নিভৃত গ্রামের চার স্বশিক্ষিতকে ‘আলোকিত মানুষ সম্মাননা’
Published: 11th, May 2025 GMT
সত্যেন্দ্রনাথ প্রামাণিক স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাননি। মায়ের কাছে পড়তে শিখেছিলেন। তবে লেখা শেখা হয়নি। শুধুই পড়তে পারেন। গান করেন, ছবি আঁকেন। মুখে মুখে গানও বাঁধেন। স্বশিক্ষিত সত্যেন্দ্রনাথ প্রামাণিক পেশায় কৃষক। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলায়।
এই উপজেলায় সত্যেন্দ্রনাথ প্রামাণিকের মতো আরও তিনজন আলোকিত মানুষের সন্ধান মিলেছে, যাঁদের একজন পেশায় কুমার, একজন কৃষক ও একজন গৃহিণী। তাঁদের তেমন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। কিন্তু ঘরে বসে তাঁরা বিশ্বসাহিত্য চর্চা করছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে তাঁদের সম্মাননা জানানো হয়েছে। বরিন সাহিত্য সংসদের পত্রিকা ‘বরিনের বাতিঘর’–এর প্রকাশনা উৎসবে তানোর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘আলোকিত মানুষ সম্মাননা’ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, প্রতিষ্ঠিত কবি–সাহিত্যিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মাননাপ্রাপ্ত চারজন হলেন সোহরাব আলী, সত্যেন্দ্রনাথ প্রামাণিক, রঞ্জিত পাল ও হাসিনা বানু। তবে এই আয়োজনের মধ্যমণি ছিলেন ঔপন্যাসিক মঈন শেখ। তিনি বরিন সাহিত্য সংসদের সভাপতি। দুই বাংলায় তাঁর উপন্যাস সমান সমাদৃত। তিনি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। থাকেন তানোরে, কিন্তু তাঁর বই বের হয় কলকাতা থেকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান। প্রধান অতিথি ছিলেন বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের পরিচালক অধ্যাপক কাজী মো.
সত্যেন প্রামাণিকের বাড়ি তানোর উপজেলার মাহাড়িয়া গ্রামে। থাকেন জরাজীর্ণ মাটির ঘরে। পড়েন দর্শন, নৃতত্ত্ব ও ভাষাবিজ্ঞান। তিনি একই সঙ্গে একজন চিন্তক, কণ্ঠশিল্পী এবং আঁকিয়ে। তবে তিনি সন্তানদের মানুষ করেছেন। তাঁর ছেলে পাস করেছেন বুয়েট থেকে আর মেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পড়েছেন ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে। অনুষ্ঠানে সত্যেন্দ্রনাথ প্রামাণিক বললেন, ‘আমার মতো তুচ্ছ মানুষকে মঞ্চে ডেকে এই সম্মাননা দেওয়ার জন্য আমি বরিন সাহিত্য সংসদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’ বেশি কথা না বলে দরাজ কণ্ঠে গাইলেন নজরুলের একটি গান—‘মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী, দেব খোঁপায় তারার ফুল।’
হাসিনা বানুর বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে। বাল্যবিবাহ হয়েছিল। এক বছরের মাথায় স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে তিনি চিরদিনের মতো বাবার বাড়িতে চলে আসেন। নিঃসঙ্গ জীবনে হাতে তুলে নেন বই। লিখেছেন কবিতা, গল্প ও উপন্যাস। ২০০৭ সালে এডিডির সহযোগিতায় ‘মোর মনের মাধুরী’ নামে তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ভূমিকা লিখে দেন কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন। তাঁর উপস্থিতিতে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এই গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়। গতকাল অনুষ্ঠানে তিনি বললেন, ‘আমি ভালো কথা বলতে পারি না। আমাকে এই সম্মাননা দেওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’ ‘আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই’ বলে নিজের একটি কবিতা পড়ে শোনান।
গুণীজন হাসিনা বানুর হাতে ক্রেস্ট ও বই তুলে দিচ্ছেন অতিথিরা। গতকাল শনিবার বিকেলে তানোর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত ন র উপজ ল অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বরঙে নীল উৎসব
‘তবু হে অপূর্ব রূপ, দেখা দিলে কেন কে জানে’– নীলমণিলতাকে দেখে এ গানটি লিখেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি নীল রং পছন্দ করতেন। কারণ নীল রং যেন টিকে থাকার লড়াইয়ে আকাশ-অস্তিত্বের কবজ। আনন্দ প্রকাশে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে প্রয়োগ করেছেন নীল। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো আনন্দ প্রকাশের এই রং সবার মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতে ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘বিশ্বরঙ’ উদযাপন করছে ‘বিশ্বরঙ নীল উৎসব-২০২৫’।
দেশীয় উৎসব-পার্বণ উদযাপনে বিশ্বরঙ সবসময়ই অগ্রপথিক। দেশীয় ফ্যাশনকে সংস্কৃতিময় ইতিহাস-ঐতিহ্যের মিশেলে প্রদর্শন করতে ৩০ বছর ধরে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বিশ্বরঙ বাই বিপ্লব সাহা। ‘বিশ্বরঙ নীল উৎসব-২০২৫’ এরই একটি ধারাবাহিকতা। বিশ্বরঙের সব শোরুমে শুরু হয়েছে নীল পোশাক প্রদর্শনী, যা চলবে মাসব্যাপী। ‘নীল উৎসব’ উপলক্ষে শাড়ি, থ্রিপিস, সিঙ্গেল কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট ইত্যাদিতে তুলে ধরা হয়েছে প্রকৃতি থেকে নেওয়া নীল ফুলের অনুপ্রেরণায় ফ্লোরাল মোটিফ আর নীল-সাদা রঙের বিভিন্ন গ্রাফিক্যাল জ্যামিতিক ফর্মের অনবদ্য উপস্থিতি এবং গরমের কথা মাথায় রেখে কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার উপযোগী আরামদায়ক সুতি, লিনেন, ভয়েল কাপড়। পোশাকগুলোয় নীলের পাশাপাশি রয়েছে প্রাকৃতিক রঙের অনন্য ব্যবহার, কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে টাই-ডাই, ব্লক, বাটিক, অ্যাপলিক, কাটওয়ার্ক, স্ক্রিনপ্রিন্ট ইত্যাদি।
শোরুমে গিয়ে কেনাকাটার সুযোগের পাশাপাশি যে কেউ ঘরে বসে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারবেন নীল উৎসবের সব পণ্য।