প্রাথমিকে দেশ সেরা স্কুল দিনাজপুরের সুব্রত খাজাঞ্জী
Published: 10th, May 2025 GMT
প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ বিতরণ করা হয়েছে। এতে দেশের সেরা স্কুল হয়েছে দিনাজপুরের সুব্রত খাজাঞ্জী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেরা প্রধান শিক্ষক হয়েছেন মো. মোস্তফা কামাল এবং সেরা প্রধান শিক্ষিকা হয়েছেন শিউলি সুলতানা।
‘মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করি, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে নির্ধারণ করে শনিবার (১০ মে) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে 'জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫' এর উদ্বোধন এবং প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ প্রদান করা হয়। ১৪টি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এবং শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও বিষয়ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার ১৮টি ক্যাটাগরিতে (বালক ও বালিকা) প্রথম স্থান অধিকারীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ব্যক্তি পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হয়েছেন শেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো.
শ্রেষ্ঠ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হয়েছেন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হয়েছেন বগুড়ার গাবতলীর পদ্মপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল, শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা হয়েছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরস্হ সাবর্ডিনেট কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিউলি সুলতানা, শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক হয়েছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ষাড়েরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ইনাম উল্লাহ খান, শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিকা হয়েছেন জামালপুর সদরের হাছানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফারজানা ইসলাম, শ্রেষ্ঠ কাব শিক্ষক হয়েছেন ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডুসহ কুল্যাগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহা. মতিয়ার রহমান, শ্রেষ্ঠ কর্মচারী হয়েছেন নোয়াখালীর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর মোহাম্মদ মহিন উদ্দিন। প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়েছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের সুব্রত খাজাঞ্জী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শ্রেষ্ঠ পিটিআই হয়েছে রাজশাহী পিটিআই।
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার প্রধান অতিথি হিসেবে 'জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫' এর উদ্বোধন এবং প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
শিশুদের প্রতিভা বিকাশ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সৃজনশীল কাজে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা প্রদান এবং তাদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদানে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পুরস্কৃত করে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যকে সামনে নিয়েই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৯৮৫ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পদক বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও বিষয়ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অনুযায়ী বিজয়ীদের ১৮টি ক্যাটাগরিতে (বালক ও বালিকা) মোট ১০৮টি পুরস্কার এবং ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১৪টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অনুযায়ী ৪২টি পুরস্কারসহ মোট ১৫০টি পুরস্কার প্রদান করার সিদ্ধান্ত হয়।
শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীরা পাচ্ছে যথাক্রমে ৩০, ২৫ এবং ২০ হাজার টাকাসহ পদক ও সনদপত্র এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সেরাস্থান অধিকারীরা পান ৫০ হাজার টাকাসহ পদক ও সনদপত্র এবং প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সেরা স্থান অধিকারীরা পাচ্ছেন ৫০ হাজার টাকাসহ ক্রেস্ট ও সনদপত্র।
জাতীয় পর্যায়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ বিতরণ, প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত ভিডিও প্রদর্শন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
ঢাকা/হাসান/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদক ২০২৪ ষ ঠ ন পর প রস ক র র সহক র প ট আই পর য য় অফ স র প রথম উপজ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আগ্রহ বেশি শহরের কলেজে, মফস্সলে খালি থাকবে আসন
শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়া ও আসন ফাঁকা থাকার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এ বছর একাদশ শ্রেণির ১৭ হাজার ৮৭৫টি আসন কমানো হয়েছে। গত বছর বোর্ডের অধীন ২৯০ কলেজে আসন ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৪টি, এ বছর কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৪৯টিতে। আসন কমানো হলেও এবারও প্রায় ৩৩ শতাংশ আসন খালি থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা। গত বছরও খালি ছিল ৩৫ শতাংশ আসন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, পরিচিত ও ভালো কলেজগুলোয় ভর্তির চাপ বেশি থাকলেও মফস্সল এলাকার অনেক কলেজে আসন ফাঁকা থেকে যায়। এ বছর বোর্ডের অধীন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলা—রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির কলেজগুলোয় মোট পাস করেছে ১ লাখ ১ হাজার ১৮১ জন শিক্ষার্থী। পাস করা সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও অন্তত ৫০ হাজার আসন খালি থাকবে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এই পাঁচ জেলায় ভর্তি হয়েছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৭৩১ শিক্ষার্থী, খালি ছিল ৫৮ হাজার ৭৯৩টি আসন।
চট্টগ্রাম বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মোহাম্মদ ছরওয়ার আলম বলেন, অনেক কলেজ আসন বাড়ানোর আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, কোথাও ভর্তি অর্ধেক বা তারও কম। তাই আসন কমানো হয়েছে।
পাস করা সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও অন্তত ৫০ হাজার আসন খালি থাকবে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এই পাঁচ জেলায় ভর্তি হয়েছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৭৩১ শিক্ষার্থী, খালি ছিল ৫৮ হাজার ৭৯৩টি আসন।চট্টগ্রামে আসন বেশি, চাপও বেশি
বোর্ডের হিসাবে, চট্টগ্রাম জেলা একাই ধারণ করছে ১ লাখ ৯ হাজার ১৯৪টি আসন। পাস করা সব শিক্ষার্থী এখানকার কলেজে ভর্তি হলেও আট হাজারের বেশি আসন খালি থাকবে। বাস্তবে অনেকে জেলার বাইরে বা অন্য বোর্ডের কলেজে চলে যান।
ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই চট্টগ্রাম নগরের সরকারি কলেজগুলোর দিকে ঝোঁকেন। সম্প্রতি চকবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অনেক শিক্ষার্থী দোকানে বসে কলেজ ভর্তির আবেদন করছেন। তাঁদের পছন্দের তালিকায় চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, সিটি কলেজ ও সরকারি কমার্স কলেজ শীর্ষে।
নগরে সরকারি কলেজ ৮টি, আসন সাড়ে ৯ হাজারের বেশি। কলেজগুলোয় প্রতিবছর আসনের দ্বিগুণ আবেদন পড়ে। চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির আগ্রহ বেশি, ব্যবসায় শিক্ষায় সরকারি কমার্স কলেজ এগিয়ে। সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই আসনের দ্বিগুণ আবেদন আসে। জিপিএ এবং প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি চূড়ান্ত হয়।
ঢাকায় যান ৭-১০ শতাংশ শিক্ষার্থী
বোর্ডের হিসাবে প্রতিবছর ৭ থেকে ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্য বোর্ডের কলেজে ভর্তি হন, বিশেষ করে ঢাকায়। ২০২৪ সালে পাস করেছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭ জন, ভর্তি হননি প্রায় ৮ শতাংশ। এ বছর পাসের হার কমায় এই হার আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষকেরা।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষকসংকট ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে মফস্সলে ভর্তি আগ্রহ কম। তাই সেখানে আসন বেশি ফাঁকা থাকে। নিয়ম মেনে এবার স্বল্পসংখ্যক আসন কমানো হয়েছে।
ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষক-সংকট ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে মফস্সলে ভর্তি আগ্রহ কম। তাই সেখানে আসন বেশি ফাঁকা থাকে। নিয়ম মেনে এবার স্বল্পসংখ্যক আসন কমানো হয়েছেইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ, চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডআসন তালিকা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম ছাড়া বাকি চার জেলায় মোট আসন ৪২ হাজার ৪৭৫টি—এর মধ্যে কক্সবাজারে ১৮ হাজার ৬৮৫, খাগড়াছড়িতে ৯ হাজার ৫২০, রাঙামাটিতে ৮ হাজার ৭৯৫ ও বান্দরবানে ৫ হাজার ৪৭৫টি।
চট্টগ্রাম বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে আসন ৩২ হাজার ৪৮৯, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫২ হাজার ২৭৫ ও মানবিক বিভাগে ৬৬ হাজার ৮৩৫টি। গার্হস্থ্যবিজ্ঞানে আছে মাত্র ৫০টি আসন, যা নগরের হালিশহরের গার্হস্থ্য অর্থনীতি সিটি করপোরেশন কলেজে। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপের আবেদন চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত।