ধান চাষে আর্সেনিক দূষণ ও পানির অপচয় রোধে কার্যকর সমাধান উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।

‘তিনদিন ভেজানো, চারদিন শুকনো’ (৩এফ৪ডি) পদ্ধতিতে পরিবর্তিত পর্যায়ক্রমিক সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করে চালের অজৈব আর্সেনিকের মাত্রা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। একই সঙ্গে সেচের পানির ব্যবহারও ৮০ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয়ী করা যাবে ফলন অক্ষুণ্ন রেখেই।

এ দুটি বড় চ্যালেঞ্জের গবেষণাটি পরিচালনা করেন বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.

মো. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি গবেষক দল।

জাইকার সহায়তায় ‘নিরাপদ ও পুষ্টিকর ধান উৎপাদনের জন্য প্রজনন ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩ বছর ধরে ধারাবাহিক মাঠ গবেষণার মাধ্যমে তারা এ ফলাফল তুলে ধরেন।

গবেষকরা জানান, বাংলাদেশের অনেক এলাকার ভূগর্ভস্থ পানি আর্সেনিক দ্বারা দূষিত। অবিরাম জলাবদ্ধতার সময় ধান চাষ করলে চালের মধ্যে এই বিষাক্ত উপাদানের মাত্রা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যেতে পারে। অবিরাম জলাবদ্ধতার মাধ্যমে ধান চাষ করলে মাটিতে রিডক্স অবস্থা নিম্ন হয়, যা গাছের মাধ্যমে চালের দানায় আর্সেনিক শোষণ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ৩এফ৪ডি পদ্ধতিতে চারদিন নিষ্কাশনের সময় মাটির আর্দ্রতা ৫ শতাংশ কমে যায় ও রিডক্স পোটেনশিয়াল বেড়ে ১৫০–৫০০ মিলিভোল্ট পর্যন্ত পৌঁছে। এতে গঠিত হয় একটি অক্সিডেটিভ পরিবেশ। এর ফলে গাছ তুলনামূলকভাবে কম আর্সেনিক শোষণ করে।

প্রচলিত অবিরাম জলাবদ্ধতার তুলনায় ৩এফ৪ডি পদ্ধতিতে সেচের মাধ্যমে পানির ব্যবহার ৬৫ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব হয়েছে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এটি ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনে, যা পানি সংকটে থাকা অঞ্চলের জন্য একটি টেকসই সমাধান হতে পারে বলে জানান অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম।

অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, চালে আর্সেনিক কমলেও ধানের ফলন অপরিবর্তিত থেকেছে। অর্থাৎ কৃষকের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে নিরাপদ চাল উৎপাদন করা যাবে, যা জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।”

গবেষণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার (৬ মে) বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান মাঠ গবেষণাগারে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে আয়োজন করা হয় একটি মাঠ দিবস।

এতে প্রধান গবেষক মো. রফিকুল ইসলাম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক সালমা লাইজু, বাকৃবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঁঞা প্রমুখ।

গবেষণা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু জাফর মো. মোসলেহ উদ্দিন, অধ্যাপক মো. এনামুল হক, উপ-প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন সুমন, বিভাগীয় প্রধান মো. গোলাম কিবরিয়া, জাইকার প্রতিনিধি রিউচি কাটসুকি ও পিএইচডি ফেলো মো. সোহেল রানা।

এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. সালমা লাইজু বলেন, “নতুন প্রযুক্তি মাঠে জনপ্রিয় করতে হলে তা কৃষকের জন্য সহজবোধ্য ও ঝামেলাবিহীন হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত অনেক প্রযুক্তিই কৃষকের কাছে পৌঁছায় না। এজন্য গবেষণা ও সম্প্রসারণকে একসঙ্গে এগোতে হবে।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর স ন ক

এছাড়াও পড়ুন:

খুর মার্কা নিয়ে ভোটযুদ্ধে ব্যাচেলর পয়েন্টের শিমুল, পোস্টার ভাইরাল

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের মুঠো মুঠো ভালোবাসা কুড়িয়েছেন শিমুল শর্মা। এবার তার ভক্তদের ভিন্নধর্মী এক ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল। তাতে ভিন্ন ভূমিকায় দেখা দিলেন শিমুল!

মূলত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি নির্বাচনী পোস্টার। যাতে লেখা, “তরুণ সমাজসেবক, ন্যায়পরায়ণ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। পোছ মাস্টার কাবিলার ছোট ভাই শিমুল শর্মাকে দিন আপনার মূল্যবান ভোট!”

ভোটের মার্কা? ব্যাচেলর ঘরানার স্টাইলে—‘খুর’! পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর অন্তরা (ফারিয়া শাহরিন), লামিয়া (লামিমা লাম), আর ইভা (পারসা ইভানা)-এর মুখ। যেন শিমুলের নির্বাচনী প্রচারণায় তার প্রেমিকারা একত্র!

আরো পড়ুন:

থাইল্যান্ডে মা হলেন স্বাগতা

শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষ, মার্কশিট প্রকাশ করে প্রমাণ দিলেন অভিনেত্রী

তবে ব্যাপারটা যে বাস্তব নয়, তা শিমুল নিজেই জানিয়েছেন। ভক্তরা ভালোবাসে তৈরি করেছেন পোস্টারটি। তাতে কাল্পনিক এক ভোটযুদ্ধের কথা বলেছেন তারা। পুরো বিষয়টি এতটাই জীবন্ত ও মজার পোস্টারটি শিমুল নিজেও আর লুকিয়ে রাখতে পারেননি, শেয়ার করেছেন নিজের ফেসবুক পেজে। ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “কারে কি কমু! তারপরেও আছি।”

এটা হয়তো শুধুই এক ভক্তর তৈরি মজার পোস্টার। কিন্তু এতে স্পষ্ট— শিমুলের জনপ্রিয়তা আজও তুঙ্গে। দর্শকদের মনে এমনভাবে জায়গা করে নেওয়া সব শিল্পীর ভাগ্যে হয় না। রাজনীতিতে না হোক, অন্তত ‘পোছ রাজনীতি’-তে শিমুল আপাতত এক নম্বরে!

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ