ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিনোদন অঙ্গনে। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় একের পর এক বড় কনসার্ট এবং চলচ্চিত্র-সংক্রান্ত অনুষ্ঠান স্থগিত করা হচ্ছে। জনপ্রিয় গায়ক অরিজিৎ সিংয়ের পর এবার গায়িকা শ্রেয়া ঘোষাল তাঁর নির্ধারিত কনসার্ট স্থগিত রেখেছেন। একই কারণে দক্ষিণি চলচ্চিত্রের সুপারস্টার কমল হাসানও তাঁর নতুন ছবি ‘ঠগ লাইফ’-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান স্থগিত করেছেন।
আজ (১০ মে) মুম্বাইয়ের বিকেসি-র জিও ওয়ার্ল্ড গার্ডেনে শ্রেয়া ঘোষালের কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক আবেগঘন পোস্টে শ্রেয়া লিখেছেন, ‘আমার প্রিয় শ্রোতা ও ভক্তদের জানাতে চাই, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমার আজকের কনসার্ট স্থগিত রাখছি। একজন শিল্পী ও নাগরিক হিসেবে এই সময়ে দেশ ও মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য।’

তিনি আরও লেখেন, ‘এই কনসার্ট আমার জন্য খুব স্পেশাল ছিল। আপনাদের সঙ্গে একটি স্মরণীয় সন্ধ্যা কাটানোর জন্য আমি ভীষণ উদ্‌গ্রীব ছিলাম। তবে আমি কথা দিচ্ছি, এই অনুষ্ঠান বাতিল নয়, কেবল কিছু সময়ের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নতুন তারিখ খুব শিগগির জানিয়ে দেওয়া হবে। যাঁরা টিকিট কেটেছেন, তাঁরা আগের টিকিটেই নতুন তারিখে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন।’
এর আগে গত মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর শ্রেয়া ঘোষাল তাঁর সুরাট কনসার্ট বাতিল করেছিলেন। তখনো শ্রেয়া বলেছিলেন, দেশের সংকটময় সময়ে বিনোদনের আয়োজন বিলাসিতা হয়ে যায়।
শুধু সংগীতশিল্পীরা নন, চলচ্চিত্রজগতের তারকারাও এই সংকটময় পরিস্থিতিতে নিজেদের উদ্যোগ স্থগিত রাখছেন। সম্প্রতি পরিচালক মণি রত্নমের নতুন ছবি ‘ঠগ লাইফ’–এর অডিও প্রকাশ অনুষ্ঠানের দিন ধার্য ছিল ১৬ মে। কিন্তু কমল হাসান ছবিটির লেখক, প্রযোজক ও মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করলেও জাতীয় স্বার্থে অনুষ্ঠানটি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে কমল হাসান বলেন, ‘আমাদের দেশের সীমান্তে বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে অতিরিক্ত সতর্কতা জরুরি। আমি মনে করি, বিনোদন অপেক্ষা করতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাই “ঠগ লাইফ”-এর অডিও লঞ্চ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।’ চলচ্চিত্রটি আগামী ৫ জুন মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। এই ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন ত্রিশা কৃষ্ণান, জয়ম রবি, দুলকার সালমান ও অবিনয়ানন্দ।
৮ মে আমির খানের আসন্ন ছবি ‘সিতারে জমিন পার’-এর প্রথম ঝলক মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ঝলক মুক্তি পিছিয়ে দিয়েছেন আমির।

অভিনেতার প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সীমান্তে যা ঘটছে এবং দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা দেখে আমির এই ছবির ঝলক মুক্তি পিছিয়ে দিয়েছেন।’ প্রথমে এই ছবির ঝলক মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল এপ্রিল মাসের শেষের দিকে। কিন্তু ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলার কারণে সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়। কেবল আমিরের সিনেমাই নয়, রাজকুমার রাও ও ওয়ামিকা গাব্বির নতুন সিনেমা ‘ভুল চুক মাফ’ নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্মাতারা। ছবিটি বড় পর্দায় মুক্তির কথা থাকলেও এখন এটি সরাসরি মুক্তি পাবে ওটিটিতে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঝলক ম ক ত চলচ চ ত র পর স থ ত অন ষ ঠ ন কনস র ট

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন নিয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন নিয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে। আগামী মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় শুরু হওয়া এ আলোচনার নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)। যুক্তরাষ্ট্রের দুজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দোহায় সম্মেলনে ২৫টির বেশি দেশের প্রতিনিধি অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই সম্মেলনে আন্তর্জাতিক বাহিনীর নেতৃত্বের কাঠামোসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এই বাহিনী গঠনের জন্য আগামী মাসেই বিভিন্ন দেশের সেনাদের গাজায় মোতায়েন করা হতে পারে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে অনেক দেশ আন্তর্জাতিক এই বাহিনীতে অংশ নিতে ইচ্ছুক। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে এই বাহিনীর আকার, গঠনপ্রক্রিয়া, আবাসনব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ এবং তাদের কাজের নিয়মাবলি নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করছে। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা চলার কথা জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিটও।

এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজায় স্বাস্থ্য ও নির্মাণ-সংক্রান্ত কাজের জন্য সর্বোচ্চ ২০ হাজার সেনা পাঠাতে প্রস্তুত। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রিকো সিরাইত বলেন, ‘এটি এখন পর্যন্ত প্রাথমিক ও প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে রয়েছে। যে বাহিনী মোতায়েন হবে, এখন তার গঠনপদ্ধতি প্রস্তুত করছি আমরা।

গত ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। বর্তমানে উপত্যকাটির ৫৩ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত বাকি এলাকায় বসবাস করছেন গাজার ২০ লাখ বাসিন্দা। যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজায় যেসব এলাকা ইসরায়েলের দখলে রয়েছে, সেখানে আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ