মানব শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্যালসিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা খাদ্য উপাদান। হাড়, মাংসপেশি, দাঁত, স্নায়ুতন্ত্রসহ বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
তবে বয়সভেদে ক্যালসিয়ামের চাহিদা ভিন্ন। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সের সময় ক্যালসিয়ামের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। এ সময় দৈহিক বৃদ্ধি এবং হাড় গঠনের জন্য ক্যালসিয়ামের জোগান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভকালীন এবং স্তন দানকারী মায়েদের ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনও বেশি। ৫১ থেকে ৭০ বছর বয়সের নারীর ক্যালসিয়ামের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এ সময় নারীর ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন কমে যায়। এই হরমোনটি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে এবং হাড় গঠনে অংশ নেয়। এর অভাবে হাড় ক্ষয়ের ইঞ্জিন সক্রিয় হয়ে ওঠে। নারীর রজঃনিবৃত্তি বা মেনোপজ হলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ফলস্বরূপ হাড় ক্ষয় হতে থাকে। সেজন্য এ বয়সে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য খাদ্যের পাশাপাশি প্রয়োজন রয়েছে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ওষুধ হিসেবে সেবন করা। এ সময়গুলোতে প্রতিদিন ১৩০০ মিলিগ্রামের মতো ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। যে সব শিশু গুঁড়া দুধের ওপর নির্ভরশীল তাদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কেননা গুঁড়া দুধে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম সহজে হজম হয় না। মায়ের বুকের দুধের ক্যালসিয়াম শিশুর শরীরে সহজে হজম হয়। যাদের দুধে এলার্জি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
ধূমপানের ফলে ক্যালসিয়াম শোষণ বাধাপ্রাপ্ত হয়। হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। অতিরিক্ত কফি, কোক ও চা ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত অ্যালকোহল একই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। ভিটামিন-ডি ক্যালসিয়াম শোষণের একটি নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন-ডি এর প্রধান উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। সুতরাং যারা রোদ থেকে দূরে অবস্থান করে তাদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হতে পারে। হাড় থেকে ক্যালসিয়াম চলে আসে রক্তে এবং কিডনির মাধ্যমে তা বেরিয়ে যায় শরীর থেকে। সোডিয়াম তথা খাবার লবণ কিডনি পথে ক্যালসিয়াম বের করতে সাহায্য করে। সেজন্য লবণ গ্রহণ কমালে কিডনি ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে পারে। যে সমস্ত খাদ্যে অতিরিক্ত লবণ রয়েছে সেগুলো পরিহার করতে হবে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য রক্ষার জন্য।v
[মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট]
সিএমএইচ, ঢাকা]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ক য লস য র আশঙ ক র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ওমানে ছাদ থেকে পড়ে বাংলাদেশির মৃত্যু
ওমানে নির্মাণ কাজ করার সময় ছাদ থেকে পড়ে মারা জিয়াউদ্দিন মোল্লা (৩৮) নামের এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ১০টার দিকে দেশটির সরকারি নিজওয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
জিয়াউদ্দিন মোল্লা হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার টেকেরঘাট গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে। প্রায় তিন বছর আগে ওমানে গিয়ে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।
নিহতের ভাতিজা শিবলু মিয়া জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর কাজ করার সময় দোতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে মারা যান।
চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘‘জিয়া উদ্দিনের মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। লাশ দেশে ফিরিয়ে আনাসহ পরিবারের প্রয়োজনে আমরা পাশে থাকব।’’
ঢাকা/মামুন/রাজীব