জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের চূড়ান্ত শুনানি ১৩ মে
Published: 7th, May 2025 GMT
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের চূড়ান্ত শুনানির দিন আগামী ১৩ মে ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে আপিলের চূড়ান্ত শুনানির জন্য আবেদন করে আইনজীবী শিশির মনির আদালতকে বলেন, আগেও এর শুনানি হয়েছে, কিন্তু শেষ হচ্ছে না। জামায়াতের নিবন্ধন না থাকা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।
এ সময় আপিলটি কোন সালে করা হয়েছে তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি। পরে আইনজীবী শিশির মনির আদালতকে জানান, ২০১৩ সালে আপিলটি করা হয়। একপর্যায়ে আগামী মঙ্গলবার এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে দেয়া নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দলটির করা আপিল ও লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) গত বছরের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আপিলকারীর পক্ষে সেদিন কোনো আইনজীবী না থাকায় আপিল বিভাগ ওই আদেশ (ডিসমিসড ফর ডিফল্ট) দেন।
পরে দেরি মার্জনা করে আপিল ও লিভ টু আপিল পুনরুজ্জীবিত চেয়ে দলটির পক্ষ থেকে পৃথক আবেদন করা হয়। এরপর এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ অক্টোবর আপিল বিভাগ আবেদন মঞ্জুর (রিস্টোর) করে আদেশ দেন। পরবর্তীতে জামায়াতের আপিল ও লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ ডিসেম্বর এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। এরপর আরও কয়েকদিন বিষয়টির শুনানি হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম আপ ল ব ভ গ ন আপ ল ব ভ গ আপ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়র ঘোষণার দাবিতে ফয়জুল করীমের করা মামলা খারিজ
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের দায়ের করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার এই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল।
নির্ধারিত দিনে আদালতে শুনানিতে অংশ নেন ফয়জুল করীমের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে বরিশাল সিটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিনিয়র সহকারী জজ মো. হাসিবুল হাসান আবেদনটি খারিজের ওই আদেশ দেন।
ফয়জুল করীমের পক্ষে মামলায় অংশ নেওয়া আইনজীবী শেখ নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে যাব।’
নির্বাচনের প্রায় ২২ মাস পর সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের পক্ষে গত ১৭ এপ্রিল আদালতে আবেদনটি দাখিল করেছিলেন তাঁর আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির। সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক আবেদনটি পরবর্তী আদেশের জন্য ২৪ এপ্রিল ও পরবর্তী সময়ে ৫ মে তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। আজ দুপুরে এই আবেদনের শুনানির পর বিচারক আদেশ দেন।
মামলার শুনানি শেষে আদালত বলেন, ঘটনাটি দীর্ঘদিন আগের হওয়ায় মামলাটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিবেচিত হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রক্রিয়াগত বিষয় উল্লেখ করে মামলার আবেদনটি খারিজ করা হলো।
ফয়জুল করীমের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী শেখ নাসির উদ্দিন, জি এম নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফ মিয়া ও জামাল উদ্দিন।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, ২০২৩ সালের ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই নির্বাচনে ১ নম্বর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় নগরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলা চালান আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকেরা। এতে তিনি রক্তাক্ত জখম হয়েছিলেন। একই সঙ্গে নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের জাগুয়া কলেজ কেন্দ্র থেকে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড চালিয়ে দরখাস্তকারীকে (সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম) প্রাপ্ত ভোটের চেয়ে কম দেখিয়ে (৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট) পরাজিত দেখানো হয় এবং ১ নম্বর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট দেখিয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল।
আবেদনে নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার আদেশ প্রদানের জন্য আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে মামলার ব্যয়ভার সুদসহ প্রতিপক্ষের প্রতিকূলে ডিক্রি দেওয়ারও আবেদন করা হয়।
গত বছরের ১৯ আগস্ট পৃথক প্রজ্ঞাপনে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়র, ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সারা দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ও বেশির ভাগ কাউন্সিলর। এরপর গত বছরের ১৯ আগস্ট তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব নেন। বর্তমানে প্রশাসকের এই দায়িত্ব পালন করছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার।
ফয়জুল করীমের পক্ষে মামলায় অংশ নেওয়া আইনজীবী শেখ নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এই আদেশে সংক্ষুব্ধ। কারণ, মামলা করতে দেরি হয়েছে। এ জন্য আবেদন খারিজ করাটাকে আমরা সমীচীন মনে করছি না। এটা বাস্তবতার নিরিখে কনসিডার করা যেত। আইন তো মানুষের জন্য। আমরা সুবিচার পাইনি।’