণপত্র তৈরি করেন। সেই আমন্ত্রণপত্র আমন্ত্রিত অতিথির বাসায় পৌঁছালেই কেবল মেট গালায় প্রবেশের সুযোগ মেলে। যত বড় তারকাই হোক না কেন, আমন্ত্রণপত্র ছাড়া মেট গালায় প্রবেশ নিষেধ।

তবে মেট গালায় থাকে আসন কেনার ব্যবস্থা। গত বছর থেকে জনপ্রতি ৭৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে বিক্রি হয় একেকটি আসন। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৯১ লাখ টাকা। এ ছাড়া বড় বড় ফ্যাশন হাউস তাদের তারকাদের জন্য আলাদা করে টেবিল কেনে। এ বছর ১০ জনের টেবিল বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ লাখ ডলারে! বেশির ভাগ নামীদামি তারকা ফ্যাশন ব্র্যান্ডের আমন্ত্রণ থেকে যোগ দেন মেট গালায়।

এত কিছুর পরও সবটা থাকে অ্যানা উইনটোরের হাতে। তাঁর যদি মনে হয়, এই গালার জন্য উপযুক্ত নন কেউ, তাহলে যেকোনো মুহূর্তে কেটে দিতে পারেন তারকাদের নাম। সব হিসাব-নিকাশ শেষে মেট গালার সর্বেসর্বা আদতে ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের এডিটর-ইন-চিফ অ্যানা।

আসন বদলানোতেও নিষেধাজ্ঞা

মেট গালার ভেতরে ঠিক কী হয়, এত বছর পর এসেও তা সবার অজানা। কারণ, সবটাই থাকে লোকচক্ষুর আড়ালে। কিন্তু এটুকু নিশ্চিত, গালায় আমন্ত্রিত সব তারকার জন্য থাকে নির্দিষ্ট চেয়ার। অ্যানা উইনটোর নিজ হাতে ঠিক করেন কোন তারকা কোথায় বসবেন, কার সঙ্গে বসবেন। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য চেয়ার থাকে নির্দিষ্ট। সেই চেয়ার সরিয়ে নিয়ে অন্য কোথাও বসারও নিয়ম নেই। অর্থাৎ অ্যানা উইনটোর যেখানে বলেছেন, সেখানেই বসতে হবে।

স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নয়

মজার ব্যাপার হলো, মেট গালায় কখনোই স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে বসতে দেওয়া হয় না। বরং দুজনের জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা থাকে আলাদা প্রান্তে। পুরো আসনবিন্যাস এমনভাবে করা হয়, যাতে তারকারা নিজেদের মধ্যে যেমন আলোচনা করতে পারেন, তেমনই নতুন কারও সঙ্গে মিশে বন্ধনও তৈরি করতে পারেন।

পোশাক বাছাই

মেট গালার প্রতিটি আসরের জন্য নির্দিষ্ট থিম থাকে। সেই থিম অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করতে হয় তারকাদের। এ বছরের থিম নির্ধারিত হয়েছে ‘সুপারফাইন: ট্যালোরিং ব্ল্যাক স্টাইল’। মূলত দাসপ্রথা নিষিদ্ধের পর কীভাবে আটলান্টিকপ্রবাসী কৃষ্ণাঙ্গরা নিজেদের পরিচয় বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন, সেটা খেয়াল করেছে মেট। এবারের পোশাকে তাই থাকবে কৃষ্ণাঙ্গদের ইতিহাস, স্টাইল ও পরিচয়। তবে যে ডিজাইনারের পোশাকই বানানো হোক না কেন, অ্যানা উইনটোরের অনুমতি ছাড়া তা পরা একেবারে নিষিদ্ধ। তিনি দেখে সবুজসংকেত দিলেই সেই পোশাক জায়গা পাবে মেট গালায়।

মুঠোফোনে কড়াকড়ি

স্মার্টফোন ছাড়া একমুহূর্ত কল্পনা করা সম্ভব? না। কিন্তু মেট গালায় প্রবেশ করতে হলে ফোনটা রেখে আসতে হয়। এই আসরে ফোন নিয়ে আছে বেশ কড়াকড়ি। কোনোভাবেই যাতে মেট গালার ভেতরের দৃশ্য বাইরে না যায়, সে নিয়েই অ্যানা উইনটোর নজরদারি ভীষণ কড়া। যে কারণে মঞ্চের ভেতর না থাকে কোনো ক্যামেরা, না থাকে মুঠোফোন। লোকচক্ষুর আড়ালে তারকারা যাতে সময়টা উদ্‌যাপন করতে পারেন, সে ব্যবস্থাই থাকে মেট গালায়। কয়েক বছর ধরে শিথিল হয়েছে এই ব্যবস্থা। অনেক তারকাকে দেখা যায় মেট গালার ওয়াশরুমে গিয়ে সেলফি তুলতে। তবে মূল মঞ্চে মুঠোফোনের এখনো নিষিদ্ধ।

পেঁয়াজ-রসুন নয়

মেট গালাকে ধরা হয় আভিজাত্যের আসর। ফ্যাশনই এর কেন্দ্রবিন্দু। এতে যাতে কোনো কিছুই বাধা না হতে পারে, সে ব্যবস্থা থাকে পুরো ভেন্যুতে। সেটা খাবারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মেট গালায় উপস্থিত তারকাদের জন্য বানানো খাবারে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে, এমন খাবার একেবারে নিষিদ্ধ। এর মধ্যে আছে পেঁয়াজ, রসুন, পাসলি, এমনকি ব্রুসকেত্তার মতো খাবারও।

নিষিদ্ধ ধূমপান

যে মঞ্চে খাবারের দুর্গন্ধ পর্যন্ত সহ্য করা হয় না, সেখানে ধূমপান? অসম্ভব! যত বড় চেইন স্মোকার হন না কেন, মেট গালায় ধূমপানের কোনো সুযোগ থাকে না। তবে ধূমপান যতটা না গন্ধের জন্য, তার চেয়ে বেশি সাবধানতার জন্য। দামি পোশাক পরে তারকারা হাজির হন মেট গালায়। অনেকের পোশাকও তৈরি হয় দাহ্য উপাদান দিয়ে। এ ছাড়া মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টে থাকা জিনিসপত্রের যেন ক্ষতি না হয়, সে জন্যও সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সূত্র: ইয়াহু

আরও পড়ুনজন্মের আগে তৈরি হওয়া পোশাক পরে মেট গালা মাতালেন তিনি, সঙ্গে দেখুন আরও তারকার নজরকাড়া উপস্থিতি০২ মে ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আমন ত রণপত র আমন ত র ব যবস থ র জন য প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথমে ‘ট্যাক্স’ দিয়ে পরে অন্যান্য ব্যয় করার পরামর্শ এনবিআর চেয়ারম্যানের

নাগরিকদের প্রথমে ট্যাক্স (কর) পরিশোধ করে পরে সামাজিক খাত এবং জনকল্যাণে ব্যয় করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

ট্যাক্স দেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্যাক্স দেওয়ার পর যেটা থাকবে, সেটা দিয়ে এবার চিন্তা করবেন জনকল্যাণে কত ব্যয় করবেন এবং নিজের জন্য কত ব্যয় করবেন এবং কত টাকা সঞ্চয় করবেন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত ‘গুণীজন সম্মাননা ও বর্ষবরণ ১৪৩২’ অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে তাঁকে লক্ষ্মীপুর জেলার কৃতী সন্তান হিসেবে গুণীজন সংবর্ধনা দেয় ‘লক্ষ্মীপুর জেলা যুব কল্যাণ সমিতি, ঢাকা।’

মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের দেশের জনগণ অনেকে মনে করেন সামাজিক খাতে ব্যয়ের পর, জাকাত-সদকা দেওয়ার পর কর দিতে হয় না।’

রাজস্ব আহরণের ভঙ্গুর ব্যবস্থা তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এদিক থেকে অনেক পেছনে আছি। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা এখনো গরিব জনগণ থেকে কর নিই, আমাদের মোট করের দুই–তৃতীয়াংশ এখনো গরিবদের থেকে আদায় হয় ‘পরোক্ষ করের’ মাধ্যমে। আয়কর থেকে আমরা মাত্র এক–তৃতীয়াংশ আদায় করতে পারি। এই জায়গাগুলোতে আমাদের প্রচুর কাজ করার সুযোগ আছে।’

সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করে আমরা একটা উন্নত জাতি প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের যাতে ঋণ করতে না হয়, আমরা যাতে নিজের টাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি চালাতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি।’

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শাহীনুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মামুন আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান (বিটিএ) মো. শাহীন আহমেদ, লক্ষ্মীপুর জেলা সমিতি, ঢাকার সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া, গ্রেট ওয়াল সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সামছুল হুদা, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরীকে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ড্রেসিংরুমে সেরা ফিল্ডারকে ‘মেডেল’ দিয়ে পুরস্কৃত
  • কচি ঘাস খেয়ে ৩ গাভির মৃত্যু, নমুনা সংগ্রহ
  • স্বস্তিকার সঙ্গে প্রেম নিয়ে ১৬ বছর পর মুখ খুললেন পরমব্রত
  • স্বস্তিকার সঙ্গে প্রেম নিয়ে ১৬ বছর মুখ খুললেন পরমব্রত
  • ট্রাম্পকে চোখ নামাতে বাধ্য করার সহজ পথ
  • মেসিকে নিয়ে যে ‘সমস্যা’ ছিল, আছে, থাকবেও
  • প্রথমে ‘ট্যাক্স’ দিয়ে পরে অন্যান্য ব্যয় করার পরামর্শ এনবিআর চেয়ারম্যানের
  • প্রথমবার ভিডিওতে একসঙ্গে বেলাল খান ও কর্নিয়া 
  • জাকসু নির্বাচনের আগে বিচার চান শিক্ষার্থীরা