হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর বিচারককে ৩ বার ‘ধন্যবাদ’ বললেন তাপস
Published: 7th, May 2025 GMT
রাজধানীর গুলশানে ভ্যানচালক জব্বার আলী হাওলাদারকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গান বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপসকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখান। তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারকের উদ্দেশে তিনবার ‘ধন্যবাদ’ বলেন। পরে লিফটে করে নিচে নামার জন্য জোরাজুরি করেন তিনি।
এদিন সকাল পৌনে ১১টায় আসামি তাপসকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট ও পেছনে হাতকড়া পরিয়ে হাজতখানা থেকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় তাকে হাস্যোজ্বল দেখা যায়। তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দোতলার নেওয়া হয়। তখন তার হেলমেট খুলে কাঠগড়ায় তোলা হয়।
এরপর ১০টা ৫২ মিনিটে গুলশান থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আব্দুস সালাম বলেন, ‘তদন্তে তার নাম এসেছে। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর প্রার্থনা করছি। গ্রেপ্তার দেখানো হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।’
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘গান বাংলার তাপস ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী ছিলেন। তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।’
শুনানি শেষে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে আদালত তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখান। তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তাপস বিরক্তির সুরে তিনবার বলেন, ‘ধন্যবাদ’। এরপর হেলমেট পরিয়ে তাকে আদালত থেকে বারান্দায় বের করা হয়।
তখন তিনি লিফটে যাওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যের সঙ্গে জোরাজুরি শুরু করেন। তখন পুলিশ সদস্যরা বলেন, এখান থেকে লিফট যায় না। এরপর তাকে হাঁটিয়ে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। এ সময় তিনি নিশ্চুপ ছিলেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলশানের শাহজাদপুরে কনফিডেন্স টাওয়ারের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে জব্বার আলী হাওলাদার গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় এ মামলা করেন ভ্যানচালক জব্বার আলী হাওলাদার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধমুক্ত সবুজ বিশ্ব গড়ার বার্তা
এভারেস্টজয়ী প্রয়াত বন্ধু সজল খালেদ স্মরণে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প অভিযান করেছেন লেখক ও গবেষক গাজী মুনছুর আজিজ। ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই সবুজ বিশ্ব গড়তে চাই’ স্লোগান নিয়ে তিনি এ অভিযান সম্পন্ন করেন। ১৩ জুন বিকেল পৌনে ৩টায় তিনি বেস ক্যাম্প পৌঁছান। এর আগে ৬ জুন সকালে নেপালের লুকলা থেকে বেস ক্যাম্পের উদ্দেশে ট্র্যাকিং শুরু করেন। অষ্টম দিনের মাথায় তিনি পৌঁছান পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে (৫,৩৬৪ মিটার)।
গাজী মুনছুর আজিজ বলেন, ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে যারা এ অভিযানে সম্পৃক্ত হয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বিশেষ ধন্যবাদ বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশে পর্বতারোহণের স্বপ্নদ্রষ্টা ইনাম আল হকের প্রতি এবং বিএমটিসি ক্লাবের সবার প্রতি। এ ছাড়া ধন্যবাদ অল্টিচিউড হান্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌফিক আহমেদ তমালের প্রতি। তাঁর সার্বিক সহযোগিতায় এ অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করি।
গাজী মুনছুর আজিজ বলেন, আমরা একটি যুদ্ধমুক্ত পৃথিবী দেখতে চাই, যেখানে বোমার আঘাতে একটি শিশুও মারা যাবে না। এ ছাড়া একটি দূষণমুক্ত বিশ্ব গড়তে চাই, যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাঁচবে নির্মল আনন্দে। এসব বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে বেছে নিয়েছি।
আজিজ আরও বলেন, ২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্ট জয় করে নামার পথে সজল মারা যান। এখন বাংলাদেশের অনেকেই এভারেস্ট জয় করেছেন, সবাই তাদের গল্প শুনছেন। আমি মনে করি তাদের সঙ্গে সজলের গল্পটাও মানুষ জানুক। সেজন্যই তাঁকে স্মরণ করে আমার এ অভিযান। এ ছাড়া ২০০৭ সালে ইনাম আল হকের পরিকল্পনায় এবং সজলের উদ্যোগে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে দেশে প্রথম বারের মতো বাংলা ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০৯ ও ২০১০ সালেও সজলের উদ্যোগে ম্যারাথন হয়। সজল মারা যাওয়ার পর আর বাংলা ম্যারাথন হয়নি। এরপর সজলকে স্মরণ করে ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর মেরিন ড্রাইভে আমি একক ম্যারাথন করে আসছি। এখন বাংলাদেশে প্রচুর ম্যারাথন প্রতিযোগিতা হচ্ছে। আমি মনে করি ম্যারাথনের শুরুর গল্পটাও মানুষ জানুক।
সজল চেয়েছেন ম্যারাথনের মাধ্যমে কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের পর্যটনকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করে তোলা এবং একই সঙ্গে পরিবেশ
সচেতনতার বার্তা দেওয়া।
লেখক ও গবেষক গাজী মুনছুর আজিজ বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাব এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য। ভ্রমণ বিষয়ে তাঁর বেশ ক’টি বই বের হয়েছে। গত একুশে বইমেলায় বের হয়েছে তাঁর ভ্রমণবিষয়ক বই ‘পাখির খোঁজে বাংলাজুড়ে’। বিভিন্ন ম্যারাথন প্রতিযোগিতা, সাইকেল অভিযানসহ নিয়মিত ভ্রমণ ও অভিযানে বের হন। এ ছাড়া পরিবেশ সচেতনতায় গাছ লাগানোসহ নিয়মিত বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকেন। u