এক বছরে এসএমই ফাউন্ডেশনের সহায়তা পেলেন ৩৫ হাজার উদ্যোক্তা
Published: 10th, May 2025 GMT
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশনের গত ২০২৩–২৪ অর্থবছরে নানা ধরনের কর্মসূচি থেকে সুবিধা পেয়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত এসএমই ফাউন্ডেশনের ১৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় সংস্থাটির চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান সভাপতির বক্তব্যে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সভায় মুসফিকুর রহমান বলেন, গত অর্থবছরে এসএমই ফাউন্ডেশনের নানা কর্মসূচির আওতায় সরাসরি সুবিধা ভোগ করেন ৩৪ হাজার ৭২০ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা। এর মধ্যে ১৭ হাজার ১ পুরুষ ও ১৭ হাজার ৭১৯ নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের বার্ষিক সভায় গত ২০২৩–২৪ অর্থবছরে বাস্তবায়িত কর্মসূচির ওপর বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনোয়ার হোসেন। এ সময় দেশের এসএমই খাত উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বাড়াতে বাজেটে এই খাতের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের দাবি জানান উদ্যোক্তারা।
আনোয়ার হোসেন জানান, এসএমই ফাউন্ডেশন গত অর্থবছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে ৬৯২টি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার ২০২৩ প্রদান, ১১তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা ২০২৪, যশোর ও ময়মনসিংহে বিভাগীয় এসএমই পণ্য মেলা ২০২৩, সপ্তম ক্রেতা–বিক্রেতা সম্মিলন ও পণ্য মেলা ২০২৩ ও চট্টগ্রামে ১৪তম ইন্টারন্যাশনাল এসএমই ওমেন এক্সপো ২০২৪ আয়োজন। এসএমই উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ২৩টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এসএমই ফাউন্ডেশন চুক্তি করেছে। ময়মনসিংহে বিভাগীয় এসএমই উদ্যোক্তা–ব্যাংকার সম্মেলন ২০২৩ আয়োজন, নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ওয়ান–স্টপ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘উই হেল্প’ উদ্বোধন, ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৪–এ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া ১৯তম মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল হালাল শোকেস ২০২৩–এ এসএমই ফাউন্ডেশনের অংশগ্রহণ, ফাউন্ডেশনের প্রকাশনা নিয়ে অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণ, গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের নিয়ে চারটি জেলায় এসএমই ক্লাস্টার প্রদর্শন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে ১৪১টি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন করা হয়। পাশাপাশি সংস্থাটির কার্যক্রমের ওপর পরিচালক পর্ষদের প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন করা হয়।
সভায় সাধারণ সদস্যরা বলেন, দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। দেশের অর্থনীতিতে এই খাতকে এগিয়ে নিতে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এসএমই ফাউন্ডেশনকে সমন্বয়কারী সংস্থা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য় এসএমই
এছাড়াও পড়ুন:
মূল্যস্ফীতি আরো কমবে: গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশে মূল্যস্ফীতি কমছে। ধীরে ধীরে মূল্যস্ফীতি আরো কমবে। আমরা যদি একদিকে টাকা ছাপি; অন্যদিকে বলি, মূল্যস্ফীতি কমছে না; তাহলে তো হবে না। এক্ষেত্রে আমাদের আরো কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ আয়োজিত ব্যাংকার-এসএমই নারী উদ্যোক্তা সমাবেশ, পণ্য প্রদর্শনী ও মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, নির্বাহী পরিচালক মো. খসরু পারভেজ, সিটি ব্যাংকের এমডি ও সিইও মাসরুর আরেফিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের পরিচালক নওশাদ মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেছেন, দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ। এখন তা সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল সাড়ে ১২ শতাংশের বেশি, সেটি এখন ৯ শতাংশের একটু বেশি আছে। নীতির ধারাবাহিকতা থাকলে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে আরো কমে আসবে। মূল্যস্ফীতি কমতে একটু সময় লাগছে। সেজন্য আমরা কাজ করছি।
নারীদের ঋণের বিষয়ে তিনি বলেন, নারীদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। তাদের জন্য কীভাবে ঋণ বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে তাদের আর্থিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমরা নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেব, তবে তা শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল বাড়িয়ে নয়। কারণ, সেখান থেকে দিলে নতুন টাকা তৈরি করতে হয়। ব্যাংকগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে নারীদের ঋণ দিতে হবে।
কুটির, মাইক্রো, ছোট ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক সুযোগ বৃদ্ধি ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে এ পণ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ বৃদ্ধি, নেটওয়ার্কিং গড়ে তোলা এবং সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার পথ সুগম হবে। মেলায় ৬৮ জন নারী উদ্যোক্তা তাদের নিজস্ব পণ্য নিয়ে বসেছেন।
২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে মেলার আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে করোনা মহামারিসহ নানা কারণে নারী উদ্যোক্তা মেলা আয়োজন বন্ধ রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার আবারও নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে পণ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নারী উদ্যোক্তা মেলা আজ থেকে শুরু হয়েছে। চলবে ১১ মে পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এ মেলা।
ঢাকা/এনএফ/রফিক