রাজশাহীতে প্রধান শিক্ষকের চেয়ার আমগাছ থেকে নামানো হলো, খুলেছে কক্ষের তালাও
Published: 9th, May 2025 GMT
রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চেয়ার আমগাছ থেকে নামানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর অফিস কক্ষের তালাও খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সেনাসদস্যরা দুটি গাড়িতে করে বিদ্যালয়ে এসে কক্ষ খুলে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন।
ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ তালাবদ্ধ করাটা দুঃখজনক। এটা ছিল বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব। এ বিষয়ে তাঁরা পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে সেখানে সেনাবাহিনী গিয়েছিল। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। যদিও বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ হয়নি। প্রধান শিক্ষক তাঁর কক্ষে বসবেন।
আরও পড়ুনপ্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা, চেয়ার ঝুলছে আমগাছে০৮ মে ২০২৫এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওহাটা পৌরসভার বাগধানী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে টেনেহিঁচড়ে বের করে কক্ষে তালা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক মঞ্জু মনোয়ারা। তাঁর অভিযোগ, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁকে মারধরও করেছেন।
এ ঘটনায় তাঁর চেয়ার পাশেই একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সেই চেয়ার বিদ্যালয়ের পাশে একটি আমগাছে ঝুলিয়ে রাখে কে বা কারা। প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে চেয়ারটি বেঁধে রাখা হয়। গতকাল প্রধান শিক্ষকের কক্ষের দুটি দরজায় তালা দেখা যায়। তবে আজ শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, আমগাছের সেই চেয়ার আর নেই। চেয়ারটি দেখা গেল প্রধান শিক্ষকের অফিসের সামনে। তবে এটি ভাঙা। প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে লাগানো তালাও খুলে দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বাগধানী উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বসার চেয়ার ঝোলনো হয় বিদ্যালয়ের পাশের আমগাছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আমগ ছ
এছাড়াও পড়ুন:
বাগমারায় মাটিতে পড়ে ছিল অসুস্থ ইগল, উদ্ধার করলেন কৃষক
অসুস্থ একটি ইগলকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে অনেকে ভয়ে উদ্ধার করেননি, পাশ কাটিয়ে চলে গেছেন। তবে স্থানীয় কৃষক বাবু হোসেন সাহস করে সেটিকে উদ্ধার করেন। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার একটি আমবাগান থেকে ইগলটি উদ্ধার করা হয়।
ইগলটি উদ্ধার করেন বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া গ্রামের কৃষক বাবু হোসেন (৫১)। তিনি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মাঠে ঘাস সংগ্রহ করতে যাচ্ছিলেন। খুঁজিপুর গ্রামের এক আমবাগানের ভেতর দিয়ে মাঠে যাওয়ার পথে একটি বড় ইগলকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। প্রথমে ওড়ানোর চেষ্টা করলেও ইগলটি উড়তে পারছিল না। কাছে গিয়ে দেখেন, ইগলটির বাঁ পা দিয়ে রক্ত ঝরছে। পরে তিনি সেটিকে ধরে লোকালয়ে নিয়ে আসেন। স্থানীয় প্রাণিচিকিৎসক আনোয়ার হোসেনকে ডেকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। চিকিৎসার পর ইগলটি কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠে।
বাগমারার ইউএনও মাহবুবুল ইসলামের কাছে ইগলটি হস্তান্তর করা হলে তিনি বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে পাঠানোর উদ্যোগ নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুটি ইগল আকাশে লড়াই করতে করতে মাটিতে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর একটি উড়ে গেলেও আরেকটি আহত অবস্থায় মাটিতেই পড়ে থাকে। ভয়ে তাঁরা কেউ উদ্ধার করেননি। তবে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাবু হোসেন সাহস করে সেটি উদ্ধার করেন।
বাবু হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পাখিটিকে বাঁচাতে পেরে তাঁর ভালো লাগছে।
পল্লি প্রাণিচিকিৎসক আনোয়ার হোসেন বলেন, কৃষক বাবু হোসেন তাঁকে ডেকে অসুস্থ ইগলের চিকিৎসা করান। ইগলটির বাঁ পায়ে ক্ষত আছে। দুই ইগলের মধ্যে লড়াইয়ের কারণে এমন হয়েছে। ইগলটির ওজন প্রায় চার কেজি।
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইগলটির চিকিৎসা শেষে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান বাগমারার ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম। তিনি কৃষক বাবুর প্রশংসা করে বলেন, এখনো সচেতন মানুষ আছেন। তাঁর কারণে ইগলটি বেঁচে গেল।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আহসান হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, ইউএনওর কাছ থেকে খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদে গিয়ে ইগলটির চিকিৎসা করা হয়েছে। পায়ে আঘাত থাকায় এটি উড়তে পারছিল না।