দল ছেড়ে ইসলামী আন্দোলনে মোস্তাফিজুর, যা বলছেন বিএনপি নেতারা
Published: 6th, May 2025 GMT
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে বরিশালের চরমোনাই ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিমের বাড়িতে গিয়ে তার দলে যোগ দেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কলাপাড়া উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জেডএম কাওসার।
অধ্যাপক মো.
কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মো. ফারুক বলেন, “তার (অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান) বরাবরই স্বার্থের প্রতি দুর্বলতা ছিল। শুরু থেকেই তার কথা ছিল, দলে পোস্ট পজিশন পেলে থাকবেন, না পেলে চলে যাবেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বলেছিলেন আমি সবার ভোটে নির্বাচিত হয়েছি, দল আমার কাছে কিছু না। সব সময় স্বার্থই তার কাছে বড় ছিল।”
আরো পড়ুন:
শারীরিক ও মানসিকভাবে খালেদা জিয়া অনেকটাই সুস্থ: জাহিদ হোসেন
পঞ্চগড়ের সাবেক ৩ এমপি ও ডিসি-এসপির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
তিনি আরো বলেন, “গত ২৮ মার্চ কলাপাড়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সভায় তিনি বলেছিলেন, বিএনপির সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। তারপরও তিনি নিজ স্বার্থের জন্য দল ত্যাগ করেছেন। আমি মনে করি, দল থেকে তার চলে যাওয়ায় মাঠ পর্যায়ে কোনো প্রভাব ফেলবে না।”
কলাপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জুয়েল সিকদার বলেন, “অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান যখন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তখনই শুধু ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন। এছাড়া, তিনি কখনো ধীনের শীষ প্রতীকে ভোট দেননি। বিএনপির জন্য তিনি অনেক কিছুই পেয়েছেন, কিন্তু তিনি সব সময় নিজের স্বার্থই দেখেছেন। তার চলে যাওয়ায় দলের কোনো সমস্য হবে না ইনশাআল্লাহ।”
কলাপাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী রুহুল আমিন বলেন, “মোস্তাফিজুর রহমান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এটা একেবারেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তিনি কোনো সময়ই দলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেননি। তার কাছে তার স্বার্থই ছিল সবচেয়ে বড়। তিনি চলে যাওয়ায় আমাদের দলের মধ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।”
দল ছাড়া প্রসঙ্গ অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমি বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় ছিলাম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সঠিক রাজনীতি করছে। জীবনের শেষ বয়সে এসে মানুষের জন্য কিছু করে যেতে পারি এজন্যই আমি ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। প্রার্থী হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের কাছে আমি নোমিনেশন (মনোনয়ন) চাইব। দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে তাহলে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে নির্বাচন করব।”
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কলাপাড়া উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জেড এম কাওসার বলেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সদস্য ফরম পূরণ করে এবং দলের আমির মুফতি সৈয়দ ফজলুল করিমের হাতে হাত রেখে তিনি (মো. মোস্তাফিজুর রহমান) যোগদান করেছেন। ইসলামের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং ইসলামের পক্ষে কাজ করার লক্ষ্যে তার এ সিদ্ধান্ত।”
অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৮১ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি তরুণদের নিয়ে কলাপাড়া বিএনপিকে উজ্জীবিত করেন এবং উপজেলায় দলটির শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেন। ১৯৮৮ সালে বিএনপির সমর্থন নিয়ে তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
১৯৯০ সালে অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হয়ে অংশগ্রহণ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির টিকিট না পেয়ে ঘড়ি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে পরাজিত হন। এসময় বিএনপির হাই কমান্ড তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।
২০০৮ সালে ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীন আমলে নির্বাচনকালীন সময়ে তিনি ফের বিএনপিতে ফিরে আসেন। তবে দলে তার পূর্বের অবস্থান আর ফিরে পাননি। ২০০৮ সালে বিএনপির সমর্থন নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান। নির্বাচনে জিতে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে দীর্ঘদিন তিনি বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সর্বশেষ ২০২৪ সাল থেকে উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির ২ নম্বর সদস্যের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ম স ত ফ জ র রহম ন ব এনপ র স ব এনপ ত কল প ড় কর ছ ন ইসল ম সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে সবজি ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা এলাকার একটি বাসা থেকে জায়নাল (২৫) নামে এক সবজি ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২১ জুন) সকাল ৯টার দিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
মারা যাওয়া জায়নাল কক্সবাজার শহরের কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি বাজারঘাট এলাকার ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো আজ সকালে জায়নাল কর্মচারীদের বাজারে পাঠান। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয়রা ঘরের ফ্যানের সঙ্গে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আরো পড়ুন:
সিলেট সীমান্তের ওপারে ঝুলে থাকা বাংলাদেশির লাশ ২৫ ঘণ্টা পর হস্তান্তর
ঝরনা দেখতে গিয়ে নিখোঁজ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান বলেন, “এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ