চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেছেন,‘ আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি। ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই। বিভিন্নভাবে আমাদের মাঝে অনৈক্য তৈরির ষড়যন্ত্র চলছে। এই জায়গা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’

আজ রোববার বিকেলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ স্মৃতি সম্মাননা ও আহতদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম নামের একটি সংগঠন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন বক্তব্য দেন।

মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমরা সবাই খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছি। যত দিন এগুলো প্রতিষ্ঠা না হয়, আমাদের সংগ্রাম করে যেতে হবে।’

সন্তান ও অভিভাবক ফোরামের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মো.

আব্বাস উদ্দিন এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য দেন আহত ও অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি শহীদ ওয়াসিম আকরামের বাবা শফিউল আলম, রিকশার পাদানিতে গুলিবদ্ধ শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা গোলাম রহমান, শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া, শহীদ মাহমূদুর রহমানের বোন সাবরিনা আফরোজ ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শহীদ শফিক উদ্দিন আহমেদের মা জারতাজ পারভীন বক্তব্য দেন। পরে গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ২৮ জনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। পাশাপাশি আন্দোলনে আহত ১১৫ জনকেও সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

শহীদ পরিবারের সদস্যরা বিচার চেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে সমালোচনা করেন। তাঁরা বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি এ দেশে করতে দেওয়া যাবে না। সারা জীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। শহীদ পরিবারের সদস্যরা যেন কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে ব্যবহৃত না হন। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

সন্তান ও অভিভাবক ফোরামের সমন্বয়ক ফোরামের সমন্বয়ক ইশরাত জাহান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক নসরুল কদির, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্যসচিব জাহিদুল করিম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ প্রমুখ।

অনুষ্ঠান চলার সময় সন্তান ও অভিভাবক ফোরামের ‘জুলাই ২৪’ শীর্ষক সাময়িকীতে ফয়সাল আহমেদ শান্তর ছবি না থাকা নিয়ে একটি পক্ষ অসন্তোষ প্রকাশ করে। এরপর বিএনপির এক কর্মীর জুলাই আন্দোলন নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় হট্টগোল হয়। পরে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

নিষিদ্ধপল্লী থেকে চিত্রনায়িকা

গত বছর মুক্তি পায় সঞ্জয় লীলা বানসালি নির্মিত ‘হীরামান্ডি: ডায়মন্ড বাজার’। ‘হীরামান্ডি’ অবিভক্ত ভারতের লাহোরের এক গণিকালয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে এটি। যে গণিকালয়ের গল্পের চরিত্রদের হাত ধরে উঠে এসেছে— প্রেম, ক্ষমতা, বিশ্বাসঘাতকতা, উত্তরাধিকার এবং রাজনীতি।

পাকিস্তানের লাহোরের এই নিষিদ্ধপল্লী থেকে উঠে আসা এক যৌনকর্মী ষাটের দশকে রুপালি জগতে হিল্লোল তুলেছিলেন। পাঞ্জাবি, উর্দু ভাষার সিনেমায় অভিনয় করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নামি অভিনেত্রীদের একজন হিসেবে জায়গা করে নেন। তাকে নিজ্ঞো নামেও চেনেন। তবে তার পুরো নাম নার্গিস বেগম। কিন্তু এই অভিনেত্রীর জীবন দীর্ঘ না হওয়ায় ক্যারিয়ারও খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, মায়ের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বামীর হাতে খুন হন এই অভিনেত্রী।

পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন নার্গিস। তার মা ছিলেন যৌনকর্মী। আবার নাচেও পারদর্শী ছিলেন। ফলে ছোটবেলা থেকেই নাচ-গানে পারদর্শী হয়ে উঠেন নার্গিস। মুজরাতেও দক্ষ ছিলেন এই অভিনেত্রী। সময়ের সঙ্গে মায়ের পদচিহৃ অনুসরণ করেন নার্গিস। এক আসরে নার্গিসের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হন এক প্রযোজক। এরপর তাকে অভিনেত্রী হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেন তিনি।

নার্গিস অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘ইশরাত’। ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায় এটি। এরপর শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেন নার্গিস। অধিকাংশ সিনেমায় আইটেম কন্যা রূপে পর্দায় ঝড় তুলেছিলেন। সেই সময়ে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া আইটেম কন্যা ছিলেন নার্গিস। ১৯৭১ সালে ‘কাসু’ সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে প্রযোজক খাজা মাজহারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। ক্যারিয়ারের গ্রাফ তুঙ্গে থাকা অবস্থায় মাজহারকে বিয়ে করেন এই অভিনেত্রী।

বিয়ের পর স্বামী মাজহারের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন নার্গিস। মাজহার-নার্গিসের প্রেম পরিণয় পেলেও তা মেনে নেননি এই অভিনেত্রীর মা। কারণ নার্গিসই তার মায়ের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ফলে তৈরি হতে থাকে জটিলতা। তাছাড়া নার্গিসের মা চাইতেন না, তার মেয়ে পুরোনো পেশা ছেড়ে দিক। এরপর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র শুরু করেন নার্গিসের মা।

অসুস্থ হওয়ার অভিনয় করেন নার্গিসের মা। তারপর মেয়েকে খবর পাঠান। নার্গিস মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে যান। মা তাকে বাধ্য করেন হীরামান্ডির অন্ধকার গলিতে থাকতে। নার্গিসের কাছে বারবার ছুটে যেতেন স্বামী মাজহার। মায়ের কথা, অসুস্থতার অভিনয় উপেক্ষা করতে না পেরে সেখানে পুনরায় বসবাস শুরু করেন নার্গিস।

১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি মাজহার ছুটে যান নার্গিসের কোঠায়। বাড়ি ফেরার জন্য নার্গিসকে বারবার চাপ দেন। কিন্তু নার্গিস ফিরতে চান না। শুরু হয় বাকযুদ্ধ। মেজাজ হারিয়ে নার্গিসকে গুলি করেন তার স্বামী মাজহার। এ ঘটনায় আরো ৩ জন নিহত হন। একজন ছিলেন নার্গিসের চাচা, বাকি দুজন মিউজিশিয়ান। এ মামলা আদালতে গড়ায়। মাজহারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

তথ্যসূত্র: বলিউড লাইফ ডটকম

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন দফা দাবি আদায় না হলে সড়ক ত্যাগ নয়: হাসনাত আব্দুল্লাহ
  • দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না: মির্জা ফখরুল
  • নিষিদ্ধপল্লী থেকে চিত্রনায়িকা