পাকিস্তানে সম্প্রতি ভারতের হামলায় দেশটির ৪০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর ১১ সদস্যও জীবন দিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৭৮ জন।

আজ মঙ্গলবার পাকিস্তান আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। ওই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করেছিল ভারত। এরপর ৬ মে দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। এতে বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। অবশেষে গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুপক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

আইএসপিআরের তথ্য অনুসারে, ভারতের হামলায় অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭ জন নারী ও ১৫টি শিশু। এ ছাড়া হামলায় আরও ১২১ জন আহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, সংঘাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছয় ও বিমানবাহিনীর পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিহত সদস্যরা হলেন নায়েক আবদুল রেহমান, ল্যান্সনায়েক দিলাওয়ার খান, ল্যান্সনায়েক ইকরামুল্লাহ, নায়েক ওয়াকার খালিদ, সিপাহি মুহাম্মদ আদিল আকবর ও সিপাহি নিসার।

আরও পড়ুনভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত: এর মানে আসলে কী১২ মে ২০২৫

বিমানবাহিনীর নিহত সদস্যরা হলেন স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ, চিফ টেকনিশিয়ান আওরঙ্গজেব, সিনিয়র টেকনিশিয়ান নাজিব, করপোরাল টেকনিশিয়ান ফারুক ও সিনিয়র টেকনিশিয়ান মুবাশির।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী মারকা-ই-হক ব্যানারের আওতায় দুর্দান্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং অপারেশন বুনইয়ান উন মারসুসের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ও কঠোর প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। শহীদদের মহৎ আত্মত্যাগ তাঁদের সাহস, নিষ্ঠা ও অটল দেশপ্রেমের এক চিরন্তন প্রতীক, যা চিরকাল জাতির স্মৃতিতে অমলিন হয়ে থাকবে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বা ভূখণ্ডগত অখণ্ডতাকে ভবিষ্যতে যেকোনোভাবে চ্যালেঞ্জ জানানো হলে তার জবাব দ্রুত, সর্বাত্মক ও চূড়ান্তভাবে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই।’

হামলায় আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছে পাকিস্তান আইএসপিআর।

এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ঘোষণা দিয়েছেন, অপারেশন বুনইয়ান উন মারসুসের ‘গৌরবময় সাফল্য’কে স্মরণ করে প্রতিবছর ১০ মে ‘ইয়াওম-এ-মারকা-ই-হক’ পালিত হবে।

এ ছাড়া ১৬ মে দেশের প্রতিরক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর অসাধারণ সাফল্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং মহান আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন হিসেবে পালিত হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুনলস্কর–ই–তাইয়েবা কারা, পাকিস্তান কি তাদের সহায়তা করে১১ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে নার্সদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

রাজশাহী নার্সিং কলেজে দুপক্ষের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা ও মারধরের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নার্সিং কলেজে বিএসসি ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

যোগ্য শিক্ষক নিয়োগসহ নানা দাবিতে আলাদা আলাদা ব্যানারে আন্দোলন করে আসছে বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিং এর শিক্ষার্থীরা। সেই দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএসসি ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি আলাদা আলাদা ব্যানারে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নার্সিং কলেজের অডিটোরিয়ামে এক সভায় যান ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মরত কয়েকজন। সেখানে বিএসসি ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা অশোভন আচরণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে বাকবিতণ্ডা হলে শুরু হয় উত্তেজনা।

এরপর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা কলেজের বাইরে এসে গেটে অবস্থান নেন। আর বিএসসি ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরা কলেজের গেট বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নেন। এসময় দফায় দফায় ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরা গেট ভাঙার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। এক পর্যায়ে বিএসসি ইন নার্সিংয়ের এক নারী শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের এক শিক্ষার্থী কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই ভাঙা হয় গেট।

এরপর বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের দুই পক্ষের ইট ছোঁড়াছুঁড়ি, হামলা, পাল্টা হামলা, মারধরের ঘটনায় আহত হয় অন্তত ১০ জন। 

রাজশাহী নগর পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার হাফিজুর রহমান জানান, উত্তেজনা নিরসনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঊর্ধ্বতনরা। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদকাসক্তদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট, কলেজছাত্রীর ঘরে আগুন
  • ৬ দফার প্রথম ও চতুর্থ দাবি না মানায় বাকৃবিতে রেললাইন অবরোধ
  • ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাবে কি বিব্রত ভারত
  • ‘বাবা এখন কারিনার সঙ্গে অনেক সুখী’
  • রাজশাহীতে নার্সদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
  • ভারতীয় হামলায় পাকিস্তানে ১১ সেনা নিহত, আহত ৭৮: আইএসপিআর
  • ভারতই যুদ্ধবিরতির আগ্রহ দেখিয়েছে, দাবি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর
  • পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেনি: আইএসপিআর প্রধান
  • ইন্টারনেট সেবা উৎকৃষ্ট হবে?