নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস, স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে পিএসসি এবং সংশ্লিষ্ট নিয়োগ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলনে তারা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। 

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক, বাংলাদেশ রেলওয়ে, খাদ্য অধিদপ্তরসহ ১৬তম গ্রেড পর্যন্ত সব নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে মূল প্রশ্নের মিল যাচাই করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান; অতীতে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় পরিকল্পিতভাবে প্রশ্নফাঁস গোপন রেখে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা তদন্ত করে প্রকাশের আহ্বান; প্রশ্ন ফাঁস চক্রে জড়িত ব্যক্তি, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি।

আরো পড়ুন:

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত 

প্রশ্ন ফাঁসের শাস্তি ও পিএসসি সংস্কারের দাবিতে শাহবাগ ব্লকেড

বাকি দাবিগুলো হলো- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কঠোর তদন্ত ও নজরদারির আহ্বান; নিয়োগ পরীক্ষায় দলীয়করণ, অনিয়ম, ও সংবিধানবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করার আহ্বান; পিএসসি, ব্যাংক ও মন্ত্রণালয়সহ সরকারি নিয়োগ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি; বিভিন্ন নিয়োগের (যেমন: BSCIC, CGDF, BIBM, খাদ্য অধিদপ্তর, রেলওয়ে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর) উচ্চপর্যায়ে তদন্ত দাবি; বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে কেন্দ্রীয় পুলিশ ভেরিফিকেশন কমিটির হয়রানি বন্ধের দাবি; শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিলের প্রস্তাব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হাসান বলেন, “নিয়োগে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি। বারবার দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে পিএসসির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা চাই, এই প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক হোক। পিএসসি সংস্কার মানে শুধু নিয়ম পরিবর্তন নয়, এটি একটি মানসিকতার পরিবর্তন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই দরকার স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া।”

পিএসসি সংস্কার আন্দোলনের জবি শাখার মুখপাত্র সাজ্জাদ হুসাইন মুন্না বলেন, “পিএসসি সংস্কার ও নিয়োগ পরীক্ষার স্বচ্ছতা আনয়ন জুলাইয়ের অঙ্গীকার। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আমাদের শতভাগ মেধার বহিঃপ্রকাশ করতে চাই। তারুণ্যের মেধাভিত্তিক  বাংলাদেশ গড়তে হলে সংস্কারের বিকল্প নেই।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসস গ পর ক ষ তদন ত প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাক্সিম গোর্কির আবাসস্থলে

মস্কোর আকাশে আজ মেঘ ঘনিয়েছে। সকাল থেকেই টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। এমনিতে গরমকাল, তবে বৃষ্টি পড়ার কারণে ঠান্ডা জাঁকিয়ে বসছে। মস্কোতে আমার দিনগুলো উড়ে উড়ে পার হয়ে যাচ্ছে। অল্প দিন হাতে আছে রাশিয়ায়। এর মাঝে কত কিছু যে দেখার বাকি!

আমি এসেছিলাম আলেক্সেই মাক্সিমোভিচ পেশকভের বাড়িতে। রাশিয়ার বিখ্যাত এই লেখক পাঁচবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েও পুরস্কার জেতেননি। এমন অসামান্য লেখকের প্রাসাদতুল্য বাড়ির সামনে এসে দেখি দুয়ার তালাবদ্ধ। আজ আর দুয়ার খুলবে না। দোতলা এই বাড়িটিতে লেখক জীবনের শেষ কয়েক বছর বসবাস করেছিলেন। বাড়ির সামনে প্রশস্ত আঙিনা। সেখানে উঁচু উঁচু গাছ অন্য পাশ থেকে বাড়িকে ঢেকে দিয়েছে। বাড়ির চারপাশ পাঁচিল দিয়ে ঘেরা।

প্রাচীন এই বাড়ির আশপাশে ঘুরেফিরে আবার ফিরে গেলাম। আজ তিনি দুয়ার না খুললে কাল নিশ্চয়ই খুলবেন। রাশিয়ার অন্যান্য বিখ্যাত লেখকের বাড়ির মতো তাঁর বাড়িটিকেও মিউজিয়াম করে রাখা হয়েছে। ঊনবিংশ শতকে রাশিয়ায় জনপ্রিয়তা পেলেও আমাদের বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে তিনি আজ অবধি সবচেয়ে জনপ্রিয় রুশ লেখক।

আগের দিন লেখকের হাউস মিউজিয়াম বন্ধ ছিল। তাই দুয়ার থেকে ফিরে যেতে হয়েছিল। কিন্তু আমি হচ্ছি বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী ধরনের মানুষ। এত সহজে এ বাড়ি না দেখে আমি মস্কো ছাড়ব না।

আলেক্সেই মাক্সিমোভিচ পেশকভের বয়স যখন চব্বিশ তখন এক পত্রিকায় লেখা পাঠানোর সময় আলেক্সেই লেখকের নামে নিজের নাম লেখেন ‘ম্যাক্সিম গোর্কি’। রুশ ভাষায় ম্যাক্সিম শব্দের অর্থ—তিক্ত। জীবনের কঠিন বাস্তবতা আর তিক্ততার স্বাদ অল্প বয়সে গ্রহণ করায় তিক্ত নামেই পরবর্তীকালে তিনি বিখ্যাত হয়েছেন।

আলেক্সেই মাক্সিমোভিচ পেশকভ ১৮৬৮ সালে রাশিয়ার নিঝনি নভোগরদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। এগারো বছর বয়সে অনাথ হয়ে যাওয়ার পর দিদিমা তাঁকে সঙ্গে নিয়ে রাখেন। কিন্তু বারো বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে পালান। এরপর বছর পাঁচেক রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়ান। কখনো পেট চালানোর জন্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কাজ করতে হয়েছে। পথেই থাকতে হয়েছে। এ সময়ে আলেক্সেই মুচির কাজও করেছিলেন।

ম্যাক্সিম গোর্কির বাড়ি

সম্পর্কিত নিবন্ধ