পিএসসি সংস্কারে জবি শিক্ষার্থীদের ১০ প্রস্তাব
Published: 8th, May 2025 GMT
নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস, স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে পিএসসি এবং সংশ্লিষ্ট নিয়োগ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলনে তারা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক, বাংলাদেশ রেলওয়ে, খাদ্য অধিদপ্তরসহ ১৬তম গ্রেড পর্যন্ত সব নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে মূল প্রশ্নের মিল যাচাই করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান; অতীতে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় পরিকল্পিতভাবে প্রশ্নফাঁস গোপন রেখে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা তদন্ত করে প্রকাশের আহ্বান; প্রশ্ন ফাঁস চক্রে জড়িত ব্যক্তি, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি।
আরো পড়ুন:
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত
প্রশ্ন ফাঁসের শাস্তি ও পিএসসি সংস্কারের দাবিতে শাহবাগ ব্লকেড
বাকি দাবিগুলো হলো- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কঠোর তদন্ত ও নজরদারির আহ্বান; নিয়োগ পরীক্ষায় দলীয়করণ, অনিয়ম, ও সংবিধানবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করার আহ্বান; পিএসসি, ব্যাংক ও মন্ত্রণালয়সহ সরকারি নিয়োগ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি; বিভিন্ন নিয়োগের (যেমন: BSCIC, CGDF, BIBM, খাদ্য অধিদপ্তর, রেলওয়ে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর) উচ্চপর্যায়ে তদন্ত দাবি; বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে কেন্দ্রীয় পুলিশ ভেরিফিকেশন কমিটির হয়রানি বন্ধের দাবি; শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিলের প্রস্তাব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হাসান বলেন, “নিয়োগে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি। বারবার দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে পিএসসির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা চাই, এই প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক হোক। পিএসসি সংস্কার মানে শুধু নিয়ম পরিবর্তন নয়, এটি একটি মানসিকতার পরিবর্তন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই দরকার স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া।”
পিএসসি সংস্কার আন্দোলনের জবি শাখার মুখপাত্র সাজ্জাদ হুসাইন মুন্না বলেন, “পিএসসি সংস্কার ও নিয়োগ পরীক্ষার স্বচ্ছতা আনয়ন জুলাইয়ের অঙ্গীকার। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আমাদের শতভাগ মেধার বহিঃপ্রকাশ করতে চাই। তারুণ্যের মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে হলে সংস্কারের বিকল্প নেই।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসস গ পর ক ষ তদন ত প এসস
এছাড়াও পড়ুন:
লাম্পি স্কিনের ভ্যাকসিন সংকট
ফুলবাড়ীতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বা চর্মরোগে সহস্রাধিক গরু আক্রান্ত হয়েছে। গত এক মাসে এ রোগে ১৮টি গরু মারা গেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
ফুলবাড়ী প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় নিবন্ধিত খামার ৪০টি। অনিবন্ধিত ৫৩৭টি। গরুর রয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৬৩টি, মহিষ ৭০টি, ছাগল ৮৫ হাজার ৬৯০টি এবং ভেড়া ৫ হাজার ৫৩টি।
জানা যায়, এলএসডি রোগটি এক ধরনের চর্মরোগ হলেও এতে গরুর মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। এটি ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগ। গরু-বাছুর প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয়। একপর্যায়ে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। জ্বরের সঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়। একপর্যায়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গার চামড়া পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্ট হয়। এই ক্ষত শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। গরু ঝিম মেরে থাকে ও কাঁপতে শুরু করে। কিডনির ওপর প্রভাব পড়ার ফলে গরু মারাও যায়।
উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাত ইউনিয়নে লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। বেশি আক্রান্ত হয়েছে পৌরসভা ও এলুয়াড়ী ইউনিয়নে। গত এক মাসে সহস্রাধিক গরু আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১৮টি। এর মধ্যে বেতদিঘী ইউনিয়নের চিন্তামন গ্রামের লিটন হোসেন, খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের অম্রবাড়ী গ্রামের টুরু চন্দ্র, রওশন ও রতন, পৌরসভার চকচকা গ্রামের মেহেদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, সোহেল, আমানত, সাজু, নজরুল, জনি এবং পৌরসভার বারোকোনা গ্রামের কাশেম, তেঁতুলডাঙ্গার সুজন মিয়া, আশরাফুলের একটি করে বাছুর মারা গেছে। গত বৃহস্পতিবার পূর্ব রামচন্দ্রপুর গ্রামের বেলাল হোসেন ও চকসাহাবাজপুরের মন্টুর একটি করে বাছুর মারা গেছে।
এলুয়াড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নবিউল ইসলাম বলেন, এক মাসে লাম্পি স্কিন রোগে ১৮টি গরু মারা গেছে শুনেছি। অনেকেই ভয়ে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য আ. রশিদ বলেন, ‘আমার ১১টি গরুর মধ্যে তিনটি বাছুর এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এগুলোর চিকিৎসার পেছনে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। গরুগুলো নিয়ে সবাই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের এলএসপি (লাইভ স্টক সার্ভিস প্রোপ্রাইটর) সানজিদা ইয়াসমিন বলেন, এলএসডি রোগে গরু দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগের ব্যাপারে খামারিদের সচেতন করে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত গরুকে আলাদা রাখতে বলা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সারোয়ার হাসান বলেন, আক্রান্ত পশুর জন্য ৫০টি টিকা (লাম্পি ভ্যাক্স) বরাদ্দ এসেছে। একটি টিকা ১০টি গরুকে দেওয়া যায়। দাম পড়ে ২৭০০ টাকা। আক্রান্ত পশুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বরাদ্দ বাড়ালে এবং দাম কমানো গেলে খামারিরা উপকৃত হবেন। তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত পশু দুর্বল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিক দিলে মারা যেতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলী বলেন, আক্রান্ত গরুর চিকিৎসার ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।