লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে পেটানো তরুণসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 11th, May 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতির জন্য থামা একটি লঞ্চে দুই তরুণীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ রোববার সকালে মুক্তারপুর নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় মারধরকারী তরুণ নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদের নামে উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০–২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহার অনুযায়ী, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলাটি হয়েছে। এতে যৌন নিপীড়ন, বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে অনধিকার প্রবেশ, মারধর করে ভাঙচুর, ক্ষতি ও হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় নেহাল আহমেদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে নেহাল মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় গেলে পুলিশ তাঁকে আটক দেখায়। নেহাল মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার যোগনীঘাট এলাকার বাসিন্দা।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুক্রবার ১৯-২০ বছর বয়সী দুই তরুণীকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার আমরা জিহাদকে (নেহাল আহমেদ) থানায় আসতে বলি। তিনি থানায় এলে তাঁকে আটক করি। এ ঘটনায় মামলা করার জন্য ওই তরুণীদের থানায় আসতে বলা হয়, কিন্তু তাঁরা কেউ আসেননি। লঞ্চ কর্তৃপক্ষকেও অভিযোগ দিতে বলা হয়, তারাও আসেনি।’
সবশেষ আজ সকালে মুক্তারপুর নৌ পুলিশ বাদী হয়ে মারধর, লঞ্চ ভাঙচুর এবং লঞ্চে লুটপাটের ঘটনায় মামলা করেছে বলে জানান ওসি। মামলায় একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০–২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি নৌ পুলিশ তদন্ত করবে। নেহাল আহমেদকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এমভি ক্যাপ্টেন নামের ওই লঞ্চে দুই তরুণীকে লঞ্চের একেবারে সামনের অংশে উঠিয়ে বেল্ট দিয়ে পেটাচ্ছেন এক তরুণ। সে সময় স্থানীয় লোকজন সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করে উল্লাস করছিলেন ও বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।
আরও পড়ুনলঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে পেটানো সেই তরুণ আটক, বললেন ‘আমার ভুল হয়েছে’২১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনলঞ্চে দুই তরুণীকে মারধরের ঘটনার সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হুমকি১৬ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ ল আহম দ ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
কানাইঘাট উপজেলা বিএনপি সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুন রশীদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জেলা বিএনপির এই নোটিশে তাঁকে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর স্বাক্ষরিত নোটিশটি মামুন রশীদকে পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকেও সম্প্রতি আপনি এমন কিছু কার্যক্রমে জড়িয়েছেন, যা সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি দলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং তা দলীয় আদর্শ, শৃঙ্খলা ও নীতিমালার পরিপন্থী। আপনার এ ধরনের অবস্থানকে সংগঠনের বিরুদ্ধে কার্যত বিরুদ্ধাচরণ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। কেন আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ১৯ মের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে নির্দেশনা দেওয়া হলো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মামুন রশীদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে শোকজের কপি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি হার্ডকপিও তাঁর হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। তাঁর ব্যাখ্যা পাওয়ার পর গঠনতন্ত্র অনুসারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে মামুন রশীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ রয়েছে, তা নোটিশে উল্লেখ করা হয়নি। দলীয় একটি সূত্র জানায়, গতকাল দুপুরে কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক আফসার উদ্দিন আহমদ স্থানীয় একটি মসজিদে গেলে কিছু ব্যক্তি তাঁকে মারধর করে মামুন রশীদের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে মামুন রশীদ তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আফসারকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই মামুন রশীদকে কারণ দর্শানো হয়।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মামুন রশীদ বলেন, ‘আফসার উদ্দিন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এলাকার মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। তাঁর ভাই আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের সহপাঠী। সেই প্রভাব ব্যবহার করে এলাকাবাসীর ওপর অত্যাচার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার মামলাও আছে। এলাকাবাসী আফসারকে ধরে আমার বাড়িতে নিয়ে আসে। আমি তাঁকে একটি কক্ষে রেখে রক্ষা করেছি।’
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় আফসার উদ্দিন তাঁর ওপর নানাভাবে হয়রানি করেছেন বলেও দাবি করেন মামুন রশীদ। তিনি বলেন, ‘আমাকে কোনো সভা করতে দেওয়া হয়নি। আমার ব্যানার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।’